আগামী নির্বাচনেও ১৪ দলীয় জোটগতভাবে অংশ নেওয়ার বিষয়টিকে নিশ্চিত ধরে দিয়েই তারা এই প্রস্তুতির কাজ শুরু করেছে। তবে জোটগত সমঝোতা হতে পারে এমন আসনের বাইরে যেখানে দলের সাংগঠনিক অবস্থান রয়েছে সেসব আসনের জন্য আলাদা করে প্রস্তুতি রাখছে ১৪ দলীয় জোটের শরিক দলগুলো।
জোটের শরিক দলগুলোর নেতারা জানান, আগামী নির্বাচনেও ১৪ দল জোটগতভাবে অংশ নেবে এটা নিশ্চিত। জোটের প্রধান দল আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকেও জোটগতভাবে নির্বাচনের কথা বলা হয়েছে। শরিক দলগুলোকেও নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে।
এদিকে জোটগত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সঙ্গে সমঝোতায় কতটি আসন পেতে পারে এবং কতটি আসন চাওয়া হবে সেটিও নির্ধারণের প্রক্রিয়া শুরু করেছে দলগুলো। এই বিষয়টিকে সামনে রেখেই দলগুলো নিজ নিজ অবস্থান থেকে যে সব আসনে তাদের অবস্থা ভালো সেগুলোতে প্রস্তুতির ওপর জোর দিয়েছে। এসব আসনে কর্মী সভা, সমাবেশ এবং প্রার্থীরা গণসংযোগ শুরু করেছে।
জোটের শরিক ওয়ার্কার্স পার্টি প্রায় ৫০টি আসনে প্রার্থী দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানা গেছে। আসনগুলোতে প্রস্তুতির কাজ শুরু করেছে দলটি। তবে আসন সমঝোতায় ১০/১২টি আসন চাওয়া হতে পারে বলে দলটির একটি সূত্র জানায়।
এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা বাংলানিউজকে বলেন, জোটগতভাবে আমরা নির্বাচনে অংশ নেবো। তবে আমরা দলীয় প্রস্তুতি হিসেবে ৫০টি আসনে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি। জোট থেকে আমরা ১৫টি আসন দাবি করবো। বর্তমানে আমাদের ৭ জন এমপি রয়েছেন। এর কম তো দিতে পারবে না।
জোটের আরেক শরিক তরীকত ফেডারেশন জোটগতভাবে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। তবে দলটি নিজস্ব অবস্থান থেকে ১০০ আসনে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে দলের নেতারা জানান।
এ বিষয়ে দলটির চেয়ারম্যান নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী বাংলানিউজকে বলেন, আমরা ১০০ আসনে মনোনয়ন জমা দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি। তবে আমরা ১৪ দলের বাইরে যাবো না। গত নির্বাচনে আমরা ১২টি আসন চেয়েছিলাম, এবার আমরা আরও বেশি চাইবো। কতটি পাবো সে সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধানমন্ত্রী।
জোটের শরিক জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদও নির্বাচনী প্রস্তুতি শুরু করেছে। দলের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে বেশ কিছু আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নির্বাচনী প্রস্তুতির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে এ দলটি দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পরায় কোন অংশ কতটি আসনে প্রস্তুতি নেবে বা কতটি আসনে জোটের কাছে ছাড় চাবে সে বিষয়ে কোনো অংশই নির্দিষ্ট করে কিছু বলতে পারছে না। সদ্য বিভক্ত জাসদের একটি অংশের নেতৃত্ব দিচ্ছেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, আরেক অংশের নেতৃত্বে রয়েছেন শরিফ নুরুল আম্বিয়া।
এই দুই অংশের নির্দিষ্ট কিছু নেতা ছাড়া সারা দেশে নেতা-কর্মীদের কে কোন অংশে শেষ পর্যন্ত থাকবে তা এখনও স্পষ্ট নয়। তাই দলটির কোন অংশ কতটি আসন দাবি করবে সেটা এখনই বলতে পারছেন না নেতারা।
এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে জাসদের (ইনু) সাধারণ সম্পাদক শিরিন আখতার বাংলানিউজকে বলেন, নির্বাচন ১৪ দলগতভাবে হবে। বিগত নির্বাচনে যেসব আসনে নির্বাচন করেছিলাম সেগুলো ধরেই কাজ হচ্ছে। আমরা কয়টি আসন চাইবো সেটা এখনই বলতে পারছি না।
জাসদ আরেক অংশের সভাপতি শরিফ নুরুল আম্বিয়া বাংলানিউজকে বলেন, যারা নির্বাচন করতে চায় তাদের প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে। আমরা ৪/৫টি আসন চাইতে পারি।
এছাড়া ১৪ দলের শরিক জাতীয় পার্টি (জেপি), ন্যাপ, গণতন্ত্রী পার্টি, সাম্যবাদী দলও নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করেছে বলে এসব দলের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে।
বাংলাদেশ সময়: ১২২৬ ঘণ্টা, আগস্ট ১২, ২০১৭
এসকে/এমজেএফ