জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৯৮তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে রোববার (১৮ মার্চ) প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে শিশু-কিশোর মঞ্চ আয়োজিত আলোচনা সভায় এ হট্টগোলের সৃষ্টি হয়। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন রেলমন্ত্রী।
এতে অংশ নেওয়া কয়েকজন বাংলানিউজকে জানান, সভা চলাকালে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের সভাপতি মেহেদী হাসানের নেতৃত্বে সংগঠনের নেতাকর্মীরা এসে বকুলকে শিশু-কিশোর মঞ্চ থেকে বহিষ্কারের দাবি তোলেন। ঘটনাস্থলে মেহেদী হাসান দাবি করেন, ‘এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত মুক্তিযোদ্ধা রেলমন্ত্রীকে বিষয়টি জানানোর তাগিদে আমরা এখানে উপস্থিত হয়েছি। একজন জামায়াত-শিবির কর্মী কিভাবে একটি আওয়ামী লীগপন্থি সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হতে পারে? সে মোহাম্মদপুর থানা শিবির কমিটির পদে আছে। এছাড়া শিক্ষা জীবনে শিবিরের সঙ্গে এমনকি এখনও সক্রিয়ভাবে জড়িত রয়েছে। ’
এমন অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধারা কিংবা তাদের সন্তানরা কিভাবে অংশগ্রহণ করেন, সে বিষয়েও প্রশ্ন তোলেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের নেতারা।
মেহেদী ও তার অনুসারীদের এই দাবির প্রেক্ষিতে সভাস্থলে বেশ কিছুক্ষণ বাকবিতণ্ডা চলে। পরে অনুষ্ঠানে উপস্থিত অতিথিদের অনুরোধে তারা মঞ্চ ত্যাগ করেন।
এ বিষয়ে বকুল বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমাদের বাড়ি চুয়াডাঙ্গায়। সেখানে মেহেদী আওয়ামী লীগের কমিটিতে কোনো পদ পায়নি আর আমি পেয়েছি। সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শত্রুতাবশত এ অনুষ্ঠান পণ্ড করতে এসেছিলো। কিন্তু সে নিজেদের মধ্যে কোন্দল করলো। আমি আওয়ামী লীগের রাজনীতি করছি শুরু থেকেই। এটা মিথ্যা অপবাদ। আমার রাজনৈতিক পরিচয় কোনো গোপন পরিচয় নয়। তা আমার নেতারাও জানেন। ’
শিশু-কিশোর মঞ্চের সভাপতি মো. এমরান চৌধুরীও তার বক্তব্যে বকুলের পক্ষে সাফাই গেয়ে বলেন, ‘আমরা বকুলকে অনেক আগে থেকেই চিনি। সে একজন সক্রিয় আওয়ামী লীগ কর্মী। এ অভিযোগ পুরোপুরি মিথ্যা। ব্যক্তিগত আক্রোশের কারণেই এমন ঘটনা ঘটেছে। ’
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে রেলমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির জনককে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধি দিয়েছেন দেশের আপামর জনগণ। কিন্তু বিএনপি তা শিকার করে না। ৭ই মার্চের ভাষণ বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে প্রচার করতে দেয়নি। কিন্তু এখন, বিশ্ব বঙ্গবন্ধুর এই ভাষণকে স্বীকৃতি দিয়েছে। তাই আজকে বলতে হয়, মেধা থাকলে কেউ কাউকে আটকে রাখতে পারে না। ’
তিনি আরও বলেন, ‘তৎকালীন সময়ে দেশের স্বাধীনতার পক্ষে, আওয়ামী লীগের পক্ষে এবং বঙ্গবন্ধুর পক্ষে দেশের শতকরা ৯৮ ভাগ মানুষ ছিল। মাত্র ২ শতাংশ মানুষ স্বাধীনতার বিপক্ষে ছিলো। যার মধ্যে ওই গোলাম আযম, মতিউর রহমান নিজামী, সাকা (সালাউদ্দিন কাদের) চৌধুরী গংরা স্বাধীনতার বিপক্ষে ছিল। বিশ্বের মানুষ এখন বাংলাদেশকে সম্মান করে। আর আমাদের ব্যাপক উন্নয়নের জন্যই তা সম্ভব হয়েছে। ’
মো. এমরান চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম অহিদুজ্জামান, অ্যাডভোকেট আবু সাঈদ সাগর, অধ্যাপক ড. অসীম সরকার, মো. খালেকুজ্জামান, মোহাম্মদ আলী চৌধুরী মানিক, মো. আবু জাহিদ বাবলু লস্কর প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৮ ঘণ্টা, মার্চ ১৮, ২০১৮
এমএএম/এইচএ/