ঢাকা, রবিবার, ২৭ বৈশাখ ১৪৩২, ১১ মে ২০২৫, ১৩ জিলকদ ১৪৪৬

রাজনীতি

আমরা কোনো দলকে নিষিদ্ধ করার পক্ষে নই: জি এম কাদের

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯:৪১, মে ১০, ২০২৫
আমরা কোনো দলকে নিষিদ্ধ করার পক্ষে নই: জি এম কাদের জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের

ঢাকা: জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেছেন, আমরা বহুদলীয় গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি। নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতি করছে বা করতে চায়—এমন কোনো দলকে নিষিদ্ধ করার পক্ষে আমরা নই।

শনিবার (১০ মে) দুপুরে রাজধানীর বনানীতে জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে জাতীয় ছাত্র সমাজ কেন্দ্রীয় কমিটির সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

জি এম কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার যখন জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করেছিল, তখন আমরা তার প্রতিবাদ করেছি। তবে যদি গণহত্যার দায়ে কোনো দলকে নিষিদ্ধ করা হয়, তাহলে প্রশ্ন আসে—মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় যারা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে গণহত্যার জন্য দায়ী, তাদের সংগঠনগুলোর বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত হবে? কারণ, বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় গণহত্যা হয়েছে একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে।

তিনি আরও বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে জাতীয় পার্টি সক্রিয়ভাবে রাজপথে ছিল। রংপুরে আমাদের দুজন নেতা শহীদ হয়েছেন। আওয়ামী লীগ সরকারের দায়ের করা মামলায় আমাদের অন্তত চারজন জেল খেটেছেন। মিথ্যা মামলায় শত শত নেতাকর্মী পালিয়ে বেড়িয়েছেন। সংসদে এবং সংসদের বাইরে আমরা এই আন্দোলনের পক্ষে কথা বলেছি। দুঃখজনকভাবে, আজ আমাদের অবদান অস্বীকার করা হচ্ছে; বরং ছাত্র হত্যার মামলায় আমাদের অন্যায়ভাবে আসামি করা হয়েছে।

তিনি অভিযোগ করেন, যারা বৈষম্যের বিরুদ্ধে কথা বলেছে, তারাই আজ বৈষম্য সৃষ্টি করছে—এমন অভিযোগ এখন জনগণের মাঝে ব্যাপকভাবে আলোচিত।

জি এম কাদের বলেন, আমরা নাকি নির্বাচনে গিয়ে আওয়ামী লীগকে বৈধতা দিয়েছি! ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে আমার নেতৃত্বে প্রায় ২৭০ জন জাতীয় পার্টির প্রার্থী নির্বাচন বর্জন করেছিলেন। আমি তখন মন্ত্রী ছিলাম, নানা চাপে আমাকে নির্বাচনে থাকতে বলা হয়েছিল। এমনকি আমাকে পুনরায় মন্ত্রী করার প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু আমি রাজি হইনি। বিএনপি যদিও সেই জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেয়নি, তবে সে বছর স্থানীয় সরকারের সব নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল। আবার, ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপিসহ সব রাজনৈতিক দলই অংশ নেয়।

তিনি প্রশ্ন রাখেন, তাহলে কি স্থানীয় সরকার নির্বাচন ও ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণের মাধ্যমে বিএনপি ও অন্যান্য দলও আওয়ামী লীগকে বৈধতা দেয়নি?

জি এম কাদের বলেন, ২০২৪ সালের নির্বাচনে আমাদের দলকে ভাঙনের মুখে ফেলে, বিশেষ চাপ সৃষ্টি করে নির্বাচনে যেতে বাধ্য করা হয়েছিল। অনেকেই বিষয়টি জানেন। তবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে আমরা কোনো বেআইনি কাজ করেছি বলে মনে করি না। যদি এটি জনগণের প্রত্যাশার বিরুদ্ধে গিয়ে অপরাধ হয়, তবে তার বিচারও জনগণের ভোটের মাধ্যমেই হওয়া উচিত।

সভায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয় ছাত্র সমাজের আহ্বায়ক মারুফ ইসলাম প্রিন্স এবং পরিচালনা করেন সদস্য সচিব মো. আরিফ আলী। এছাড়া জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু, প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট মো. রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, লিয়াকত হোসেন খোকা, ভাইস চেয়ারম্যান মো. হেলাল উদ্দিন ও চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মো. খলিলুর রহমান খলিলসহ দলের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

এসএমএকে/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।