ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

‘ভোটার আকর্ষণের বাজেট’ বলছে বিএনপি 

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২২ ঘণ্টা, জুন ৭, ২০১৮
‘ভোটার আকর্ষণের বাজেট’ বলছে বিএনপি  অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিচ্ছেন বিএনপি নেতা ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা:  প্রস্তাবিত ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেট প্রত্যাখ্যান করে বিএনপি নেতারা বলেছেন, এ বাজেট জনগণের স্বার্থে নয়। এটা ঋণ-নির্ভর ও নির্বাচনে আপোসকামী বাজেট।   

বৃহস্পতিবার (৭ জুন) দুপুরে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত জাতীয় সংসদে বাজেট পেশের পর ঢাকায় পৃথক অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ এ কথা বলেন। তবে বিএনপির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি।

 

পল্টনের মুক্তি ভবনে ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক কল্যাণ পার্টি আয়োজিত এক ইফতার মাহফিলে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন,  এই বাজেট জনগণের স্বার্থের বাজেট নয়। সরকার ঋণ-নির্ভর একটি বাজেট দিয়েছে। এতে জনগণের উপরে ঋণের বোঝা বেড়ে যাবে। আমরা মনে করি, এই বাজেট জনগণের কোনো উপকারে আসবে না। আমরা এই বাজেট প্রত্যাখ্যান করছি।
 
তিনি বলেন, এতো বড় ঘাটতি একটা বিশাল বাজেট দেওয়া হয়েছে, শুধু জনগণের কাছ থেকে প্রতারণা করে ভোট আকর্ষণ করার জন্য। এটি নির্বাচনী বাজেট, ভোট আকর্ষণের বাজেট, জনগণের স্বার্থের বাজেট নয়।
 
প্রস্তাবিত বাজেট বাস্তবায়নে সরকারের সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, এই বাজেট বাস্তবায়ন করার জন্য সরকারের আর্থিক সক্ষমতা নাই, আমাদের প্রশাসনিক দক্ষতাও নাই। আমরা মনে করি এটা কোনো অবস্থাতেই বাস্তবায়নযোগ্য নয়। এটা লোক দেখানো বাজেট, জনগণকে প্রতারিত করার বাজেট।
 
প্রস্তাবিত বাজেটকে ‘ঋণ-নির্ভর’ উল্লেখ করে তিনি বলেন,  এ বাজেটে জনগণের উপর ঋণের বোঝা বেড়ে যাবে এবং দেশে অভ্যন্তরীণ বিনিয়োগ ও ব্যবসা-বাণিজ্য কমে যাবে।
 
‘সরকার প্রস্তাবিত বাজেটে রাজস্ব আদায়ের যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে তা অর্জন করা সম্ভব হবে না। রাজস্ব ঘাটতি পূরণের জন্য দায়িত্ব পড়বে সাধারণ মানুষের উপরে, প্রত্যেকের পকেট থেকে এই ঘাটতি পূরণ করা হবে। ’
 
ড. খন্দকার মোশাররফ বলেন, আমি হিসাব দিতে চাই, বেশ কিছু পণ্যের উপরে স্থানীয় পর্যায়ে আমদানি শুল্ক, সম্পূরক শুল্ক, রেগুলেটরি ডিউটি, ভ্যাট বাড়ানো হয়েছে। তৈরি পোশাক শিল্পে ভ্যাট বাড়ানো হয়েছে, অনেক পণ্যের ট্যারিফ ভ্যালু বৃদ্ধি করা হয়েছে।  

‘আমরা যে ১১০০ ধরনের পণ্য আমদানি করি তার উপরে ভ্যাট বৃদ্ধি করা হয়েছে। ই-কমার্সকে ভ্যাটের অন্তুর্ভুক্ত করা হয়েছে। অন্যদিকে করপোরেট ট্যাক্স কমানো হয়েছে। এর ফলে ধনীকে আরো ধনী করা হবে এবং দরিদ্র আরো দরিদ্র হবে। ’
 
আর্থিক খাতের দুরবস্থা থেকে উত্তরণে প্রস্তাবিত বাজেটে কোনো ‘দিক নির্দেশনা’ নেই বলেও মন্তব্য করেন বিএনপির এই নেতা।  
 
কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিমের সভাপতিত্বে মহাসচিব এম এম আমিনুর রহমানের পরিচালনায় ইফতারে ২০ দলীয় জোট ও বিএনপির সিনিয়র নেতারা অংশ নেন।
 
এর আগে বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে ‘অর্নব’ সংগঠনের উদ্যোগে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন,  প্রস্তাবিত বাজেট বিশাল একটি বেলুন, নীল রঙের বেলুন। কিন্তু এর ভেতরে কিছু নাই, ফাঁকা। এটি একটি গতানুগতিক বাজেট।

তিনি বলেন,  ব্যাংকিং খাত, পুঁজিবাজার, সামাজিক বিভিন্ন খাতে যে নৈরাজ্য চলছে তা নিরসনে প্রস্তাবিত বাজেটে কোনো দিকনির্দেশনা নেই। এটি একটি ফাঁকা বাজেট।  বাজেটের যে আকার ও বিশালতা দেখানো হয়েছে এর পেছনে একটা দুরভিসন্ধি আছে। সত্যিকার অর্থে এই বাজেট নিম্ন আয়ের মানুষ, হত দরিদ্র, খেটে খাওয়া মানুষের উপকারে আসবে না।

বাংলাদেশ সময়: ২১১৪ ঘণ্টা, জুন ০৭, ২০১৮
এমএইচ/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।