শুক্রবার(২৮ সেপ্টেম্বর) সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সংগঠনটির আয়োজিত মহাসমাবেশ থেকে এ দাবি জানানো হয়। সারা দেশ থেকে আসা হাজার হাজার মানুষ অংশ নেয় মহাসমাবেশে।
মহাসমাবেশের বলা হয়, আজকের এ মহাসমাবেশ থেকে আমাদের দাবি আগামী সংসদ নির্বাচনের আগেই সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় ও জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন গঠন, সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন ও ধর্মবৈষম্য বিলোপ আইন প্রণয়নের ঘোষণা দিতে হবে।
এ ঘোষণায় আরও দাবি করা হয়, অর্পিত সম্প্রতি প্রত্যর্পণ আইনের দ্রুত বাস্তবায়ন এবং ভূমি কমিশন কার্যকর করাসহ পার্বত্য শান্তিচুক্তির যথাযথ বাস্তবায়নে অতি দ্রুত দৃশ্যমান পদক্ষেপ নিতে হবে। দেশের বিভিন্ন স্থানে বসবাসরত সমতলের আদিবাসীদের জন্যেও পৃথক ভূমি কমিশন গঠন করতে হবে।
জাতীয় সংসদ সদস্য উষাতন তালুকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মহাসমাবেশে ৫ দফা ও ৭ দফা সম্বলিত এ ঘোষণা পাঠ করেন হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত।
এ মহাসমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জাতীয় অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা সুলতানা কামাল, ঐক্য ন্যাপের সভাপতি পংকজ ভট্টাচার্য্য এবং ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির।
ঐক্য পরিষদের এই ঘোষণার সঙ্গে একমত পোষণ করে বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক আক্রমণ ও নির্যাতন বন্ধে অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান বক্তারা। সেইসঙ্গে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সবাই মিলে সাম্প্রদায়িক শক্তিকে বর্জন এবং সংখ্যালঘু আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে পরিচালিত যে কোনো বৈষম্য ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে জাতীয় ও স্থানীয়ভাবে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান। পাশাপাশি সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের সঙ্গে যুক্ত বা সংখ্যালঘু নির্যাতনের সঙ্গে যুক্ত এমন ব্যক্তিকে মনোনয়ন না দেওয়ার আহ্বান জানানো হয় রাজনৈতিক দলগুলোকে।
মহাসমাবেশে অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িকতা ফিরে এসেছে। এই সাম্প্রদায়িকতাকে আমাদের প্রতিহত করতে হবে। রাষ্ট্রের কাছে সংখ্যালঘুদের যে প্রত্যাশা, সেটা রাষ্ট্র পূরণ করতে পারছে না।
পংকজ ভট্টাচার্য বলেন, এটা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাংলাদেশ। বিনাযুদ্ধে আমরা সাম্প্রদায়িকতাবাদিদের কাছে পরাজিত হতে পারি না। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সেই দেশকে সাম্প্রদায়িক দেখতে চাই না। রামু, নাসিরনগর, সাতক্ষিরা, গোবিন্দগঞ্জসহ বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রদায়িক হামলা হয়েছে। বর্তমান সরকারের আমলে কেন রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস হবে। এটা আমরা মেনে নিতে পারি না।
শাহরিয়ার কবির বলেন, যখনই নির্বাচন আসে তখনই ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতন-আক্রমণ নেমে আসে। এই অত্যাচারীদের শাস্তি দিতে হবে। সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন করতে হবে।
মহাসমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক নিম চন্দ্র ভৌমিক, বৌদ্ধ পণ্ডিত ড. চিনারোধ ভিক্ষু, খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নির্মল রোজারিও, আদিবাসী নেতা সঞ্জিব দ্রং প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ২০০০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৮, ২০১৮
এসকে/এনএইচটি