জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেছেন, ট্রেডিশনাল পদ্ধতিতে নির্বাচনের যে ব্যর্থতা, তার পরিপ্রেক্ষিতেই পিআর (আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) পদ্ধতি এখন অপরিহার্য হয়ে গিয়েছে। এই ব্যর্থতার জন্য মূলত দায়ী রাজনৈতিক নেতা এবং দলগুলো।
তিনি বলেন, সেসব দল এখনো সক্রিয় বাংলাদেশের রাজনীতিতে, যারা কখনোই সুষ্ঠ নির্বাচন করেনি। যাদের সময়ে গণভোট হলে ৯৯ ভাগ মানুষের ভোট কাস্ট হয়ে যায়, নির্বাচনের প্রক্রিয়ায় যা একেবারেই অসম্ভব।
তিনি আরও বলেন, এখনো যদি ট্রেডিশনাল পদ্ধতিতে নির্বাচন হয়, সেই গোষ্ঠিটি আবারও কেন্দ্র দখল করবে। এরইমধ্যে সেই লক্ষণ আমরা মাঠে দেখছি। তো সে কারণেই পিআর ইজ দ্য বেস্ট সলিউশন।
রোববার (২৪ আগস্ট) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে বাংলাদেশ আদর্শ শিক্ষক ফাউন্ডেশন আয়োজিত ‘পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন ও জুলাই সনদের আইনিভিত্তি’ শীর্ষক এক গোল টেবিল বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।
মোহাম্মদ তাহের বলেন, যারা বলছেন পিআর বোঝেন না, তাদের কথাটি বোধহয় সঠিক নয়। কারণ সবাই পিআর বোঝেন বিধায় এরইমধ্যে ৭১ ভাগ মানুষ পিআরের পক্ষে রাজি হয়েছে।
তিনি বলেন, নির্বাচন হবে কি হবে না, আপনারা যাবেন কি যাবেন না— এমন নানা প্রশ্ন তুলে এখানে একটা পরিবেশকে ঘোলাটে করে তোলা হচ্ছে। মৌলিক প্রশ্ন হলো, সংস্কার মানছি কি মানছি না। জাতি আজ দুই ভাগেই বিভক্ত। একটি মাইনরিটি সংস্কার না করেই নির্বাচনে চলে যেতে চায়। তাদের উদ্দেশ্য নিয়ে আজ মানুষ সন্দেহ করতেই পারে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের বক্তব্য স্পষ্ট। সংস্কার হতে হবে, সংস্কারবিহীন নির্বাচন মানে হলো আওয়ামী লীগের আমলের নির্বাচন। সংস্কার বিহীন শাসন মানে সেই ফ্যাসিবাদের শাসন। সংস্কার বিহীন বাংলাদেশ মানে আমাদের বিগত অন্ধকারে ঢুকে যাওয়া সেই বাংলাদেশ।
জামায়াতের এই নেতা বলেন, জুলাইয়ের চেতনা ছিল, স্পিরিট ছিল ফ্যাসিবাদবিরোধী গণতান্ত্রিক সব শ্রেণীর মানুষের অধিকার সম্পন্ন সমৃদ্ধ এক নতুন বাংলাদেশ। সংস্কারবিহীন নির্বাচন এই নতুন বাংলাদেশের বিরুদ্ধে, একটি সঠিক নির্বাচনের বিরুদ্ধে একটি ষড়যন্ত্র। আমরা এই ষড়যন্ত্র রুখে দেব।
তিনি আরও বলেন, সংস্কার বাস্তবায়ন হবে এবং বাস্তবায়িত সংস্কারের ভিত্তিতে নির্বাচন হবে ইনশাআল্লাহ। আমি জনগণকে সেই বিষয়ে দৃঢ় ভূমিকা পালনের জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি এম কোরবান আলীর সভাপতিত্বে বৈঠকে আরও বক্তব্য দেন পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আবদুল লতিফ মাসুম, বাংলাদেশ আদর্শ শিক্ষক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক এবিএম ফজলুল করীম প্রমুখ।
ডিএইবি/আরএইচ