ঢাকা: দলের সবস্তরে কমিটিতে ৩৩ শতাংশ নারী নেতৃত্ব এখনও নিশ্চিত করতে পারেনি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। কেন্দ্রীয় কমিটিতে (কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ) দলটির নারী নেতৃত্বের হার মাত্র ১১ শতাংশ।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জেলা, উপজেলাসহ অন্যান্য কমিটিতেও নারী নেতৃত্বের হার এর থেকে আরও কম। কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সঙ্গে তুলনা করলে কোথাও কোথাও নারী নেতৃত্বের হার আরও করুণ।
দলীয় সূত্র জানায়, দলের কেন্দ্রীয় কমিটি ছাড়া অন্যান্য ইউনিটের কোথাও কোথাও শুধু মহিলা বিষয়ক সম্পাদক রয়েছেন। যে হারে নারী নেতৃত্ব উঠে আসছে তাতে ২০২০ সালে ৩৩ শতাংশ টার্গেট পূরণ করা সম্ভব হবে না।
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ২০০৯ এর (সংশোধিত) ৯০ বি ধারা অনুযায়ী ২০২০ সালের মধ্যে কেন্দ্রীয় কমিটিসহ রাজনৈতিক দলগুলোর সব কমিটিতে নারীদের জন্য কমপক্ষে শতকরা ৩৩ শতাংশ আসন বা পদ নিশ্চিত করার বিধান রয়েছে।
নির্বাচন কমিশন দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে এ হার নির্ধারণ করে। ওই সময় নারী নেতৃত্বকে এগিয়ে নিতে এই কোটা পূরণের অঙ্গীকার করে রাজনৈতিক দলগুলো।
আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আগের তুলনায় বর্তমানে নারীরা রাজনীতিতে এগিয়ে আসছেন। দলে নারী সদস্যের সংখ্যা বাড়ছে কিন্তু সেই হারে নেতৃত্ব তৈরি হচ্ছে না।
যোগ্যতা ও মানের দিক থেকে এগিয়ে যেতে পারছেন না তারা। নেতারা মনে করেন, ‘যে হারে বাড়ছে টার্গেট পূরণের জন্য সেটা সন্তোষজনক নয়। ’
সূত্র জানায়, বিষয়টি নিয়ে দলের বৈঠকেও কথা হয়েছে। গত জুলাইয়ে দলের সংসদীয় বৈঠকে কার্যনির্বাহী সংসদের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক ফজিলাতুন নেছা ইন্দিরা নারী নেতৃত্বের হার বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন।
আওয়ামী লীগের ৭৩ সদস্যের কার্যনির্বাহী সংসদে বর্তমানে সভাপতি শেখ হাসিনাসহ নারীর সংখ্যা ৮ জন। এর মধ্যে প্রায় ২ বছর আগে মৃত্যুবরণ করেছেন দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সৈয়দা জোহরা তাজউদ্দিন।
বাকিরা হলেন-সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, মতিয়া চৌধুরী, অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মণি, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক ফজিলাতুন নেছা ইন্দিরা, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী এবং কার্যনির্বাহী সদস্য মন্নুজান সুফিয়ান।
উপদেষ্টা পরিষদে রয়েছেন দুইজন। তারা হলেন- অধ্যাপিকা হামিদা বানু ও অধ্যাপিকা সুলতানা শফি।
তবে সূত্র বলছে, আওয়ামী লীগের আগামী জাতীয় সম্মেলনে যে নতুন কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করা হবে-তাতে নারী নেতৃত্বের সংখ্যা বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে নির্ধারিত ৩৩ শতাংশ কোটা পূরণ সম্ভব নয়। একই অবস্থা বিভিন্ন জেলা কমিটিতেও।
আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক ফজিলাতুন নেছা ইন্দিরা বাংলানিউজকে বলেন, ২০২০ সালের মধ্যে ৩৩ শতাংশ নারী নেতৃত্বের কোটা পূরণের কথা। এখনও সময় আছে। কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটিতে আগামী সম্মেলনে নারী নেতৃত্ব আরও বাড়বে।
‘আমাদের যেসব জেলা, উপজেলা কমিটি হচ্ছে সেখানেও নারী নেতৃত্ব নেওয়া হচ্ছে। বিষয়টি সংসদীয় দলের সভাতেও এ কোটা পূরণের ওপর জোর দিয়েছি। ’
দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও এ প্রস্তাবে সমর্থন দিয়েছেন বলে জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ০০৫২ ঘণ্টা, আগস্ট ৩০, ২০১৬
এসকে/এমএ