ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

সরকার মুক্তিযুদ্ধের ‘ভিলেন’ হিসেবে চিত্রিত হবে: রব

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫৫ ঘণ্টা, মার্চ ২, ২০২১
সরকার মুক্তিযুদ্ধের ‘ভিলেন’ হিসেবে চিত্রিত হবে: রব পতাকা উত্তোলন দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন আ স ম আব্দুর রব | ছবি: শাকিল আহমেদ

ঢাকা: জিয়াউর রহমানের বীর উত্তম খেতাব কেড়ে নেওয়ার উদ্যোগের সমালোচনা করে একাত্তরে প্রথম স্বাধীন দেশের পতাকা উত্তোলনকারী জাতীয় সামাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেছেন, এই উদ্যোগে সরকার মুক্তিযুদ্ধের ‘ভিলেন’ হিসেবে চিত্রিত হবে। জিয়াউর রহমানের খেতাব বাতিলের অপচেষ্টা থেকে সরকারকে অবশ্যই বিরত থাকতে হবে।

মঙ্গলবার (২ মার্চ) বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে বিএনপির স্বাধীনতার সুর্বণজয়ন্তী উদযাপন জাতীয় কমিটির উদ্যোগে ঐতিহাসিক পতাকা উত্তোলন দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন রব।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ একাত্তরের স্বাধীনতার সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে একেবারে দলীয় দৃষ্টিভঙ্গিতে সীমাবদ্ধ করে রাখতে চায়। এই ধরনের সংকীর্ণতা মুক্তিযুদ্ধকে অসম্মানের শামিল। সমগ্র জাতির নিরবচ্ছিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামের পরিণতিতে মুক্তিযুদ্ধ এবং অগণিত মানুষের আত্মত্যাগের মধ্য দিয়েই আমরা লাভ করেছি আমাদের স্বাধীনতা।

সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি প্রসঙ্গে রব বলেন, বাঁচতে হলে লড়তে হবে, লড়াই করে জিততে হবে। এই লড়াই বাঁচার লড়াই, এই লড়াইয়ে জিততেই হবে। বাঁশের লাঠির পাল্টা উত্তর দিতে হবে। সেই ভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে।

সরকার স্বাধীনতার ইতিহাস বিকৃত করছে উল্লেখ করে সভাপতির বক্তব্যে জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, সরকার মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে বিকৃত করছে। আমরা সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের উদ্দেশ্যে জনগণের কাছে, নতুন প্রজন্মের কাছে স্বাধীনতার প্রকৃত ইতিহাস তুলে ধরব। সেইজন্য আমরা ৩রা মার্চ পালন করছি। ইতোমধ্যে কোনো দল সেটা করেনি। যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলে তারাও কিন্তু এই দিবসটি স্মরণ করতে চায় না। কেন চায় না? কারণ গত একদশক ধরে তারা বিকৃত ইতিহাস তুলে ধরছে। কেননা যারা গায়ের জোরে ক্ষমতায় আছে, তারা স্বৈরাচার-ফ্যাসিস্ট ছিল এবং নতুন পদবি অর্জন করেছে আন্তর্জাতিকভাবে—মাফিয়াতন্ত্র। এই যে তারা মাফিয়াতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে, তারা এই দেশের মানুষকে নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানাতে চায় না। যদি প্রকৃত ইতিহাস দেওয়া হয় তাহলে আওয়ামী লীগের অবস্থান অনেক পেছনে পড়ে যায়।

নাগরিক ঐক্যের আহবায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ছাত্রদল সেদিন জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে যেভাবে প্রতিরোধ করেছে সেজন্য তাদের ধন্যবাদ জানাই। আমি বলতে চাই, এই প্রতিরোধের দেয়াল আরো শক্ত করতে হবে। নিজেরা নিজেদের মনে সিদ্ধান্ত নেন। লড়াই এখন কেবল খণ্ড খণ্ড নয়, ছোট-ছোট, খণ্ড খণ্ড লড়াই করতে করতে, সেই লড়াইকে এক জায়গায় নিয়ে একবার সবাইকে রাস্তায় নেমে পড়তে হবে—তোকে চাই না।

ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর বলেন, কারাগারে একজন লেখককে হত্যা করা হয়েছে। তাকে বিতর্কিত একটি কালো আইনে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছিল। এই আইনটি স্বাধীন মতপ্রকাশের অন্তরায়। এই আইনের অধীনে এ পর্যন্ত এক হাজার মামলা হয়েছে। তার একটিরও নিষ্পত্তি হয়নি। ম্যাক্সিমাম কেইসগুলো আপনি দেখবেন যে, মোটামুটি দেরিতে হলেও জামিনে বেরিয়ে এসেছে। তার মানে এটা স্পষ্ট যে, যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছিলো তাদের অভিযোগ ভিত্তিহীন। একই আইনে লেখক মুশতাক আহমেদ গ্রেপ্তার করা হয়েছিলো। অনেকে বিহাইন্ড দ্য সিন জানেন না।

সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব আব্দুস সালামের সঞ্চালনায় আলোচনাসভায় আরও বক্তব্য দেন, জেএসডি সভাপতি আ স ম আব্দুর রব, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান, নাগরিক ঐক্যর আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান, এসএম ফজলুল হক, যুগ্ম-মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, ডাকসুর সাবেক ভিবি নুরুল হক নুর, বিএনপি নেত্রী শিরিন সুলতানা প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ২০৫১ ঘণ্টা, মার্চ ০২, ২০২১
এমএইচ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।