ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

হাসিনার বানানো ট্রাইব্যুনালেই তার বিচার হবে: মাসুদ সাঈদী

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২১০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০২৪
হাসিনার বানানো ট্রাইব্যুনালেই তার বিচার হবে: মাসুদ সাঈদী

পিরোজপুর: গণহত্যার জন্য শেখ হাসিনার বানানো আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালেই তার বিচার হবে বলে মন্তব্য করেছেন পিরোজপুরের ইন্দুরকানী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান, ‘আল্লামা দেলোয়ার হোসাইন সাইদী ফাইন্ডেশন’র ভাইস চেয়ারম্যান মাসুদ সাঈদী।

সোমবার (২৮ অক্টোবর) বিকেলে পিরোজপুর জেলার টাউন ক্লাব মাঠে ‘রক্তাক্ত ২৮ অক্টোবর গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ উপলক্ষে জেলা শাখা জামায়াতের উদ্যোগে আয়োজিত সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

মাসুদ সাঈদী বলেন, বাংলাদেশ ও দেশের গণতন্ত্রকে গত সাড়ে ১৫ বছরে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা ধ্বংস করে দিয়ে গেছে। তারা দেশে হত্যা, গুম ও সন্ত্রাস কায়েম করে দুঃশাসনের রাজত্ব কায়েম করেছিল। আওয়ামী লীগ বাস্তবে একটি সন্ত্রাসী দল। দলটি প্রতিষ্ঠা থেকে শুরু করে এখনো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে যাচ্ছে। তারা আন্দোলনের নামে ঢাকার হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনে গান পাউডার দিয়ে বাস পুড়িয়ে ১১ জনকে হত্যা করেছিল। তারা ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি ভারতের বানানো ট্রাইব্যুনালে আল্লামা দেলোয়ার হোসাইন সাঈদীকে অন্যায়ভাবে ফাঁসির রায় দেয়। এ রায়ের বিরুদ্ধে দেশের মানুষ ফুঁসে ওঠে। তখন তিনশ মানুষকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এছাড়া জামায়াতের অনেক নেতাকে অন্যায়ভাবে ফাঁসি দিয়ে হত্যা করেছে তারা।  

তিনি আরও বলেন, ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর আওয়ামী লীগ লগি-বৈঠা দিয়ে পিটিয়ে জামায়াত-বিএনপির অনেককে হত্যা করেছিল। আর হত্যা করেই ক্ষ্যান্ত হয়নি। মৃত মানুষের ওপর তারা নৃত্য করেছিল। যাদের হত্যা করেছে, সব হত্যাকাণ্ডের বিচার করতে হবে। এর প্রধান আসামি শেখ হাসিনা। অনতিবিলম্বে শেখ হাসিনাকে ভারত থেকে ধরে এনে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে বিচার করে বাংলাদেশের আইনে সর্বোচ্চ শাস্তি দিতে হবে। নতুন আইন দিয়ে বিচার করে আমরা শেখ হাসিনার প্রতি কোনো প্রকার জুলুম করতে চাই না। আমরা চাই, হাসিনার বানানো আইনে, হাসিনার বানানো ট্রাইবুনালেই তার বিচার হোক। এই ট্রাইবুনাল থেকেই শেখ হাসিনার ফাঁসির আদেশ আসার পর প্রকাশ্যে তার রায় কার্যকর করা হোক।

এ সময় ‘আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী ফাউন্ডেশন’র চেয়ারম্যান শামীম সাঈদী বলেন, ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর জামায়াতের সমাবেশে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা পৈশাচিকভাবে হামলা চালিয়ে দিন দুপুরে লগি-বৈঠা দিয়ে পিটিয়ে মানুষ হত্যা করেছে। আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসী দল হিসেবে দেশে চিহ্নিত হয়েছে। এদেশের মাটিতে শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের আর ঠাঁই হবে না। ছাত্রলীগকে যেভাবে অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে সেভাবেই আওয়ামী লীগকেও অবৈধ ঘোষণা করতে হবে।

জেলা জামায়াতের আমির অধ্যক্ষ তোফাজ্জেল হোসাইন ফরিদের সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য একেএম ফখরুদ্দিন খান রাযী, জেলা জামায়াতে সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মোহাম্মাদ জহিরুল হক প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, অন্য কোনো দল নয়, আওয়ামী লীগই সন্ত্রাসী দল। লগি-বৈঠা দিয়ে মানুষ মেরেছে, বাসে আগুন দিয়ে মানুষ হত্যা করেছে আওয়ামী লীগের লোকজন। ছাত্রলীগের হাতে পিস্তল, লাঠি, দা তুলে দিয়েছে হাসিনা। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দেখা যায়, একদিকে টেন্ডারবাজি চলছে, অন্যদিকে মারামারি। সারাদেশে খুন-গুম করে বেড়িয়েছে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ-যুবলীগের ক্যাডাররা। ২০১৪, ২০১৮, ২০২৪ সালে দেশে কোনো নির্বাচন নয়, চক্রান্ত করে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা বসানো হয়েছিল। আওয়ামী লীগের এজেন্ডাই ছিল দেশকে রাজনৈতিক নেতৃত্বশূন্য করা, অর্থনীতিকে ধ্বংস করা।

২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর চারদলীয় জোট সরকারের নিয়মতান্ত্রিক ক্ষমতা হস্তান্তরের দিন ঢাকার জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে জামায়াতে ইসলামীর সমাবেশ ছিল। পাল্টা কর্মসূচি ছিল আওয়ামী লীগসহ তাদের জোটেরও। সেদিন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে তাদের ক্যাডার বাহিনী লগি-বৈঠা দিয়ে পিটিয়ে জামায়াত-শিবিরের ছয়জনকে হত্যা করে বলে দাবি দলটির নেতাদের। এছাড়া পরে আরও কয়েকজন প্রাণ হারান।

বাংলাদেশ সময়: ২২০৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০২৪
এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।