ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

মুক্তমত

জাবি: দেওয়াল টপকানোই কি শিক্ষক হওয়ার মাপকাঠি হবে?

সানাউল্লাহ সাকিব তনু, শির্ক্ষাথী ও গণমাধ্যম কর্মী | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৪৮ ঘণ্টা, মার্চ ১০, ২০১২
জাবি: দেওয়াল টপকানোই কি শিক্ষক হওয়ার মাপকাঠি হবে?

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে দুপক্ষের শিক্ষকদের মধ্যে আন্দোলন চলছে। এর এক পক্ষ উপাচার্য পক্ষের আরেক পক্ষ বিএনপিসহ বামপন্থী শিক্ষকদের গ্রুপ।

যারা উপাচার্য বিরোধী পক্ষ নামে অভিহিত হচ্ছেন। এর মধ্যেও আছেন আওয়ামীপন্থী পদবঞ্চিত শিক্ষকেরা।

উপাচার্য বিরোধীরা বিভিন্ন দাবি নিয়ে আন্দোলন করছে। তাদের আন্দোলন মূলত শুরু হয়েছে জুবায়ের হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই। একভাবে বলা যায়, জুবায়ের হত্যা তাদের আন্দোলনের পথ তৈরি করে দিয়েছে। তাদের দাবি অযৌক্তিক না। তবে আগে তারা ইস্যু পায়নি। শনিবার সকাল থেকেই এক প্রকার উত্তপ্ত অবস্থা বিরাজ করছে ক্যাম্পাসে। উপাচার্য ভবনে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল। বিরোধী পক্ষও এ সুযোগে দাবি করে আসছিল শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া যাবে না। তারা হাজির হলেন উপাচার্য ভবনের সামনে। তবে উপাচার্য পক্ষের শিক্ষকরা এক্ষেত্রে রীতিমত শক্তির পরীক্ষা দিতে প্রস্তুত হলেন। নতুন-পুরাতন, নিরীহ, নির্দলীয় সব শিক্ষককে নির্দেশ দিয়ে হাজির করলেন একইস্থানে। দুপক্ষই শক্তির পরীক্ষা দিলেন। ছাত্রসংগঠনও একই রকম শক্তির মহড়া দেয় তাদের হাতে থাকে রামদা, পিস্তল।   পার্থক্য একটাই শিক্ষকদের শক্তির মহড়াতে এর কোনটারই উপস্থিতি ছিল না। তবে উপাচার্য মহোদয় এ পরিস্থিতিতে গোপনে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা তার বাসায় স্থানান্তর করেন। যা সব প্রার্থীদেরও জানানো হয়নি। দুএকজন বাদে(ওরাই নিয়োগ পাবেন)। দুপক্ষের শিক্ষকরাও উপাচার্যের বাসার সামনে জড়ো হয়ে মাইকে বক্তৃতা শুরু করেন। উপাচার্য বিরোধীরা ফটক আটকে দেন। যারা শিক্ষক হতে চায় বা যাদের শিক্ষক বানাতে (এটা তো পূর্বনির্ধারিত, পরীক্ষা তো একটা নাটক) তাদের কি রোখা যায়। হবু শিক্ষকরা কেউ উপাচার্যের বাসার দেওয়াাল টপকে আবার কেউ উপাচার্যের বাসার পেছনের পুকুর দিয়ে নোৗকায় উঠে বাসার পেছনের গেট দিয়ে প্রবেশ করেন। দেওয়ার টপকালে আর কষ্ট করে মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নিলেই যদি শিক্ষক হওয়ায় যায়, এ সুযোগ কি আর কেউ ছাড়ে। তারাই তো শিক্ষক হবেন। তাদেরর যোগ্যতা কি দেওয়াল টপকানো হবে।

উপাচার্য কি পারতেন না মৌখিক পরীক্ষাটা আপাতত বন্ধ করে, শিক্ষকদের সাথে আলোচনা করে এ অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি সমাধা করতে। নিশ্চয়ই পারতেন, কিন্তু উনি শক্তির মহড়া দেখালেন। আর শিক্ষক হওয়ায় জন্য যে অনেকে যে অনেক দেওয়াল টপকাতে পারেন এটা তিনি দেখিয়ে গেলেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি হিসেবে আমাদের সময়, ভোরের কাগজ ও সমকাল পত্রিকায় কাজ করেছি। উপাচার্য পেয়েছি তিনজন। কিন্তু এমন দেওয়াল টপকানো পরিস্থিতি কখনোও দেখিনি। যা হোক আশা করি শিক্ষকরা আমাদের এমন কোন জ্ঞান দিবেন না যা তাদের জন্যই আগামী দিনে কাল হয়ে দাঁড়াবে।  

সানাউল্লাহ সাকিব তনু: শির্ক্ষাথী ও গণমাধ্যম কর্মী
sakib45@gmail.com

বাংলাদেশ সময় ২১৪৪ ঘণ্টা, মার্চ ১০, ২০১২

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।