এসময় বিএনপি ও তার অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের মাঠে থাকতে নির্দেশ দিয়েছেন দলটির হাইকমান্ড। ইতোমধ্যে রাজধানীতে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালনের প্রস্তুতিও নিয়েছে দলটির নেতাকর্মীরা।
তারা বলছেন, বিএনপি ও তার অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের সকাল থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। দলের নেতাকর্মীরা খালেদা জিয়ার গাড়িবহরের সঙ্গে যোগ দেবেন এবং মামলার রায় পরবর্তী নির্দেশনার জন্য অপেক্ষা করবেন।
সেক্ষেত্রে মামলার রায় ইতিবাচক হলে সেটা হবে এক ধরনের ব্যাপার আর যদি ভিন্ন রায় আসে তাহলে রাজধানীসহ সারাদেশে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি দেওয়া হবে। সেই কর্মসূচিতে তারা যেন স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করে সেই নির্দেশনা দেওয়া আছে।
এদিকে মামলার রায়কে কেন্দ্র করে রাজধানীসহ সারাদেশে তিন হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে দাবি করে বিএনিপর সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, রায়কে কেন্দ্র করে গত কয়েকদিনে সারাদেশে তিন হাজারেরও বেশি নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাসায় বাসায় তল্লাশি করা হচ্ছে, ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। দেশ যেন একটা ভয়ের নগরীতে পরিণত হয়েছে।
সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবীব উন নবী খান সোহেল আন্দোলনে না নামলে পরবর্তীতে বাসায় গিয়ে নেতাকর্মীদের হাতে চুড়ি পরিয়ে দেবেন বলেও হুঁশিয়ার করেন। এমনকি খালেদা জিয়াও দলের নেতাকর্মীদের হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন যে, আন্দোলনে না নামলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সিদ্ধান্ত আসবে দলের পক্ষ থেকে।
অপরদিকে, ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগও আইনশৃঙ্থলা বাহিনীকে সহায়তা করতে মাঠে থাকবে বলেও ঘোষণা দিয়েছে। সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে সাঈদ খোকন নেতাকর্মীদের মাঠে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন।
এমন পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) ভোর ৪টা থেকে রাজধানীতে সভা সমাবেশ মিছিল মিটিং নিষিদ্ধ করেছে ঢাকা মহানগর মেট্রোপলিট্টন পুলিশ (ডিএমপি)। দেশের বৃহৎ দু’টি দলের পাল্লাপাল্টি মাঠ দখলের লড়াইয়ে যেকোন উদ্ভুত পরিস্থিতি মোকাবেলায় অতিরিক্ত পুলিশ, র্যাব, গোয়েন্দা সংস্থার পাশাপাশি মোতায়েন করা হয়েছে বিজিবি। উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা ও নাশকতা করলে তা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কঠোর হস্তে দমন করবে বলেও জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
রাজধানীর বকশীবাজার কারা অধিদপ্তরের প্যারেড গ্রাউন্ডে স্থাপিত বিশেষ জজ আদালত ৫ এর বিচারক আক্তারুজ্জামানের আদালতে হাজিরা দেবেন খালেদা জিয়া। এর আগে ২৫ জানুয়ারি যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে রায়ের দিন ধার্য করেন আদালত।
খালেদা জিয়ার আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুর রেজ্জাক খান খালেদা জিয়াসহ অন্য আসামির বিরুদ্ধে মামলা প্রমাণিত হয়নি দাবি করে সব আসামির খালাস দাবি করেছেন।
এছাড়া ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেছেন, মিথ্যা, বানোয়াট ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যমূলকভাবে এ মামলা দায়ের করা হয়েছে। ন্যায় বিচার হলে এ মামলায় সাজা হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। খালেদা জিয়া খালাস পাবেন।
অপরদিকে দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল বলেছেন, জিয়া অরফানেজে এতিমদের নামে টাকা আনা হলেও কোনো এতিমের কল্যাণে সে টাকা ব্যয় করা হয়নি। কোথাও কোনো এতিম দেখাতে পারেনি। তারা এই টাকা আত্মসাৎ করেছে। আমরা তা ৩২ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যদানের মাধ্যমে প্রমাণ করেছি। এবং আমরা আদালতের কাছে আবেদন জানিয়েছি যে, এ মামলায় সমস্ত সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে সর্বোচ্চ সাজা দেওয়ার।
এ নিয়ে জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, আমরা আশা করছি বিচারক ন্যায় বিচার করবেন এবং খালেদা জিয়া খালাস পাবেন। আর যদি রাজনৈতিকভাবে রায় দেওয়া হয় তাহলে তা রাজনৈতিকভাবে মোকাবেল করা হবে।
বাংলাদেশ সময় ০৪৩১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৮, ২০১৮
এএম/আরএ