ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

‘অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিদেশিদের অনধিকার চর্চা নিন্দনীয়’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬১৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২০, ২০২২
‘অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিদেশিদের অনধিকার চর্চা নিন্দনীয়’

ঢাকা: বিদেশি কূটনৈতিকদের আচরণকে ‘পক্ষপাতদুষ্ট’ আখ্যা দিয়ে এর নিন্দা জানিয়েছেন সার্ক মানবাধিকার ফাউন্ডেশন। মঙ্গলবার (২০ ডিসেম্বর)  জাতীয় প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের নেতারা এমন মন্তব্য করেন।

তারা বলেন, বাংলাদেশের মানবাধিকার, নির্বাচন ও অভ্যন্তরীণ বিষয়ে আচরণবিধি বহির্ভূত মন্তব্য-বিবৃতি দিচ্ছেন বিদেশি কূটনীতিকরা। অথচ জাতিসংঘ জেনেভা কনভেনশনের আলোকে একজন কূটনীতিকের দায়িত্ব, কর্তব্য, আচারণের সুস্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে। দেশের আভ্যন্তরীণ বিষয়ে তাদের অনধিকারচর্চা নিন্দনীয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মোহাম্মদ আবেদ আলী।   তিনি বলেন, একটি বিশেষ মহলকে সহায়তার উদ্দেশ্যে কূটনৈতিকরা আচরণবিধি পরিপন্থী কার্যক্রমে জড়িয়ে পড়েছেন। গত ৬ ডিসেম্বর ১৫টি দেশের কূটনীতিকদের যৌথ বিবৃতি, নিখোঁজ হওয়া সাবেক এক ছাত্রদল নেতার বাসায় ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাসের উপস্থিতি, পল্টনে বিএনপি অফিসের সামনে সংঘর্ষের ঘটনায় তার বিবৃতিসহ বিভিন্ন বিষয় আমাদের কাছে উদ্বেগজনক ও পক্ষপাতদুষ্ট বলে মনে হয়েছে। বর্তমান বিশ্বে মোড়লদের হাতেই মানবাধিকার ভুলণ্ঠিত হচ্ছে সবচেয়ে বেশি। তারাই বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অনাধিকার মন্তব্য করেন। ইরাক, সিরিয়া, ফিলিস্তিন, আফগানিস্তানসহ বিভিন্ন দেশে অন্যায়ভাবে আগ্রাসন চালিয়ে সাধারণ নাগরিকের অধিকার লঙ্ঘন তাদের কাছে কোনো নতুন বিষয় নয়।

লিখিত বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের প্রাক্কালে এ দেশকে বুদ্ধিজীবী শূন্য করতে একাত্তরের পরাজিত শক্তি গুম ও খুনের খেলায় মেতে উঠেছিল। সেই অশুভ শক্তিকে অস্ত্র-অর্থ দিয়ে শুধু সহযোগিতাই নয়, জাতিসংঘকে দিয়ে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বিজয়কে নস্যাৎ করতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা ছিল। যা ১৯৪৮ সালের মানবাধিকারের সার্বজনীন ঘোষণাপত্রের সঙ্গে সরাসরি সাংঘর্ষিক। সুতরাং যুক্তরাষ্ট্র এবং দেশটির রাষ্ট্রদূত যখন বাংলাদেশকে মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে অভিযুক্ত করেন, তখন সেটাকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মনে হয়। পশ্চিমা দেশগুলো আমাদেরকে বিভিন্ন সময়ে মানবাধিকারের কথা বলে। অথচ তারাই বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের অঘোষিত খুনী ও একাত্তরের বুদ্ধিজীবী হত্যাকারীদের আশ্রয় দিয়েছিল।

সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি সিদ্দিকুর রহমান মিয়া বলেন, কূটনীতিকদের পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ ও দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি, মানবাধিকার এবং নির্বাচন বিষয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত আমরা মানবাধিকার কর্মীরা ও নাগরিক সমাজ উদ্বেগ প্রকাশ করছি এবং বিশেষ রাজনৈতিক দলের স্বার্থ-সিন্ধির ভূমিকায় অবতীর্ণ না হওয়ার জন্য কূটনৈতিকদের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি। আমাদের বিশ্বাস সম্মানিত কূটনীতিকরা আন্তরিকভাবে তাদের দেশের প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করলে বাংলাদেশের সঙ্গে তাদের দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও সমৃদ্ধ ও সৌহার্দ্য হবে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন সাবেক ধর্ম ও পানি সম্পদমন্ত্রী এম নাজিম উদ্দীন আল আজাদ, বুয়েটের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. আব্দুল জব্বার খান, ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. আহম্মদ আবুল কালাম, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাড. আবুল হাশেম, সংগঠনের আজীবন সদস্য ইকবাল হোসেনসহ অন্যান্যরা।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২০, ২০২২
ইএসএস/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।