ঢাকা, রবিবার, ২৬ শ্রাবণ ১৪৩২, ১০ আগস্ট ২০২৫, ১৫ সফর ১৪৪৭

রাজনীতি

১২ আগস্ট কেআইবিতে যুব সম্মেলন করবে জাতীয় যুবশক্তি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮:০৯, আগস্ট ১০, ২০২৫
১২ আগস্ট কেআইবিতে যুব সম্মেলন করবে জাতীয় যুবশক্তি সংবাদ সম্মেলন।

আন্তর্জাতিক যুব দিবস উপলক্ষে দেশে প্রথমবারের মতো যুব সম্মেলনের আয়োজন করতে যাচ্ছে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুব উইং জাতীয় যুবশক্তি। আগামী ১২ আগস্ট রাজধানীর ফার্মগেটে অবস্থিত কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশে (কেআইবি) অনুষ্ঠিত হবে এই ‘জাতীয় যুব সম্মেলন ২০২৫’।

রোববার (১০ আগস্ট) বিকেলে বাংলামোটরে রূপায়ন টাওয়ারে জাতীয় যুবশক্তির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সংগঠনটির নেতারা।

সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে জাতীয় নাগরিক পার্টির যুব সংগঠন জাতীয় যুবশক্তির সদস্য সচিব ডা. জাহেদুল ইসলাম বলেন, আগামী ১২ আগস্ট আন্তর্জাতিক যুব দিবস উপলক্ষে আমরা জাতীয় যুবশক্তি দিনটি উদযাপন করবো জাতীয় যুব সম্মেলনের মধ্য দিয়ে। যেখানে সারা দেশের একটা অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হবে এবং সারা দেশের তরুণদের অংশগ্রহণ নিয়ে এই অনুষ্ঠানটা আমরা আয়োজন করবো। সাংগঠনিক জায়গাটা আমরা নিজস্ব জনশক্তির বাইরেও অন্যান্য ভাতৃপতির যত সংগঠন আছে, যুব সংগঠন আছে, তাদেরও আমরা আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। এর বাইরে বাংলাদেশের যুবদের একটা বড় অংশগ্রহণ কাজ করে আমাদের, যারা ভলেন্টিয়ারিজম থেকে শুরু করে বিভিন্ন অ্যাক্টিভিটির সঙ্গে যুক্ত থাকে তাদেরও আমরা দাওয়াত দিচ্ছি।

তিনি আরও বলেন, কোনো রাজনৈতিক জায়গা থেকে নয়, যুবদের প্রতিনিধিত্বের জায়গা থেকেই যুব সম্মেলন। যেখানে আমরা আগামী দিনে যুবদের নির্দেশনা এবং যুবদের নিয়ে কাজ করার একটা গাইডলাইন এবং একটা পরিকল্পনা পেশ করবো। সেই ধারাবাহিকতায় সব রাজনৈতিক দল এবং সিভিল সোসাইটি থেকে সব জায়গার মানুষকে আমরা সম্পৃক্ত করার চেষ্টা করছি এবং আমাদের সেই চেষ্টার প্রথম ভাব হিসেবে এই যুব সম্মেলনটা আমরা আয়োজন করছি।

সম্মেলনের অঞ্চলভিত্তিক প্রস্তুতি নিয়ে জাতীয় যুবশক্তির মুখ্য সংগঠক ইঞ্জিনিয়ার ফরহাদ সোহেল বলেন, কোনো রাজনৈতিক দলের যুব অঙ্গ সংগঠন হিসেবে আমরাই প্রথম আন্তর্জাতিক যুব দিবসকে বর্ণাঢ্যভাবে উদযাপন করতে যাচ্ছি। এখানে আমাদের সাংগঠনিক দিক-নির্দেশনার পাশাপাশি রাজনৈতিক একটা গ্রুমিংয়ের ব্যাপার থাকবে। আমরা বারবারই দেখছি যে, রাজনৈতিক দলগুলো তাদের অঙ্গ সংগঠনগুলোর যুবদের শক্তিকে লাঠিয়াল বা পেটোয়া বাহিনী হিসেবে ব্যবহার করা হয়। ওদের দিয়ে এলাকায় শোডাউন করানো হয়, চাঁদাবাজি করানো হয়। ওদের অনৈতিক কাজগুলোতে সম্পৃক্ত করা হয়। কিন্তু আমরা জাতীয় যুবশক্তি নতুন যে রাজনৈতিক বন্দোবস্তের কথা বলি, আমাদের এই আলাপের বা এই কার্যকারিতার একটা সুন্দর প্রতিফলন হচ্ছে আমাদের এই জাতীয় যুব সম্মেলন। আমরা চাই যুবকরা তাদের দক্ষতা নিয়ে কাজ করুক, রাজনৈতিক কর্মশালাগুলোর মাধ্যমে নিজেদের রাজনৈতিক ভিশন, রাজনৈতিক মিশনগুলোকে এলাইন করুক। সেই ধারাবাহিকতায় আমাদের এই যে জাতীয় যুব সম্মেলন হচ্ছে, আমরা এখানে আমাদের ৬৪ জেলার সম্পৃক্ততা নিশ্চিত করতেছি। আমাদের জেলার যেসব সংগঠকরা আছে তারা এখানে বিভিন্ন কর্মশালার মাধ্যমে তাদের সাংগঠনিক দক্ষতা বাড়াবে। আর আমরা আশা করছি, আমাদের অবশ্যই জাতীয় যুব সম্মেলন একটা মাইলস্টোন হয়ে থাকবে অন্যান্য রাজনৈতিক যুব সংগঠনের কাছে।

লিখিত বক্তব্যে জাতীয় যুবশক্তির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মো. তারিকুল ইসলাম বলেন, আন্তর্জাতিক যুব দিবস উপলক্ষে প্রথমবারের মতো জাতীয় যুবশক্তি আয়োজন করতে যাচ্ছে জাতীয় যুব সম্মেলন ২০২৫, যা অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১২ আগস্ট ফার্মগেটে অবস্থিত কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ কেআইবিতে। আন্তর্জাতিক যুব দিবস কেবল একটি প্রতীক দিন নয়, বরং সমাজে যুবদের কণ্ঠস্বর শানিত করার পাশাপাশি তাদের ক্ষমতায়ন ও সার্বিক অংশগ্রহণ বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি নিশ্চিত করবে।

তিনি আরও বলেন, এটি আমাদের চ্যালেঞ্জ করে যেন আমরা স্বীকার করি তরুণরা কেবল একটি সুন্দর বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা নয়, বরং নিজেদের সম্প্রদায়ের পরিবর্তনের সক্রিয় চালিকাশক্তি। যারা সমস্যা সমাধান করছে, অংশীদারিত্ব করছে এবং এমন পদক্ষেপ নিচ্ছে, যা টেকসই উন্নয়নের যে লক্ষ্য তা অর্জন করতে সহায়তা করে এবং সেই লক্ষ্যকে অতিক্রম করে আরও ন্যায়সঙ্গত অন্তর্ভুক্তিমূলক ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে নিয়ে যায়।

তারিকুল ইসলাম বলেন, জাতীয় যুবশক্তি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে দেশের সব যুবসমাজের জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ধর্ম, জাতি, ভাষা, অঞ্চল, লিঙ্গ বা সামাজিক প্রেক্ষাপট ও পটভূমি নির্বিশেষে। আমরা বিশ্বাস করি, প্রতিটি তরুণ সমাজ মর্যাদার দাবিদার এবং দেশের উন্নয়নে সমানভাবে অবদান রাখার অধিকার রাখে। ১২ আগস্ট দেশের প্রতিটি জেলা থেকে আসা যুবশক্তির ডেলিগেটেড নেতারা একত্রিত হবেন, সঙ্গে থাকবেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেত, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি, যুব সংগঠনসমূহ এবং জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা।

তিনি আরও বলেন, আমাদের এই উদ্দেশ্য হল বাংলাদেশের প্রতিটি প্রান্তরে যুব সমাজের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা। আমরা এমন একটি বাংলাদেশ কল্পনা করি যেখানে দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারকে প্রতিস্থাপন করবে সততা, সেবা ও জবাবদিহিতা। যেখানে শিক্ষায় কর্মসংস্থানে উদ্যোক্তা তৈরিতে ও নেতৃত্বের সুযোগে শহর ও গ্রামের তরুণরা সমানভাবে সুবিধাভোগ করবে। যেখানে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, শিল্প, সংস্কৃতি, খেলাধুলা ও বাণিজ্যের তরুণদের উদ্ভাবনী ক্ষমতা বিকশিত হবে। যেখানে বৈচিত্র্য উদযাপিত হবে এবং ধর্ম, জাতি বা লিঙ্গ প্রতিবন্ধকতার কারণে কোনো তরুণ বাংলাদেশে আর পিছিয়ে থাকবে না। যেখানে নীতি নির্ধারণ ও নেতৃত্বে তরুণদের সমান সম্মান ও স্থান থাকবে।

জাতীয় যুবশক্তির আহ্বায়ক বলেন, জাতীয় যুব সম্মেলন ২০২৫ এ আমরা উন্মোচন করব আমাদের বাংলাদেশের যুব ইশতেহার। এটি দীর্ঘ কোনো নীতির প্রস্তাব নয় বরং সরাসরি জনগণের একটি প্রতিশ্রুতিপত্র। সেই ইশতেহারে জোর দেওয়া হবে, সবার জন্য মর্যাদা, সমান সুযোগ, সৎ নেতৃত্ব এবং জাতীয় ঐক্যের। সম্মেলনের শেষে আমরা নেব এক ঐক্যবদ্ধ যুব শপথ, যেখানে প্রতিটি অংশগ্রহণকারী অঙ্গীকার করবে যে, তারা সরকারে, বিরোধী দলে বা সংসদের বাইরে যেখানেই থাকুক না কেন, জনগণের আস্থা কখনো তারা ভঙ্গ করবে না এবং জনগণের সম্পদ কখনো তারা অপব্যবহার করবে না। এটি কেবল আরেকটি রাজনৈতিক অনুষ্ঠান নয়, এটি প্রতিশ্রুতির একটি মহাসমাবেশ এবং মূল্যবোধের ঘোষণা ও বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতি এক নতুন দিগন্ত উন্মোচনের এক পদক্ষেপ।

এসসি/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।