রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ): নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে যুবদলের মিছিলে সরকার বিরোধী স্লোগান দেওয়াকে কেন্দ্র করে স্থানীয় যুবদলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের দফায় দফায় ধাওয়া -পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
বুধবার (২৮ অক্টোবর) দুপুরে উপজেলার গোলাকান্দাইল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
সংঘর্ষ চলাকালে এশিয়ান হাইওয়ে (বাইপাস) সড়কে থাকা বিভিন্ন যানবাহন, সভাস্থলে থাকা মোটরসাইকেলসহ অন্তত ২০টি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। এতে সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।
আহতদের মধ্যে যুবদল নেতা সালাউদ্দিন দেওয়ান, রাকিব হাসান, নুর বক্স, মমিন মোল্লা, নুর হোসেন, মাসুম মেম্বার, গোলজার হোসেন, আব্দুল আজিজ, কাউসার আহাম্মেদ, শাহজাহান, সজল, এলাহি, আরিফ, করিম মিয়া, রাসেল মিয়া, সুমন, ইকবাল হোসেন, মনির হোসেন, আবুল কালাম, জাহাঙ্গীর হোসেন, ইসহাক মিয়া, আজগর আলী, সোহাগ, ছাত্রলীগ নেতা নাজমুল হাসান সবুজ, সোলায়মান, দেলোয়ার হোসেন, রাজু, সাকিল, মামুন, মনির হোসেন, আব্দুল আলী, আব্দুল্লাহকে বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, যুবদলের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে উপজেলার গোলাকান্দাইল এলাকায় স্থানীয় যুবদল নেতাকর্মীরা আলোচনা সভা ও আনন্দ মিছিলের আয়োজন করে। দুপুর ১টার দিকে আলোচনাসভার আগে কেন্দ্রীয় যুবদলের সহ অর্থ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান ভূইয়া দীপুর নেতৃত্বে যুবদল নেতাকর্মীরা এশিয়ান হাইওয়ে (বাইপাস) সড়কের গোলাকান্দাইল এলাকায় আনন্দ মিছিল বের করে।
মিছিলে যুবদল নেতাকর্মীরা সরকার বিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দেয়। এতে স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা প্রতিবাদ করে। তারা মিছিলে বাধা দিলে উভয় পক্ষের কয়েক দফা ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
পরে যুবদল নেতাকর্মীরা বাইপাস সড়কে চলাচলরত বেশ কিছু যানবাহনে ভাঙচুর চালায়। সংঘর্ষ ও গাড়ি ভাঙচুরের ছবি তুলতে গিয়ে শেখ সুমন নামে এক সংবাদকর্মী হামলার শিকার হন। এ সময় হামলাকারীরা তার ক্যামেরা ছিনিয়ে নেয়।
এদিকে, যুবদলের সরকার বিরোধী শ্লোগানের সংবাদ পেয়ে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবকলীগের নেতাকর্মীরা দেশীয় ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে যুবদলের সভাস্থল এলাকায় অবস্থান করে বিক্ষোভ শুরু করে। এ সময় যুবদল নেতাকর্মীরা পাল্টা স্লোগান দিতে থাকে। এতে উভয় পক্ষের মধ্যে আবারো উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।
দুপুর ২টার দিকে উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান সজীবের নেতৃত্বে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবকলীগের নেতাকর্মীরা যুবদলের সভাস্থলে হামলা চালায়। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে ফের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সভাস্থলে থাকা বাসভবনসহ মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকার ও ১৫টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়। এতে পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। খবর পেয়ে পুলিশের একাধিক টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ বিষয়ে উপজেলার ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান সজীব বাংলানিউজকে বলেন, যুবদল নেতাকর্মীরা মিছিল বের করে প্রধান মন্ত্রী ও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটূক্তি করে বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দেয়। এতে কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতাকর্মী প্রতিবাদ করলে তাদের ওপর হামলা চালানো হয়। এছাড়া অহেতুক বাইপাস সড়কে চলাচলরত বিভিন্ন যানবাহন ভাঙচুর করে তারা।
কেন্দ্রীয় যুবদলের সহ অর্থ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান ভূইয়া দীপু বলেন, কোনো কিছু বোঝার আগেই যুবদলের শান্তিপূর্ণ আনন্দ মিছিলে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা হামলা চালিয়েছে।
রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। ঘটনাস্থল পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০১৫/আপডেটেড:১৯১০
টিআই/এমজেড