ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

‘চোখের সামনেই বিদায় নিলেন বড় ভাই’

এম আব্দুল্লাহ আল মামুন খান, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬২৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৪, ২০১৯
‘চোখের সামনেই বিদায় নিলেন বড় ভাই’ প্লেনযাত্রার আগে সৈয়দ আশরাফের সঙ্গে তার ছোটভাই সৈয়দ শাফায়েত; পাশে পরিবারের অন্য সদস্যরা। ফাইল ফটো

ময়মনসিংহ: দীর্ঘদিন ধরে ফুসফুস ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ব্যাংককের বামরুনগ্রাদ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। খানিকটা হারিয়েছিলেন স্মৃতিশক্তিও। তবুও গোটা পরিবার-স্বজন-সহকর্মী রাজনীতিকরা বুক বেঁধেছিল আশায়। 

আবারও সুস্থ হয়েই রাজনীতিতে ফিরবেন ত্যাগী ও পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তির এই রাজনীতিক। কিন্তু মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফেরা হলো না তার।

৬৭ বছর বয়সে জীবনাবসান হলো জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফের।  

জীবনের শেষ মুহূর্তগুলোতে কেমন ছিলেন বিত্তবৈভবের রাজনীতিকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করা জাতীয় চার নেতার অন্যতম শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলামের এই জ্যেষ্ঠ পুত্র? 

বৃহস্পতিবার (০৩ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ৯ টার দিকে ব্যাংককের ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সৈয়দ আশরাফ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করার সময় তার শয্যাপাশে ছিলেন একমাত্র মেয়ে রীমা ইসলাম, ছোট ভাই মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ শাফায়েতুল ইসলাম, সৈয়দ শাফায়াতের স্ত্রী নাজমা ইসলামসহ তার দুইবোন এবং অন্য স্বজনেরা।  

শোক বিহ্বল সৈয়দ শাফায়েতুল ইসলাম বুধবার (০২ জানুয়ারি) বিকেলে ঢাকা থেকে ব্যাংককের ওই হাসপাতালে পৌঁছেন। বৃহস্পতিবার রাত সোয়া ১১টার দিকে বাংলানিউজের সঙ্গে ব্যাংককের হাসপাতাল থেকে মোবাইল ফোনে কথা বলেন তিনি।  

প্রয়াত স্ত্রী শিলা ইসলাম ও মেয়ে রিমার সঙ্গেহ সৈয়দ আশরাফ; শিলা ইসলামের অসুস্থতার সময় ছবিটি তোলাবোবা কান্নার পাষাণভারে শোকে বিহ্বল সৈয়দ শাফায়েত বলেন, মৃত্যুর আগে বড় ভাই কথা বলতে পারছিলেন না। আমি হাসপাতালে এসে তাকে এ অবস্থাতেই পেয়েছি। কোনো কথা বলতে পারেননি। আমার ভাতিজিসহ আমরা সবাই পাশে ছিলাম। আমাদের চোখের সামনেই চিরদিনের মতো চোখ বন্ধ করলেন শেষবারের মতো। আর কখনই ভাইকে পাবো না আমরা।  

পড়ুন>>সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম আর নেই

সৈয়দ আশরাফের রুহের মাগফেরাত কামনা করে দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন তার ছোট ভাই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী সার্বক্ষণিক ভাইয়ের শারীরিক অবস্থার খোঁজ খবর রেখেছেন। তার (প্রধানমন্ত্রী) প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ।

এদিকে সৈয়দ আশরাফের মৃত্যুর খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে যান ব্যাংককে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত।  

সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম কিশোরগঞ্জ-১ (সদর ও হোসেনপুর) আসন থেকে টানা পাঁচবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে তিনি বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান।
 
ওয়ান ইলেভেনে দলের কঠিন সময়ে আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দলীয় নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ রেখে শেখ হাসিনার প্রতি আনুগত্য ও বিশ্বাসের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।

পরবর্তীতে সৈয়দ আশরাফ টানা দুইবার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ২০০৮ সালের নির্বাচনে সংসদ সদস্য হয়ে তিনি স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান। আমৃত্যু জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ছিলেন আওয়ামী লীগের এই সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য।  

বাংলাদেশ সময়: ০১১৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৩, ২০১৯ 
এমএএএম/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।