বরিশাল: বিএনপির নির্বাহী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান ও বরিশাল বিভাগের সাংগঠনিক টিমের প্রধান আব্দুল আউয়াল মিন্টু বলেছেন, একতাই মানুষের শক্তি, নিজেদের মধ্যে বিভেদ ভুলে দলের ভেতর একতা সব থেকে বেশি আমাদের দরকার। সব সময় নতুন নেতৃত্ব আসবে, স্বাধীনতার পর থেকে বরিশাল শহরে প্রথম নাম শুনছি আব্দুর রহমান বিশ্বাস সাহেবের।
রোববার (১৯ জানুয়ারি) দুপুর ১২টায় নগরের সদররোডস্থ দলীয় কার্যালয়ে আয়োজিত বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৮৯তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া মোনাজাত অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
বরিশাল জেলা (দক্ষিণ) আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আবুল কালাম শাহিনের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আব্দুল আউয়াল মিন্টু আরও বলেন, দেশের জন্য বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের অবদান কোনো গুণগান গেয়ে শেষ করা যাবে না। তার নাম যতবার মুছে ফেলার চেষ্টা করেছে ততই তার অনুগামী ও অনুসারীদের হৃদয়ের স্পৃহা আরও বেড়েছে। বাংলাদেশের ইতিহাস থেকে আমাদের দলের প্রতিষ্ঠাতা, দেশের মহান রাষ্ট্রনায়কের নাম কোনো দিন মুছে ফেলতে আমরা দেব না। আর স্বাধীনতা ঘোষক কে? এ বিষয়টি নিয়ে বিভেদ সৃষ্টি ভবিষ্যতে করার আর সুযোগও কেউ পাবে না।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুড়ি বলা হতো। কিন্তু মাত্র কয়েক বছরের মধ্যে মহান রাষ্ট্রনায়ক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের লিডারশিপের কারণেই তলাবিহীন ঝুড়ি থেকে আমরা শস্য ভাণ্ডারে পরিণত হয়ে বিদেশে চালও রপ্তানি করেছি। যে গণতন্ত্র আমাদের থেকে ছিনিয়ে নিয়েছিল তিনি সেই বহুদলীয় গণতন্ত্রকে আমাদের ফিরিয়ে দিয়েছিল; আমাদের যতগুলো সাংবিধানিক অধিকার নিয়ে গিয়েছিল, প্রত্যেকটি সাংবিধানিক অধিকার তিনি পুনঃপ্রতিষ্ঠার মাধ্যমে আমাদের ফেরত দিয়েছেন।
তিনি বলেন, আন্দোলন সংগ্রামের স্বীকৃতি কেউ দেবে না, আমাদের স্বীকৃতি আমরাই প্রতিষ্ঠিত করতে পারবো। কারণ গত ১৭ বছর ধরে বিএনপি নেতাকর্মীরা বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠায় দেশের মানুষের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য অনেক ত্যাগ-তিতিক্ষা করেছেন। ৬২ লাখ লোকের নামে মিথ্যে এবং প্রহসনমূলক মামলা করা হয়েছে, সেই মামলার সংখ্যা ১ লাখ ৬০ হাজারেরও বেশি। এগুলো ইতিহাস থেকে কেউ মুছে ফেলতে পারবে না। অতএব কেউ যদি মনে করে আমাদের ১৭ বছরের সংগ্রামের পরিবর্তে এক দেড়মাসের আন্দোলনে একটা সরকারকে ফেলে দিয়েছে, তাহলে তারা বোকারস্বর্গে বাস করছে। স্বীকৃতি দেবে এদেশের জনগণ, আর সেটা আসবে ভোটের মাধ্যমে।
তিনি বলেন, আমরা ১৮ বছর ধরে আন্দোলন সংগ্রাম করছি বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করার জন্য। আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া সংগ্রাম করতে করতে মৃত্যুর পথেই ছিলেন। শুধু গণতন্ত্র এবং মানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য। তিনি অসুস্থ অবস্থায় বর্তমানে লন্ডনে আছেন। তিনি যেন সুস্থ হয়ে দেশে আমাদের মাঝে আসতে পারেন সেজন্য সবাই দোয়া করবেন।
তিনি বলেন, একজন বলের বছরের শেষে ইলেকশন দেবে, আরেকজন বলে সংস্কার কমিশনের রিপোর্ট পাওয়া গেলে কথাবার্তার পরে তারপরে একটা তারিখ দেবে, কিন্তু আমরা এত ধানাইপানাই শোনার জন্য এতদিন আন্দোলন সংগ্রাম করিনি। আমাদের আন্দোলন সংগ্রামের লক্ষ্য উদ্দেশ্য একটাই ছিল দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা, মানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা। আমরা আন্দোলন সংগ্রাম করেছি , এখনও সংগ্রামে আছি। আমাদের সংগ্রাম চলবে যতদিন পর্যন্ত এদেশের প্রতিটি মানুষের ভোটের অধিকার, সাংবিধানিক অধিকার, মৌলিক অধিকার অর্জিত না হয়। আর এগুলোর প্রারম্ভিক কাজ হলো নির্বাচন। নির্বাচন করতে হলে আগের সরকারকে বিতাড়িত করা জরুরি ছিল, আমাদের সংগ্রামের উদ্দেশ্যও তাই ছিল। সংগ্রামে প্রাথমিক বিজয় আমরা পেয়েছি কিন্তু আসল উদ্দেশ্য এবং লক্ষ্য এখনও আমাদের সামনে।
আলোচনা সভা শেষে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এর রুহের মাগফিরাত কামনা করে দোয়া-মোনাজাত করা হয়। এর আগে সকাল থেকে জেলার বিভিন্ন উপজেলা ইউনিয়ন থেকে মিছিল সহকারে নেতাকর্মীরা সদররোডস্থ দলীয় কার্যালয়ের সামনে আসেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৯, ২০২৫
এমএস/জেএইচ