নোয়াখালী: নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বসুরহাট পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আবদুল কাদের মির্জা বলেন, ‘দুঃখজনক হলেও সত্য আমি যখন অপরাজনীতির বিরুদ্ধে কথা বলি, নোয়াখালীর ত্যাগী নেতাদের কথা বলি, কবিরহাটের নিরীহ কর্মীদের কথা বলি, কোম্পানীগঞ্জের অসহায় ছেলে-মেয়েদের চাকরির বিষয়ে কথা বলি, অন্যায়ের বিরুদ্ধে যখন প্রতিবাদ করি, তখন জাতীয়ভাবে বলা হয়, আমি নাকি পাগল। সেই বিচারের ভার আপনাদের দিলাম।
শনিবার (৯ জানুয়ারি) দুপুরে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাট পৌরসভার নির্বাচনী এক পথসভায় বক্তৃতা দেওয়ার সময় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই আবদুল কাদের মির্জা এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, আজকে আমি মনে করি শেখ হাসিনা অসহায়। কেন অসহায়। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আজকে আর্ন্তজাতিক ষড়যন্ত্র চলছে। দেশের মৌলবাদী অপশক্তি, সাম্প্রদায়িক শক্তি আজকে পৃথিবী থেকে শেখ হাসিনাকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য ষড়যন্ত্র করছে। শেখ হাসিনাকে দল দেখতে হয়, দেশ দেখতে হয়, আন্তর্জাতিক সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে হয়। তার কি সময় আছে, আমার এ কোম্পানীগঞ্জের এগুলো দেখার, নোয়াখালী দেখার, ফেনী দেখার। এগুলো কার দায়িত্ব?
আবদুল কাদের মির্জা বলেন, দেশের মানুষের অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে শেখ হাসিনাকে। আপনারা (মন্ত্রী-নেতারা) কি কি কাজ করেছেন? আমি সকলের কথা বলিনি। ভালো লোক মন্ত্রীদের মধ্যেও আছে। না হলে, দেশ চলে কিভাবে? দেশ নিশ্চয় চলে। আমলার ভিতর ভালো লোক আছে, সাংবাদিকদের মধ্যেও ভালো লোক আছে। কিন্তু অধিকাংশ আজ শেখ হাসিনাকে অসহযোগিতা করছেন।
তিনি বলেন, গোপালগঞ্জে যেখানে ৯৯ ভাগ আওয়ামী লীগ সেখান থেকে তিনি এমপি হয়েছেন। আগে মন্ত্রী ছিল। এখন নাই। ওনার সম্পর্কে সবাই জানে। কি কি অনিয়ম তিনি করেছেন। অনিয়ম না করলে, ওনাকে মন্ত্রী করে নাই কেন? তিনি আমাকে বলেন, আমি নাকি পাগল, উন্মাদ। আরেক নেতা বলেন, আমার দায়িত্বশীলতার অভাব আছে, ঘাটতি আছে। আপনি দায়িত্বশীল ব্যক্তি, আপনার বাড়ি কুষ্টিয়া। কুষ্টিয়াতে যে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙছে, আপনি দায়িত্বশীল লোক? দায়িত্বশীলতার কি পরিচয় আপনি দিয়েছেন। এগুলো বন্ধ করেন। কি করবেন বহিষ্কার করবেন, মেরে ফেলবেন। আমি সারা দেশের কথা বলি নাই, আপনাদের কথা বলি নাই। আমি বলেছি, নোয়াখালী, ফেনীর অপরাজনীতির কথা। আপনার কেন নিজেদের গায়ের ওপর নিচ্ছেন।
তিনি বলেন, চোরা, দুর্নীতিবাজ নেতাদের যে বিচার হয়েছে, এটা কি কেউ অতীতে করতে পেরেছে? পিন্টুর বিচার খালেদা জিয়া করতে পেরেছে? শেখ হাসিনা করেছে। মিথ্যা কথা বলছি। আমি বলেছি সাহস করে সত্য কথা বলব। বিএনপিরা মনে কষ্ট নিলে কিছু যায় আসে না। না হলে ভোট দিবেন না। পিন্টু বিচার তারা করে নাই। শেখ হাসিনা সাহসী সে পেরেছে। সে বিচার করতেছে। আমি আগে বলেছি শুধু দুর্নীতিবাজ প্রশাসন যারা অপকর্ম করেছে তাদের কথা। এখন শেখ হাসিনার কাছে আবেদন করছি আপনি দুর্নীতিবাজ রাজনীতিবিদদেরও বিচার করুন।
তিনি আরো বলেন, আমি এখানে অনিয়মের কথা বলেছি। প্রশাসনের ভণ্ডামির কথা বলেছি। নির্বাচনে অস্ত্রের ঝনঝনানি চলছে। কবিরহাটের এক বাড়িতে পৌরসভা নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র চলছে। ফেনীতে একটি বাসায় বসে আমাদের এখানে নির্বাচন বানচাল করার ষড়যন্ত্র করছে। এখানে কিছু কিছু লোকের কাছে অস্ত্র-শস্ত্র পাঠানো হয়েছে। চট্টগ্রাম থেকে কবিরহাট অস্ত্র এসেছে। আমি প্রশাসনকে জানিয়েছি। তবে, তাদের বলে লাভ নেই। তারা মাসোয়ারা খায়। ওবায়দুল কাদের সাহেব রাগ করলে কি হবে। আমি আর কতো বরদাশত করব। অস্ত্রধারীরা যাতে এখানে না আসতে পারে আপনার দেখবেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৯, ২০২০
এনটি