ঢাকা: জাতীয় পরিচয়পত্র সংক্রান্ত কার্যাবলীর কর্তৃত্ব নির্বাচন কমিশন থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে হস্তান্তরের প্রক্রিয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিএনপি।
সোমবার (১৪ জুন) দুপুরে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে দলের স্থায়ী কমিটির ভার্চ্যুয়াল বৈঠকের এ সিদ্ধান্ত জানান মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মির্জা ফখরুল বলেন, শনিবার (১২ জুন) বিকেলে দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
তিনি বলেন, জাতীয় পরিচয়পত্র সংক্রান্ত কার্যাবলীর কর্তৃত্ব নির্বাচন কমিশন থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার বিষয়টি সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। জাতীয় পরিচয়পত্র সংক্রান্ত কার্যাবলী ইতিপূর্বে নির্বাচন কমিশন কর্তৃত্ব পরিচালিত হয়েছে। নির্বাচন কমিশনে যারা কমিশনের দায়িত্ব পালন করছেন তারা নির্বাচনের দায়িত্ব পালন করতে ব্যর্থ হলেও কমিশন সংবিধান অনুযায়ী একটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠান। স্বাভাবিক নিয়ম অনুযায়ী সম্পূর্ণ নিরপেক্ষতার সঙ্গেই দায়িত্ব পালন করার কথা। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সরকারের অধীন মন্ত্রণালয়। বিগত এক যুগের অভিজ্ঞতায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই অনির্বাচিত সরকারের ক্রীড়নক হিসাবে কাজ করছে এবং নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ধ্বংস করেছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ব্যবহার করে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র সংক্রান্ত কর্তৃত্ব হস্তান্তর করা হলে তা স্বাধীন নিরপেক্ষ অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের নূন্যতম সম্ভাবনাটুকুও বিনষ্ট করবে।
তিনি বলেন, বিএনপি মনে করে এই ধরনের সিদ্ধান্তহীন রাজনৈতিক উদ্দেশ্য বাস্তবায়িত হলে তা ভবিষ্যতে গণতন্ত্রের নূন্যতম পরিসরকেও ধ্বংস করবে এবং শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়াকে চিরতরে ধ্বংস করবে। বিএনপি অবিলম্বে এই ধরনের কার্যকলাপ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানাচ্ছে। অন্যথায় এর নেতিবাচক প্রভাবের জন্য সরকারকেই সব দায় দায়িত্ব নিতে হবে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, সম্প্রতি দেশের সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে ভারতীয় ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট করোনা ভাইরাস ভীতিকরভাবে সংক্রমিত হচ্ছে। ইতোমধ্যে প্রায় ১২টি জেলায় এর সংক্রমণের হার শতকরা ৫০ ভাগ ছড়িয়ে গেছে। মৃত্যুর হারও বেড়েছে। ক্রমশ এই ভাইরাস সারাদেশে তৃতীয় ঢেউ সৃষ্টি করছে। জেলাগুলোতে পর্যাপ্ত টেষ্ট এবং চিকিৎসার ব্যবস্থা না থাকায় পরিস্থিতি আরও জটিল আকার ধারণ করছে। সেসঙ্গে জেলা হাসপাতালগুলোতে প্রয়োজনীয় বেড, অক্সিজেন ও আইসিইউ না থাকায় মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে চলেছে। বিএনপি ইতিপূর্বেই এই বিষয়ে সতর্ক করেছিল কিন্তু সরকার কর্ণপাত করেনি। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কোভিড-১৯ করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের শুরু থেকে এই বিষয়গুলো নিয়ে সতর্ক করেছে। কিন্তু সরকারের দুর্নীতি, অযোগ্যতা, উদাসীনতা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে নিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, সরকার ভ্যাকসিন সংগ্রহ, বিতরণের বিষয়ে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করছে। চুক্তি করা ভ্যাকসিন সংগ্রহ করতে না পারা, বিকল্প উৎসের সন্ধান না করা, দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের জন্য ভ্যাকসিন উৎপাদনের কোন উদ্যোগ নিতে না পারা তাদের দুর্নীতি ও অযোগ্যতার জন্য সার্বিক ব্যর্থতায় পরিণত হয়েছে এবং সমগ্র জাতিকে আজ বিপন্ন করেছে। বারবার বলা সত্ত্বেও তারা জনগণের সামনে কোনো স্পষ্ট রোড ম্যাপ দিতে পারেনি। অবিলম্বে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ এবং মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরে দুর্নীতিতে যুক্ত কর্মকর্তাদের অপসারণ ও তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১০ ঘণ্টা, জুন ১৪, ২০২১
এমএইচ/এমআরএ