ঢাকা: দেশের চলমান রাজনৈতিক সংকট নিরসনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ৮ দফা প্রস্তাব পেশ করা হয়েছে।
সোমবার দুপুরে পুরানা পল্টনে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের আমীর সৈয়দ মোহাম্মদ রেজাউল করীম (চরমোনাই পীর) এ প্রস্তাব পেশ করেন।
প্রস্তাবের প্রথম দফায় চরমোনাই পীর নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দাবি করেন। তিনি বলেন, এটি সময়ের দাবি।
দলীয় সরকারের চেয়ে নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন তুলনামূলকভাবে সুষ্ঠু ও অবাধ হয় বলে দাবি করেন তিনি।
সংবিধানের দোহাই দিয়ে সুষ্ঠু,অবাধ, নিরপেক্ষ নির্বাচন কোনোক্রমেই বাধাগ্রস্থ করা যাবে না বলেও প্রস্তাবে উল্লেখ করা হয়।
দুর্নীতিবাজ ও সন্ত্রাসীদের রাজনৈতিক অধিকার থাকতে পারে না জানিয়ে প্রস্তাবের দ্বিতীয় দফায় রাজনীতির গুণগত পরিবর্তনের লক্ষ্যে দুর্নীতিবাজ ও সন্ত্রাসীদের রাজনৈতিক দলে আশ্রয়-প্রশয় না দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়।
তৃতীয় দফায়, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, জাতীয় সংহতি ও কার্যকর জাতীয় সংসদ প্রতিষ্ঠাকল্পে সংসদ নির্বাচনে বিকল্প পদ্ধতি প্রবর্তনের দাবি করা হয়।
বিকল্প পদ্ধতিতে: জনগণ ভোট দিবে দলকে, কোন ব্যক্তিকে নয় এবং ভোটের আনুপাতিক হারে দলগুলো আসন বরাদ্দ পাবে। যার ফলে কালো টাকা, পেশি শক্তি, ভোট কারচুপি বন্ধ হবে এবং দলের আদর্শ ও নেতাকর্মীদের সততা ও যোগ্যতা বিবেচনা করে জনগণ নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারবে বলেও দাবি করা হয়।
মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় শুধু আইনের শাসন নয়, ন্যায়ের শাসনও প্রতিষ্ঠা করতে হবে এবং রাষ্ট্রের সব স্তরে দুর্নীতি ও সন্ত্রাস নির্মূল করার বিষয়টিও প্রস্তাবের চতুর্থ ও পঞ্চম দফায় তুলে ধরা হয়।
দেশের সার্বিক কল্যাণে ইসলামী জীবনব্যবস্থা ও রাসূল (সা.) এর আদর্শ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বাংলাদেশ দুর্নীতি,সন্ত্রাস ও দারিদ্রমুক্ত সুখী সমৃদ্ধ কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত হতে পারে বলেও প্রস্তাবের ষষ্ঠ দফায় উল্লেখ করা হয়।
সপ্তম দফায় জাতীয় সংসদসহ সব স্থানীয় সরকার নির্বাচনে সৎ, যোগ্য ও আল্লাহ ভীরু প্রার্থীদের নির্বাচিত করার দাবি করা হয়।
প্রস্তাবের শেষ দফায় রাজনৈতিক ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠায় আন্ত:দলীয় সংলাপ অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করারও দাবি করা হয়।
এছাড়া দেশের সংকট নিরসনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, ওলামায়ে কেরাম, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন, সুশীল সমাজ এবং বিভিন্ন শ্রেণী পেশার প্রতিনিধিত্বশীল মানুষের সাথে ১৯ জানুয়ারি (সোমবার) থেকেই ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সংলাপ শুরু করবে বলেও সংবাদ সম্মেলন থেকে জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে চরমোনাই পীর বলেন, আন্দোলনরত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সরকার যদি অতি দ্রুত শান্তিপূর্ণ সমাধানে পৌঁছাতে না পারে তবে দেশ রক্ষায় এবং মানুষের জীবন সম্পদ রক্ষায় দেশের শান্তিকামী জনগণকে সাথে নিয়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ আগামী ২৬ জানুয়ারি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে দেশব্যাপী নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতী সৈয়দ মোহাম্মদ ফয়জুল করীম, মহাসচিব অধ্যক্ষ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, চরমোনাই পীরের রাজনৈতিক উপদেষ্টা অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, মহানগর সভাপতি অধ্যাপক এটিএম হেমায়েত উদ্দিন, কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক আহমদ আবদুল কাইয়ূম প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ২০২১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৯, ২০১৫