মামলার বাদী দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী ও আসামিপক্ষের আইনজীবীদের বক্তব্য শুনে বৃহস্পতিবার এ দিন ধার্য করেন আদালত। পুরান ঢাকার নাজিম উদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতর অবস্থিত ৫ম বিশেষ জজ আদালতে এ মামলার বিচার কাজ চলছে।
মামলার যুক্তিতর্ক শুনানির জন্য দিন ধার্য ছিল গত বুধবার (১২ সেপ্টেম্বর)। কিন্তু খালেদা জিয়াকে আদালতে হাজির করতে পারেনি কারা কর্তৃপক্ষ। তার পরিবর্তে খালেদার কাস্টডি আদালতে পাঠানো হয়। সেখানে উল্লেখ করা হয় খালেদা জিয়া আদালতে হাজির হতে ‘অনিচ্ছুক’। বৃহস্পতিবারও এই কাস্টডি পাঠানো হয় আদালতে।
এসময় আসামিপক্ষে আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া, মাসুদ আহমেদ তালুকদার ও আমিনুল ইসলাম আদালতকে বলেন, খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে বিচার করা যাবে না। তিনি যেহেতু অসুস্থ, আদালতে না আসা পর্যন্ত বিচারকাজ চালানো যাবে না।
দুর্নীতি দমন কমিশনের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোশাররফ হোসেন কাজল বলেন, কোনো আসামি যদি আদালতে আসতে অনিচ্ছুক হন, তাহলে আদালত তাকে ছাড়াই মামলার কার্যক্রম চালাতে পারবেন।
তারপর আসামির আইনজীবীরাও যদি বিচার কাজে অংশ না নেন, তাহলে পরবর্তী তারিখে রায়ের দিন ধার্য করার জন্য আদালতের কাছে আবেদন করেন কাজল।
আদালত উভয়পক্ষকে শুনে আগামী ২০ সেপ্টেম্বর এ বিষয়ে আদেশের জন্য দিন ধার্য করেন।
এর আগে, বেলা ১১টা ৪৩ মিনিটে আদালতের কার্যক্রম শুরু হয়। শেষ হয় ১টা ৫ মিনিটে।
মামলার যুক্তিতর্ক শুনানি উপলক্ষে গোটা আদালত এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়। পুরনো কারাগারের সামনের সড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। বন্ধ রাখা হয় আশপাশের দোকানপাটও। মোতায়েন করা হয় বিপুল সংখ্যক আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য। প্রস্তুত রাখা হয় ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি।
গত ৪ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিভাগ জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার বিচার সম্পন্ন করতে পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে অস্থায়ী আদালত স্থাপন করে গেজেট প্রকাশ করে।
আইন মন্ত্রণালয়ের ওই গেজেটে বলা হয়, নিরাপত্তাজনিত কারণে সরকারি আলিয়া মাদ্রাসার মাঠে স্থাপিত অস্থায়ী আদালত থেকে নাজিমুদ্দিন রোডে অবস্থিত পুরাতন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের প্রশাসনিক ভবনের কক্ষ নম্বর-৭ কে অস্থায়ী আদালত ঘোষণা করা হয়েছে। এখন থেকে সেখানেই খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার বিচারকাজ সম্পন্ন হবে।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়া দণ্ডিত হওয়ার পর থেকে পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি আছেন। এরপর থেকে তারিখ পড়লেও অসুস্থ থাকায় চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় আদালতে হাজির হতে পারেননি তিনি।
চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় মোট আসামি চারজন। খালেদা ছাড়া অভিযুক্ত অপর তিন আসামি হলেন- খালেদা জিয়ার তৎকালীন রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, হারিছ চৌধুরীর তৎকালীন একান্ত সচিব বর্তমানে বিআইডব্লিউটিএ-এর নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান।
এ মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন মোট ৩২ জন সাক্ষী। ২০১০ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলা করা হয়। এ ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগে এ মামলা করে দুদক।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৩, ২০১৮
এমআই/এইচএ/