ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

সরকারি দল ছাড়া আর কারো রাজনীতি করার অধিকার নেই: প্রিন্স

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১০, ২০২৩
সরকারি দল ছাড়া আর কারো রাজনীতি করার অধিকার নেই: প্রিন্স

ঢাকা: বিএনপির দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেছেন, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার ও তাদের ওপর পুলিশ ও আওয়ামী সন্ত্রাসী হামলা অব্যাহত আছে। দেশে কোনো সুষ্ঠু রাজনৈতিক পরিবেশ নেই।

সরকারি দল ছাড়া আর কারো রাজনীতি করার অধিকার নেই। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকার দেশ থেকে বিএনপিসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে ধ্বংস করে নিজেদের একচ্ছত্র আধিপত্য বজায় রাখতে রাষ্ট্রযন্ত্রসহ সর্বোচ্চ শক্তি নিয়োগ করেছে।

সোমবার (১০ এপ্রিল) দুপুরে বিএনপির নয়াপল্টন কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।  

প্রিন্স অভিযোগ করে বলেন, ৮ এপ্রিল দেশব্যাপী বিএনপির কেন্দ্র ঘোষিত শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী এবং বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানাসহ নেতাদের গাড়ি ভাঙচুর করে আওয়ামী দুস্কৃতিকারীরা। খাগড়াছড়ি সদর উপজেলাসহ বিভিন্ন এলাকায় বিএনপি’র উদ্যোগে আয়োজিত ইফতার মাহফিলও পণ্ড করে দেওয়া হয়েছে। বিএনপির শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি পালনকালে বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক আনিসুর রহমান তালুকদার খোকনসহ সারাদেশে অসংখ্য নেতাকর্মীর ওপর সন্ত্রাসী হামলা চালানো হয়। গ্রেপ্তার করা হয়েছে অগণিত নেতাকর্মীকে। এসব আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলার ঘটনায় আবারো প্রমাণ হলো বর্তমান ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকার দেশ থেকে বিরোধী দলের অস্তিত্ব ধ্বংস করতে এখন মরণকামড় দিতে শুরু করেছে।

সারাদেশে বিএনপির বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর হামলা ও মামলার বর্ণনা দিয়ে প্রিন্স বলেন, সরকার একদলীয় শাসনব্যবস্থা পাকাপোক্ত করতে দেশের বিরোধীমতকে নিশ্চিহ্ন করতে চায়।

তিনি বলেন, নিত্যপণ্যের দামের ঊর্ধ্বগতিতে দেশের মানুষ দিশেহারা। রমজান মাসেও মানুষ ঠিক মতো এক বেলা খেতে পাচ্ছে না। অর্ধেকের বেশি জনগোষ্ঠী ঋণ করে সঞ্চয় ভেঙে দিনাতিপাত করছে, ঋণে জর্জরিত হয়ে মানুষ ঋণ শোধ করতে না পেরে আত্মহত্যা করছে, অভাবের তাড়নায় মা তার আদরের সন্তানকেও বিক্রি করে দিচ্ছে। অন্যদিকে ক্ষমতাসীনদের আশীর্বাদপুষ্টরা দুর্নীতি করে, ব্যাংক থেকে ঋণের নামে লুট করে দেশ-বিদেশে বিলাসী জীবনযাপন করছে। আর এসবের প্রতিবাদ করলে এবং সংবাদ প্রকাশ করলে সাংবাদিকসহ সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে চলছে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলার খড়গ।

বিএনপির এ নেতা বলেন, বর্তমানে ভোটারবিহীন সরকার সত্য প্রকাশ ও সমালোচনা সহ্য করতেই পারে না। সরকারের অবৈধ কাজের সমালোচনা ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলায় বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে একের পর এক গণমাধ্যম। সম্পূর্ণ রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় বিরোধী দলের মুখপত্র দৈনিক দিনকালের ডিক্লারেশন বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। র‌্যাবসহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে রাজনৈতিক উদ্দেশে কিভাবে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গুম করা হয়েছে, সেসব রোমহর্ষক ঘটনার বর্ণনা প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে। যা দেশবাসীর জন্য লজ্জার, অন্যদিকে আতঙ্কেরও। ভয়ংকর অবস্থা তৈরি করে মানুষের মনে ভীতি ছড়িয়ে দিতে সরকারি বাহিনীকে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে। সরকারের হাতেই আজ চরমভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। গণতন্ত্র বিনাশী সরকারের লোকেরাই একজন আরেকজনকে রাতের ভোটের এমপি হিসেবে অভিহিত করছে। তাদের মুখ থেকেই বেরিয়ে আসছে নিশিরাতের ভোটের কথা।

তিনি বলেন, সংসদকে পরিণত করা হয়েছে একদলীয় ক্লাবে। নিশিরাতের ভোটে ঘোষিত এমপিদের সংসদ জনগণের প্রতিনিধিত্ব করে না, স্বাধীনতার ৫০ বছর পেরিয়ে গেলেও কর্তৃত্ববাদী সরকারপ্রধানের ইচ্ছায় এখন যে সংসদ চলছে তা অকার্যকর, জনপ্রতিনিধিত্বহীন ও বিরোধী দলের বিরুদ্ধে বিষোদগার করার এবং দুই ব্যক্তি ও তাদের পরিবারের জয়গান করা হচ্ছে, যেখানে দেশ-জাতি-জনগণের চাওয়া পাওয়া কিংবা কল্যাণকরা কিছু হয় না, বরং জনঅধিকার হরণের কালো আইন তৈরি করা হয়।

তিনি বলেন, রাষ্ট্রক্ষমতা ধরে রাখতে নিশিরাতের সরকার এতটাই বেপরোয়া হয়ে উঠেছে যে, বিএনপিসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিকেও বরদাশত করছে নাা। বিএনপিকে নানাভাবে হয়রানি ও ক্ষতিগ্রস্ত করার ধারাবাহিক সরকারি মহাপরিকল্পনার অংশ হিসেবেই উল্লিখিত নেতাদের পুলিশ গ্রেপ্তার এবং আওয়ামী সন্ত্রাসীরা হামলা করে আহত করছে। দেশের বৃহত্তম ও সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল বিএনপিসহ অন্যান্য বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে নিশ্চিহ্ন করার গভীর চক্রান্তে লিপ্ত বর্তমান শাসকগোষ্ঠী অব্যাহত গতিতে নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারের মাধ্যমে কারান্তরীণ করছে।  

প্রিন্স বলেন, চলমান গণআন্দোলনের পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী বিদ্যুৎ, গ্যাসসহ দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি, আওয়ামী সরকারের সর্বগ্রাসী দুর্নীতির প্রতিবাদে এবং ১০ দফা বাস্তবায়নের দাবিতে আজ থেকে দেশব্যাপী বিভাগ ভিত্তিক ইউনিয়ন পর্যায়ে মানববন্ধন/অবস্থান, প্রচারপত্র বিতরণ কর্মসূচি পালিত হবে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১০, ২০২৩
টিএ/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।