ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

সরকারে জনগণের প্রতিনিধি নেই: মির্জা ফখরুল

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৪৯ ঘণ্টা, আগস্ট ৩১, ২০১৯
সরকারে জনগণের প্রতিনিধি নেই: মির্জা ফখরুল

ঢাকা: দেশে গণতন্ত্র নেই দাবি করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আজ বাংলাদেশে গণতন্ত্রহীন অবস্থা বিরাজ করছে। জনগণের প্রতিনিধি নেই। সত্যিকার অর্থে যেদিন জনগণের প্রতিনিধির সরকার গঠিত হবে সেদিন গুম ও হত্যার বিচার অবশ্যই হবে। 

শুক্রবার (৩০ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর বনানীতে নিখোঁজ বিএনপি নেতা এম ইলিয়াস আলীর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।  

মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে ইলিয়াস আলীর বাসায় এসেছি তার ছোট মেয়ে আমাদের সামনে আসেনি।

কারণ সে অত্যন্ত বিব্রতবোধ করে ও কষ্ট পায়। আমার মনে আছে ৬ বছর আগে যখন এখানে এসেছিলাম-আপনারা সবাই দেখেছেন ফুটফুটে একটা বাচ্চা মেয়ে, প্রতিদিন বাবার জন্য অপেক্ষা করতো। কিন্তু তার বাবা ফিরেনি।  

‘আমরা তাদের পাশে আছি। আমরা আশা করবো, ভবিষ্যতে এর একটা সুষ্ঠু বিচার হবে। ’

তিনি বলেন, আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সাহেবের পরামর্শে-দলের যারা গুমের শিকার হয়েছেন যথাসম্ভব তাদের বাসায় যাওয়ার চেষ্টা করছি। আমি ইলিয়াস আলীর বাসাসহ চারজনের বাসায় গিয়েছি। আমাদের অন্যান্য নেতারাও ঢাকা শহরে যারা ভুক্তভোগী রয়েছেন তাদের বাসায় যাচ্ছেন।  

‘গুমের শিকার নেতাকর্মীদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আমরা সবসময় যোগাযোগ রাখি, চেষ্টা করি তাদের পাশে দাঁড়ানোর। তাদের কষ্ট আমরা ভাগ করে নিতে পারি না। কিন্তু তাদের কষ্টটা আমরা অনুভব করি। ’

গুম হওয়া নেতা-কর্মীদের পরিবারের সদস্যদের অসহায় অবস্থার কথা তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, কিছুক্ষণ আগেও আমি দক্ষিণখানে গিয়েছিলাম নিখোঁজ ছাত্রনেতা তারিকুল ইসলাম ঝন্টুর বাসায়। তার মা বলছিলেন, আমার এই ছেলেটা অনার্সে ফার্স্ট ক্লাস পেয়েছিল। ভদ্র ছেলে হিসেবেও এলাকায় পরিচিত। সেই ছেলে নিখোঁজ হয়ে গেছে।  

‘কিছুদিন পরে ওই ছেলেটির বাবা অসুস্থ হয়ে মারা গেছেন। তাদের আরেক সন্তান দুর্ঘটনায় পা ভেঙে বাসায়, এই পরিবারটি অত্যন্ত অসহায় অবস্থায় আছে। নিখোঁজ নিজামুদ্দিন মুন্নার বাসায়ও গিয়েছিলাম। অনেক কষ্ট করে ছেলেটি বিএ পাস করে। তার বাবা এমন কোনো জায়গা নেই যে যাননি ছেলের খোঁজে। ভারতেও গেছেন, কিন্তু ছেলের কোনো খোঁজ পাননি। শেষ পর্যন্ত অসুখে ভোগে মারা গেছেন। ’

তিনি বলেন, নিখোঁজ হওয়া অনেক নেতাকর্মীর পরিবারের সদস্য এখনও অবর্ণনীয় কষ্টের মধ্যে রয়েছেন। আমরা যথাসম্ভব চেষ্টা করছি তাদের পাশে দাঁড়ানোর। আজ আন্তর্জাতিক গুম প্রতিরোধ দিবসে আমি এই মানবতাবিরোধী অপরাধের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। আমরা এর বিচার চাই।  

নিখোঁজ বিএনপি নেতা এম ইলিয়াস আলী, নিজামুদ্দিন মুন্না ও তারিকুল ইসলাম ঝন্টুর বাসা ছাড়াও রাজধানীর নাখালপাড়ায় সাজেদুল ইসলাম সুমনের বাসায়ও যান দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।  

এ সময় বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান, শহীদুল ইসলাম বাবুল, ব্যারিস্টার ফারজানা শারমিন, এসএম জাহাঙ্গীর, শায়রুল কবির খান, সাহাবুদ্দিন সাগর, আলী আকবর আলী, জুলহাস পারভেজ, মুনির হোসেন, আফাজউদ্দিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে বিকেলে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বংশালে নিখোঁজ বিএনপি নেতা মো. সোহেল, জহিরুল ইসলাম জহির, পারভেজ হোসেন ও মো. চঞ্চলের বাড়িতে যান।  

রাজধানীর সূত্রাপুরে নিখোঁজ বিএনপি নেতা খালিদ হোসেন সোহেল, সেলিম রেজা পিন্টু, সম্রাট মোল্লার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করতে যান দলের সিনিয়র নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।  

আর স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান সবুজবাগে নিখোঁজ মাহবুব হাসান সুজন ও কাজী ফরহাদ হোসেনের বাসায় গিয়ে তাদের পরিবারের খোঁজ-খবর নেন।

বাংলাদেশ সময়: ২০৪৪ ঘণ্টা, আগস্ট ৩০, ২০১৯
এমএইচ/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।