ঢাকা: জামায়াতকে বাদ দিয়ে বিএনপিসহ মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের সব শক্তিকে এক করে জাতীয় কনভেশন করার আহ্বান জানিয়েছেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি কাদের সিদ্দিকী।
মঙ্গলবার (০২ আগস্ট) জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে দলের মতবিনিময় সভায় প্রধানমন্ত্রীর কাছে এ আহ্বান জানান তিনি।
মতবিনিময় সভায় আরো বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান, জাগপার সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আসিফ নজরুল, জাতীয় পার্টির (জাফর) মহাসচিব মোস্তফা কামাল হায়দার, জাতীয় পার্টির (জেপি) মহাসচিব শেখ শহীদুল ইসলাম, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মোহাম্মদ ইব্রাহিম, বাংলাদেশ ন্যাপের চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি, এনপিপি’র চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ ইসলামী আন্দোলনের নেতা মেজবাউর রহমান, কাদের সিদ্দিকীর স্ত্রী নাসরিন সিদ্দিকী।
সভাপতির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘অনতিবিলম্বে জামায়াত এবং গণবাহিনীর ইনুকে (হাসানুল হক ইনু) ছাড়া মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সব শক্তিকে নিয়ে কনভেনশন আহ্বান করুন। আপনি যদি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের নেতৃত্বের কথা এখনও মনে করেন, তাহলে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল, তার মধ্যে আপনার যে কয়টি আছে, শুধু তাদের নিয়ে নয়, সকলকে ডাকুন’।
তিনি বলেন, ‘জাতীয় ঐক্য ঘরে ঘরে হবে না। যারা বঙ্গবন্ধুর চামড়া দিয়ে জুতা বানাতে চেয়েছেন, ডুগডুগি বাজাতে চেয়েছেন, তাদের নিয়ে জাতীয় ঐক্য করলে জাতি মেনে নেবে না। এজন্য আপনার জাতীয় ঐক্য হয়ে গেছে- এ বক্তব্য এ সভা থেকে আমরা খারিজ করে দিলাম’।
তিনি আরো বলেন, ‘আগামী ৪ আগস্ট খালেদা জিয়ার সঙ্গে বৈঠকে তাকে বলবো, জন্মদিন ১৫ আগস্ট পালন না করতে। আর ছেলেকে সঠিক ইতিহাস বলতে। আর যেনো হাওয়া ভবন না করেন’।
জেএসডির সভাপতি আ স ম আব্দুর রব বলেন, ‘ঘর থেকে বের হতে পারবেন কি-না, তা নিয়ে সারা দেশের মানুষ আজ আতঙ্কিত। সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গিবাদের সংকটে পড়েছে বাংলাদেশ। এ সংকট মোকাবেলায় সরকার আন্তরিক নয়। সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গিবাদ জিইয়ে রেখে ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী করার চেষ্টা করছে তারা। জঙ্গি উৎখাতের নামে বিরোধী দলকে দমনের চেষ্টা করা হচ্ছে। সরকার জঙ্গি ইস্যুকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করতে চায়’।
আ স ম রব বলেন, একাত্তরে যুদ্ধ করেছি দল-মত নির্বিশেষে। মুক্তিযুদ্ধের সব শক্তিকে এক করে জাতীয় ঐক্য করতে হবে। রাজনৈতিক বিভেদ তৈরি না করে, জঙ্গিবাদ প্রতিরোধে জনগণের ঐক্য তৈরি করতে প্রধানমন্ত্রীকে আহ্বান জানাচ্ছি’।
কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, মানুষ চায় জীবনের নিরাপত্তা। সেই নিরাপত্তা আজ হুমকির মুখে। এ পরিস্থিতিকে সুবিধাজনক মনে হচ্ছে না। স্কুল কলেজের ছাত্র-ছাত্রী নামিয়ে আর হাজার হাজার মানুষ মানববন্ধন করলে জঙ্গিবাদ নির্মূল হবে বলে আমি বিশ্বাস করি না’।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, ‘সরকারের বাইরে যেসব রাজনৈতিক দল বা ব্যক্তি রয়েছে, তাদের উচিত, জাতীয় সংকটে সরকারকে সহযোগিতা করা। আবার সরকারও যদি ভুল করে, তা দেখিয়ে দেওয়া। আমরা মনে করি, দেশে জাতীয় ঐক্য হবে’।
সরকারকে জামায়াত নিষিদ্ধ করার পরামর্শ দিয়ে জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জানান ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীও। তিনি বলেন, সাংবাদিক শফিক রেহমান ও নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নাকে মুক্তি দিতে হবে। বিএনপিসহ সব বিরোধী দলকে মত প্রকাশের সুযোগ দিতে হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. আসিফ নজরুল বলেন, জঙ্গিবাদ একটি বড় সার্বজনীন সমস্যা। দেশে সুষ্ঠু স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনুন। তা না হলে বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ দমন হবে না’।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫২ ঘণ্টা, আগস্ট ০২, ২০১৬
এসএমএ/এএসআর