ঢাকা, বুধবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

খালেদা জিয়ার মামলায় সরকার ও দুদক একই ভূমিকায়

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৫১ ঘণ্টা, আগস্ট ৫, ২০১৭
খালেদা জিয়ার মামলায় সরকার ও দুদক একই ভূমিকায় নয়াপল্টনের দলীয় কার্যালয়ের সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতারা। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: বিএনপির চেয়ারপারসন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলায় সরকার ও দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) একই ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি।

শনিবার (০৫ আগস্ট) বিকেলে নয়াপল্টনে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির শীর্ষ নেতারা এ অভিযোগ করেন।  

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য জাতীয় সংসদের সাবেক স্পিকার ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদীন ও যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন।

 

বিএনপির মহাসচিব বলেন, দুদক একটি নিরপেক্ষ ও স্বাধীন প্রতিষ্ঠান। তাদের প্রধান দায়িত্ব হচ্ছে দুর্নীতি দমন করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা, তদন্ত করা এবং দোষী ব্যক্তিদের আইনে সোপর্দ করা।  

‘কিন্তু অত্যন্ত দুর্ভাগ্যক্রমে সম্প্রতি দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান গণমাধ্যমে একটি বিবৃতি দিয়েছেন, বা মন্তব্য করেছেন-যে মন্তব্যটি আমাদের কাছে কেবল দুর্ভাগ্যজনক নয়, আমরা ক্ষুব্ধ ও হতাশ হয়েছি। পুরো জাতি হতাশ হয়েছে। ’
 
তিনি বলেন, আমাদের কাছে মনে হয়েছে, তার এ বক্তব্য সরকারেরই বক্তব্য। দুর্নীতি দমন কমিশনকে মনে হয়েছে সরকারের রাজনীতি এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্যই কাজ করছে। ইতোপ‍ূর্বে দুর্নীতি দমন কমিশনের কোনো চেয়ারম্যানকে এ ধরনের বক্তব্য দিতে দেখিনি।  
 
দুদক চেয়ারম্যান কী বক্তব্য দিয়েছেন-সেটি উল্লেখ না করেই মির্জা আলমগীর বলেন, এমন কী ১/১১ এর সময় দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান এ ধরনের বক্তব্য দিয়েছেন বলে আমাদের জানা নেই! দুদক চেয়ারম্যানের এই বক্তব্যকে খালেদা জিয়ার মামলা প্রভাবিত করবে বলে আমরা মনে করি।  

তিনি বলেন, এই দুর্নীতি দমন কমিশন আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনার দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলা খারিজ হবার পর কোনো আপিলও তারা করেনি। প্রধানমন্ত্রী হবার পর বিচারাধীন বিভিন্ন মামলায় শেখ হাসিনা হাজির হননি। মামলা বাতিল হবার পর দুদক কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।  

দুদকের প্রায় সব আইনজীবী আওয়ামী লীগ সমর্থক উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, এতে প্রমাণ করে দুর্নীতি দমন কমিশন পক্ষপাতদুষ্ট ভূমিকা পালন করছে। আওয়ামী লীগ সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়নে নিয়োজিত রয়েছে। সে কারণেই একই আদালতে অন্য মামলায় এক থেকে দেড় মাস সময় দেওয়া হয়। অথচ খালেদা জিয়ার মামলায় তিন থেকে সাত দিনের মধ্যেই তারিখ পড়ে।

তিনি বলেন, সাধারণ মানুষ যে ন্যূনতম সুযোগটুকু পায়, দুদকের চাপের কারণে খালেদা জিয়া সে সুযোগ পান না। দুদক ও সরকারের ভূমিকা এক্ষেত্রে একাকার হয়ে গেছে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়, দুদক ও সরকার খালেদা জিয়া বিরোধী দলের নেতাদের মামলায় একই ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে।  
 
‘আমরা সম্প্রতি ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ঘটনায় খালেদা জিয়ার মামলায় ন্যায় বিচার পাওয়ার ব্যাপারে শঙ্কিত রয়েছি। জাতির প্রত্যাশা দুর্নীতি দমন কমিশন নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করবে, স্বাধীন ভূমিকা পালন করবে, সরকারের ক্রীড়নক হয়ে কাজ করবে না। ’  

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন-বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আহমেদ আজম খান, অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী, বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাসুদ আহমেদ তালুকদার, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট আবেদ রাজা প্রমুখ।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৫ ঘণ্টা, আগস্ট ০৫, ২০১৭/আপডেট: ১৯৩০ ঘণ্টা
এজেড/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।