খালেদা জিয়া ছাড়া জাতীয় নির্বাচনে না যাওয়ার শর্ত দিয়ে বিএনপি নির্বাচন বর্জন করলেও সাংবিধানিক পদ্ধতি অনুসরণ করে যথাসময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে দৃঢ় অবস্থানে রয়েছে ক্ষমতাসীন দল।
আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নির্বাচনের আগে খালেদা জিয়ার মুক্তি ত্বরান্বিত হওয়া, না হওয়ার বিষয়টি আইনি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েই অগ্রসর হবে।
আগামী ডিসেম্বরে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেবে কি নেবে না তা নিয়ে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ও সরকারের কোনো মাথা ব্যাথা নেই। সংবিধানিক পদ্ধতি অনুসরণ করেই নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে ক্ষমতাসীন এ দলটি। খালেদা জিয়ার মুক্তি না হলে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে বিএনপি নির্বাচনে যাবে কি না সেটা ওই দলটির নিজস্ব সিদ্ধান্তের বিষয় বলে আওয়ামী লীগের ওই নীতিনির্ধারকরা মনে করেন। খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ বিএনপির যেসব শর্ত রয়েছে সে অবস্থানে অনড় থেকে দলটি নির্বাচনে অংশ না নিলেও নির্বাচন যথাসময়ে এবং যথা নিয়মে অনুষ্ঠিত হবে বলেও নেতারা জানান।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় গত ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে ৫ বছরের সাজা দেন আদালত। ওই দিনই তাকে কারাগারে নেওয়া হয়। গত ১২ মার্চ খালেদা জিয়াকে হাইকোর্ট ৪ মাসের জামিন দেন। তবে হাইকোর্টের দেওয়া ওই জামিন আগামী ৮ মে পর্যন্ত স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগ।
সরকার ও আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকদের মতে, দুর্নীতির দায়ে খালেদা জিয়ার সাজা হয়েছে। তাকে মুক্ত হতে হলে আইনি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে আগাতে হবে। আইনি প্রক্রিয়ায় মুক্তি না হলে তাকে সাজা ভোগ করেই বের হতে হবে। বিএনপিকে নির্বাচনে আনতে বা নির্বাচনে আসা নিশ্চিত করতে খালেদা জিয়ার জামিনের মুক্তি ত্বরান্বিত করার ক্ষেত্রে কোনো ধরনের প্রদক্ষেপ বা সহযোগিতা সরকার করবে না। বিষয়টি পুরোপুরি আইনি প্রক্রিয়ার ওপরই নির্ভর করবে বলে সরকার ও আওয়ামী লীগের ওই নীতিনির্ধারকরা মন্তব্য করেন।
খালেদা জিয়ার মুক্তির প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, এটি আইন-আদালতের বিষয়। এ ব্যাপারে সরকারের কোনো বক্তব্য নেই। যে মামলায় খালেদা জিয়ার সাজা হয়েছে সেটি শুনানির সময় তিনি ১৪৩ বার সময় নিয়েছেন। তখনও সরকার কোনো হস্তক্ষেপ করেনি। কোনো দলের আসা না আসার ওপর নির্বাচন নির্ভর করবে না।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আব্দুল মতিন খসরু বাংলানিউজকে বলেন, খালেদা জিয়ার জামিন বা কারামুক্তি আদালতের ওপর নির্ভর করবে। এটা আমাদের কোনো বিষয় না। তবে আমি মনে করি বিএনপি আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। এটা তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর আরেক সদস্য সাবেক মন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বাংলানিউজকে বলেন, নির্বাচনের আগে খালেদা জিয়ার মুক্তি হবে কি না জানি না। মুক্তি দেবেন আদালত, কি হবে সেটা জানি না। তবে আমরা আশা করি বিএনপি নির্বাচনে আসবে। খালেদা জিয়া জেলে থাকলেও আসবে, বাইরে থাকলেও আসবে। আর নির্বাচনে অংশ না নিলে এমনিতেই বিএনপি জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে আরও খারাপ অবস্থা হবে, মুসলিম লীগের পরিণতি হবে।
বাংলাদেশ সময়: ০০২৫ ঘণ্টা, মার্চ ২৮, ২০১৮
এসকে/এমজেএফ