ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

বিদ্রোহী প্রার্থীদের জন্য কঠোর বার্তা আওয়ামী লীগের

শামীম খান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৫০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০২০
বিদ্রোহী প্রার্থীদের জন্য কঠোর বার্তা আওয়ামী লীগের

ঢাকা: দল মনোনীত প্রার্থীর বিরোধিতা করে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে কেউ প্রার্থী হলে তাকে আর কখনোই মনোনয়ন দেবে না আওয়ামী লীগ। বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে বিজীয় হলেও পরবর্তীতে তিনি দলীয় মনোনয়ন পাবেন না।

দলের এই কড়া বার্তা এবারের পৌরসভা নির্বাচন থেকেই কার্যকর করতে শুরু করেছে ক্ষমতাসীন দলটি।

দীর্ঘদিন ধরেই স্থানীয় সরকার নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থীদের নিয়ন্ত্রণ করতে হিমশিম খেতে হয় আওয়ামী লীগকে। আগ্রহী প্রার্থীরা দলের মনোনয়ন না পেলে কোনো কোনো জায়গায় বিদ্র্রোহী হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িয়ে যান। কোনো কোনো জায়গায় দুই, তিন, চারজনের বেশিও বিদ্রোহী প্রার্থী হতে দেখা যায়। অনেককে বিভিন্নভাবে বুঝিয়ে বাসানো হলেও সবাইকে বা সব জায়গায় সেটা সম্ভব হয় না। এর ফলে দল মনোনীত প্রার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হন। স্থানীয় নেতাকর্মীর মধ্যে বিভাজনের ফলে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বিদ্রোহী প্রার্থীর কারণে আওয়ামী লীগের প্রার্থী পরাজিত হন। এই সংকট থেকে বেরিয়ে আসতে এবারের পৌরসভা নির্বাচনে দলের বিদোহীদের জন্য কঠোর বার্তা দিয়ে মাঠে নেমেছে আওয়ামী লীগ।

আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা জানান, বিদ্রোহী প্রার্থী হলে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক বিভিন্ন ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিশেষ করে তারা কখনই দলের মনোনয়ন পাবেন না। এটা শুধু পৌরসভা নির্বাচনের ক্ষেত্রে নয়, সব স্থানীয় সরকার নির্বাচনেই এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হবে। আগামী ২৮ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিতব্য প্রথম ধাপের ২৪টি পৌরসভা নির্বাচনে দলীয় মেয়র প্রার্থী মনোনয়নের ক্ষেত্রে এই সিদ্ধান্ত অনুসরণ করা হয়েছে। এই ধাপে মনোনয়ন দেওয়ার ক্ষেত্রে অতীতে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে বিজয়ী হয়ে আসার পরও তাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি।

নেত্রকোনার মদন পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র প্রার্ধী হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছিলেন আব্দুল মান্নান তালুকদার শামীম। গত ২৮ নভেম্বর আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের সভায় তার মনোনয়ন দেওয়ার পর ৩০ নভেম্বর তাকে বাদ দিয়ে অন্য একজনকে দলীয় প্রার্থী করা হয়েছে। কারণ তিনি গত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বিপক্ষে দাঁড়িয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেন এবং মেয়র নির্বাচিত হন। গত নির্বাচনে এরকম বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ার কারণে আরও দুইজন মেয়র পদে মনোনয়ন পাওয়ার পর তাদের বাদ দিয়ে অন্য প্রার্থীকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে জানাতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, যে নির্বাচনেই হোক কড়া বার্তা হলো বিদ্রোহী হলে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এই কড়া বার্তা শুধু কথা নয়, বাস্তবায়ন শুরু হয়ে গেছে। অতীতে নৌকার বিরুদ্ধে যারা বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছিলেন এবারের পৌরসভা নির্বাচনে তারা মনোনয়ন পাচ্ছেন না। এরকম কয়েকজন মনোনয়ন পাওয়ার পর আবার তাদের বাদ দেওয়া হয়েছে। এর চেয়ে বড় শাস্তি আর কী হতে পারে? একবার নৌকার বিরুদ্ধে গেলে কোনো নির্বাচনেই তিনি আর মনোনয়ন পাবেন না, বিজয়ী হয়ে আসলেও না।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বাংলানিউজকে বলেন, বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়া মানে দলের সিদ্ধান্তকে চরমভাবে লঙ্ঘন করা, দলকে ক্ষতিগ্রস্ত করা। এর চেয়ে বড় শৃঙ্খলাভঙ্গ আর কী হতে পারে? এ জন্য দলে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যারা একবার বিদ্রোহী প্রার্থী হবেন তারা আর কোনদিন দলের মনোনয়ন পাবেন না। এ কারণে অতীতে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছিলেন এমন দুই-একজন মনোনয়ন পাওয়ার পরও বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। এটা শুধু এবার নয়, আগামীতেও কঠোরভাবে এটা অনুসরণ করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৭৫২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০২০
এসকে/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।