তিনি বলেছেন, অনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী পুরোপুরি গায়ের জোরে, দখলদারিত্ব কায়েম করে ক্ষমতায় টিকে আছেন। বিনা ভোটের সরকার আবারও অনৈতিক পথে হাঁটছে।
সোমবার (৮ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিএনপির যৌথসভা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে ফখরুল এ কথা বলেন।
নির্বাচনকে ঘিরে দেশে অস্থিতিশীলতা তৈরির চেষ্টা চলছে বলে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতাদের অভিযোগ প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, জনগণের ভোটাধিকার প্রয়োগে বাধা দিতে সরকার পরিবেশ ঘোলাটে করার চেষ্টা করলেই কেবল দেশে অস্থিতিশীলতা দেখা দেবে। অন্যথায় নির্বাচনী বছরে দেশ অস্থিতিশীল হওয়ার কোনো কারণ নেই।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মানসিক সুস্থতার পরীক্ষা করা দরকার বলে সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার করা মন্তব্যের সমালোচনা করে ফখরুল বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী অশালীন ভাষায় যে মন্তব্য করেছেন, সেটি পুরোপুরি রাজনৈতিক শিষ্টাচারবিরোধী। আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। একইসঙ্গে ভবিষ্যতে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে এমন মন্তব্য করা থেকে তাকে বিরত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনা করে বিএনপি প্রধান বলেন, ভোটারবিহীন প্রধানমন্ত্রীর ন্যূনতম মূল্যবোধ থাকলে পদত্যাগ করে নতুন করে নির্বাচনের উদ্যোগ নিতেন তিনি।
রোববার (৭ জানুয়ারি) থেকে শুরু হওয়া জাতীয় সংসদের অধিবেশনে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের দেওয়া ‘ভাষণকে দুঃখজনক’ উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, তিনি আওয়ামী লীগের লক্ষ্য বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছেন। দেশের উন্নয়নমূলক কোনো কাজে তিনি সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না। তার কাজের মধ্যে দেশের উন্নয়নের কোনো প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে না।
ফখরুলের ব্রিফিংকালে তার সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন দলের সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, যুগ্ম-মহাসচিব মজিবুর রহমান সরোয়ার, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, এমরান সালেহ প্রিন্স, শামা ওবায়েদ, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী প্রমুখ।
এর আগে অনুষ্ঠিত যৌথসভায় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রিজভী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন দলের যুগ্ম-মহাসচিব, সম্পাদক এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা।
জিয়ার জন্মবার্ষিকী ঘিরে বিএনপির কর্মসূচি
১৯ জানুয়ারি বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৮২তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত হয় যৌথসভায় ।
কর্মসূচিগুলো হলো- ১৯ জানুয়ারি সকালে বিএনপি প্রধান খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে দলের নেতাকর্মীরা শেরেবাংলা নগরে জিয়াউর রহমানের সমাধিস্থলে ফাতেহা পাঠ ও পুষ্পার্ঘ অর্পণ করবেন।
সেদিন দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সারাদেশের দলীয় কার্যালয়ে দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে দৈনিক সংবাদপত্রে প্রকাশ হবে ক্রোড়পত্র এবং পোস্টার।
তার আগে ১৮ জানুয়ারি বেলা ২টায় রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে আলোচনা সভা করা হবে।
এছাড়া, জিয়াউর রহমানের ওপর নির্মিত প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শনী, রচনা প্রতিযোগিতা, দুস্থদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ, ছাত্রদলের উদ্যোগে আলোকচিত্র প্রদর্শনী, শ্রমিক দলের উদ্যোগে বর্ণাঢ্য র্যালি, জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থা-জাসাসের উদ্যোগে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, মহিলা দলের উদ্যোগে দুস্থদের মাঝে শাড়ি বিতরণ, ডক্টর্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-ড্যাবের উদ্যোগে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচ তলায় ১৯ জানুয়ারি দিনব্যাপী ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প এবং দলের সব অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে আলোচনা সভাসহ নানা কর্মসূচি পালন করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৮, ২০১৮/আপডেট ১৬৫৭ ঘণ্টা
এএম/এইচএ