হাইকোর্টের দেওয়া জামিনের বিরুদ্ধে দুদকের আপিল শুনানির সময় আদালতে এমন তথ্য তুলে ধরেছেন দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।
প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চে মঙ্গলবার এ শুনানি শুরু হয়।
শুনানিতে খুরশীদ আলম খান বলেন, এ মামলায় হয়তো সবার ৫ বছর কিংবা ১০ বছর সাজা হলে কোনো কথা ছিল না। কিন্তু সামাজিক অবস্থা বিবেচনা করে মূল আসামিকে ৫ বছরের সাজা দেওয়া হয়েছে। বাকীদের দেওয়া হয়েছে ১০ বছর। তাহলে বাকীরা কি দোষ করেছেন? এ কারণে দুদক সংক্ষুব্ধ হয়ে খালেদা জিয়ার সাজা বাড়াতে রিভিশন দায়ের করেছে। আদালত একটা রুলও দিয়েছেন। কেন তার সাজা বাড়ানো হবে এ মর্মে।
তিনি বলেন, তার (খালেদা) সাজা হয়েছে ৫ বছরের। তিনি আজ পর্যন্ত সাজার আগে পরে মোট কারাবাসে রয়েছেন ৪ মাস ২২ দিন। তিনি যদি দুই বা আড়াই বছর সাজা খেটে ফেলতেন তাহলে তার জামিনের প্রশ্ন উঠতো। লঘু দণ্ড ও বয়স জামিনের জন্য যুক্তি হতে পারে না।
শুনানি শেষে খুরশীদ আলম খান সাংবাদিকদের বলেন, মামলার মেরিট বিবেচনা না করে হাইকোর্ট জামিন দিয়েছেন। যেটা সঠিক হয়নি।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি বকশীবাজারে কারা অধিদফতরের প্যারেড গ্রাউন্ডে স্থাপিত ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক ড. মো. আখতারুজ্জামান মামলাটিতে খালেদা জিয়ার ৫ বছর কারাদণ্ড দেন। একই সঙ্গে খালেদার ছেলে ও বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ অপর পাঁচ আসামিকে ১০ বছর করে দণ্ড দেওয়া হয়। সেই থেকে কারাবন্দি খালেদা জিয়া।
রায় ঘোষণার ১১দিন পর ১৯ ফেব্রুয়ারি বিকেলে রায়ের সার্টিফায়েড কপি বা অনুলিপি হাতে পান খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা। এরপর হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় ২০ ফেব্রুয়ারি এ আবেদন দায়ের করেন।
গত ১২ মার্চ খালেদা জিয়াকে চার মাসের জামিন দেন হাইকোর্ট। হাইকোর্টের দেওয়া চার মাসের জামিন স্থগিত চেয়ে পরদিন ১৩ মার্চ আপিল বিভাগে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ ও দুদক।
পরে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত এ দুই আবেদনের শুনানির জন্য ১৪ মার্চ দিন ধার্য করেন। এরপর ১৪ মার্চ আপিল বিভাগ রাষ্ট্রপক্ষ ও দুদককে জামিনের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে) দায়ের করতে বলে চার মাসের জামিন ১৮ মার্চ পর্যন্ত স্থগিত করেন। এ আদেশ অনুসারে পরের দিন ১৫ মার্চ রাষ্ট্রপক্ষ ও দুদক লিভ টু আপিল দায়ের করেন।
এ লিভ টু আপিলের ওপর শুনানি হয় ১৮ মার্চ। শুনানি শেষে আবেদনের ওপর আদেশের জন্য ১৯ মার্চ সোমবার দিন ধার্য করেন আপিল বিভাগ। পরে ১৯ মার্চ আদালত লিভ টু আপিল মঞ্জুর করেন। একইসঙ্গে আপিল শুনানির জন্য ৮ মে দিন ধার্য করেন। মঙ্গলবার আপিলের ওপর দুদক ছাড়াও রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম শুনানি করেছেন। এরপর খালেদা জিয়ার পক্ষে এ জে মোহাম্মদ আলী শুনানি করেছেন। পরবর্তী শুনানির জন্য বুধবার দিন ঠিক করেছেন আদালত।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৫ ঘণ্টা, মে ০৮, ২০১৮
ইএস/এসএইচ