ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

টিআইবিকে ক্ষমা চাইতে বললেন নাসিম

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৯, ২০১৫
টিআইবিকে ক্ষমা চাইতে বললেন নাসিম ছবি: দীপু মালাকার/বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: সংসদ নিয়ে ‘কুরুচিপূর্ণ’ বক্তব্য দেওয়ায় বেসরকারি সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল অব বাংলাদেশকে (টিআইবি) জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য, ১৪ দলের মুখপাত্র ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। নয়তো সংস্থাটির বিরুদ্ধে আইনানুনগ ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তিনি।



বৃহস্পতিবার (২৯ অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে ১৪ দলের এক সভা শেষে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে মোহাম্মদ নাসিম এ হুঁশিয়ারি দেন।

তিনি বলেন, কীভাবে তারা বলতে পারে এই পার্লামেন্ট একটি নাট্যশালা? তারা কীভাবে বলতে পারে এই পার্লামেন্ট পুতুল নাচের আসর? তারা এই কথাগুলো বলেছে। এটি জনগণের ভোটে নির্বাচিত সংসদ। এই সংসদের স্পিকার সিপিএতে নির্বাচিত হয়েছেন। এই সংসদের সদস্য আইপিএতে নির্বাচিত হয়েছেন। একটি রাজনৈতিক দলও এ ভাষায় কথা বলতে পারে না। এটা শুধু অর্র্মাজনীয় নয়, গর্হিতও। তারা বিএনপি-জামায়াতের চেয়েও জঘন্য ভাষায় সংসদকে আক্রমণ করে কথা বলেছে।

১৪ দলের মুখপাত্র বলেন, এরা কারা? এদের পরিচয় কী? এই টিআইবির মুখপাত্ররা কী চায়? তারা কি চেয়েছিল ৫ জানুয়ারির নির্বাচন না হোক। আর নির্বাচন না হলে দেশে একটি অসাংবিধানিক সরকার আসবে? সেই স্বপ্নপূরণ হয়নি বলেই কি আজকে তাদের এতো ক্ষোভ? টিআইবির তথাকথিত মুখপাত্ররা জনগণের ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের অপমান করেছেন। এতেই প্রমাণিত হয়, তারা দেশে গণতান্ত্রিক বিধি-ব্যবস্থার সরকার চান না, অসাংবিধানিক সরকার চান। তাদের বক্তব্যে প্রমাণ হয়েছে এটা গভীর ষড়যন্ত্র।

মোহাম্মদ নাসিম বলেন, পার্লামেন্টকে আক্রমণ করে টিআইবি যে ভাষা ব্যবহার করেছে এজন্য ১৪ দল মনে করে, টিআইবিকে জনগণের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। না হলে এদের বিরুদ্ধে যেভাবে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া দরকার, সেভাবে ১৪ দল ব্যবস্থা নেবে।

তিনি বলেন, ওদের নির্বাচন চাওয়ার অধিকার কে দিয়েছে? ওদের কাজ গবেষণা করা। ওরা ওদের এখতিয়ারের বাইরে গিয়ে এসব কথা বলেছে। অদূর ভবিষ্যতে টিআইবির মুখোশ উন্মোচন করা হবে। তাদের কথায় মনে হয়, তারা নির্বাচন চায়নি। বাংলাদেশের মানুষ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে তাদের চক্রান্ত ব্যর্থ করে দিয়েছে। ভবিষ্যতেও করবে।

মোহাম্মদ নাসিম স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, টিআইবির আয়ের উৎস কী, কারা এদের অর্থের যোগান দেয়, তা খতিয়ে বের করুন।

সম্প্রতি দু’জন বিদেশি হত্যা, আশুরার মিছিলে বোমা হামলা এবং পুলিশ হত্যা করা একইসূত্রে গাঁথা উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের এ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বলেন, একজন নেত্রী বিদেশে আছেন। কিন্তু তিনি বিদেশে গেলেন, আর একের পর এক ঘটনা ঘটে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে, চিহ্নিত করা হয়েছে, তারা একটি দলের মুখচেনা লোক। এসব হত্যাকাণ্ড-হামলার সঙ্গে কারা জড়িত, কারা গডফাদার, গডমাদার, গডব্রাদার, সব বেরিয়ে আসবে।

মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ৫ জানুয়ারির আগে ও পরে দেশের মানুষকে হত্যা করে খালেদা জিয়া এই সরকারকে উৎখাত করতে ব্যর্থ হয়েছেন। এখন তিনি ও তার দল এবং জামায়াত চক্র বিদেশিকে হত্যা করে কোনো চক্রান্ত সফল করতে চায় কি না ভাবতে হবে।

বিএনপি নেতা শমসের মবিন চৌধুরীর পদত্যাগ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, এটা বিএনপির অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। তাদের দলে কে ‘ইন’ করলো কে ‘আউট’ হলো এটা তো আমি বলতে পারবো না।

এসময় বিস্ময় প্রকাশ করে ১৪ দলের মুখপাত্র বলেন, তবে পদত্যাগ করা কি শুরু হল নাকি?

স্থানীয় সরকার নির্বাচন ১৪ দল জোটগতভাবে করবে কিনা জানাতে চাওয়া হলে ব্রিফিং মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ১৪ দল একটি সুখী পরিবার। আমরা যা-ই করি, একসঙ্গে থাকবো।

সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়ার সভাপতিত্বে জোটের এ সভায় মোহাম্মদ নাসিম ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন  আওয়ামী লীগের জাহাঙ্গীর কবির নানক, আহমদ হোসেন, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, ড. আব্দুর রাজ্জাক, ফরিদুর নাহার লাইলী, ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, সুজিত রায় নন্দী, এস এম কামাল হোসেন, জাসদের শরীফ নূরুল আম্বিয়া, ওয়ার্কার্স পার্টির কামরুল আহসান, জাতীয় পার্টির (জেপি) শেখ শহিদুল ইসলাম, ন্যাপের অ্যাডভোকেট এনামুল হক, গণতন্ত্রী পার্টির নুরুর রহমান সেলিম, ডা. শহিদুল্লাহ শিকদার, কমিউনিস্ট কেন্দ্রের ডা. ওয়াজেদুল ইসলাম, বাসদের রেজাউর রশিদ খান, গণআজাদী লীগের এস কে শিকদার প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৯, ২০১৫/আপডেট ১৯৩৩ ঘণ্টা
এসকে/এইচএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।