ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

‘এমডি মার্কিন মুলুকে বসে রিমোট কন্ট্রোলে ওয়াসা চালান’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪৫ ঘণ্টা, জুন ২৪, ২০২১
‘এমডি মার্কিন মুলুকে বসে রিমোট কন্ট্রোলে ওয়াসা চালান’ সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য দিচ্ছেন হাবিব উন নবী খান সোহেল।

ঢাকা: বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির যুগ্ম-মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি হাবিব উন নবী খান সোহেল বলেছেন, ওয়াসার এমডি দেশে নেই। তিনি মার্কিন মুলুকে বসে রিমোট কন্ট্রোলে ওয়াসা চালান।

আর সেখানে বসেই পানির দাম বাড়িয়েছেন।  

বৃহস্পতিবার (২৪ জুন) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কারওয়ান বাজারে ওয়াসা কার্যালয়ে গিয়ে পানির মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে স্মারকলিপি দেওয়ার আগে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।

সোহেল বলেন, বর্তমান করোনা মহামারিতে বহু মানুষ জীবন হারিয়েছেন। এই সময় পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের সরকার সেদেশের জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছে। বহু দেশের সরকার ইউটিলিটি বিল মওকুফ করেছে, কোনো সরকার অর্ধেক করেছে, কোনো দেশের সরকার সাবসিডি দিয়েছে আবার কোনো সরকার তিন/চার বছর সময় দিয়েছেন যাতে ধীরে ধীরে বিল পরিশোধ করতে পারেন। কিন্তু আমাদের মাতৃভূমির যে অবৈধ সরকার ক্ষমতায় আছে সেই সরকারকে আমরা দেখিনি করোনা মহামারির মধ্যে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে। প্রধানমন্ত্রী দিনের পর দিন, মাসের পর মাস গণভবনের মধ্যে নিজেকে সীমাবদ্ধ রেখেছেন। কোনো হাসপাতালে গিয়ে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে দেখিনি।  


অন্যায়ভাবে পানির বিল বাড়ানো হয়েছে দাবি করে সোহেল বলেন, গত ১৩ বছরে ১৪ বার ওয়াসার পানির মূল্য বাড়ানো হয়েছে। এক হাজার লিটার পানির দাম ছিল ছয় টাকা চার পয়সা, সর্বশেষ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এক হাজার লিটার পানির দাম হবে ১৫ টাকা ১৮ পয়সা। আমরা এই সিদ্ধান্তের তীব্র ভাষায় প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

তিনি বলেন, ওয়াসার পানির মান সম্পর্কে আপনারা সবাই জানেন। পানির আরেক নাম জীবন। আর ওয়াসার পানির আরেক নাম মরণ। যিনি ক্ষমতায় বসে আছেন তাকে চ্যালেঞ্জ করে বললাম, আপনিতো বিদেশের পানি খান। একদিনের জন্য, একবার হলেও এক গ্লাস ওয়াসার পানি যদি আপনি খান, খাওয়ার এক ঘণ্টার মধ্যে আপনি যদি চিকিৎসকের স্মরণাপন্ন না হন, তাহলে রাজনীতি ছেড়ে দেব।

বিএনপির এই নেতা বলেন, ওয়াসা চলে এখানকার একজন এমডি আছেন তার কথা মতো। দিন যায় রাত আসে, সব কিছু পরিবর্তন হয় কিন্তু এই ওয়াসার এমডি কবে থেকে আছেন তার কোনো পরিবর্তন হয় না। বাংলাদেশের মানুষ গড়ার কারিগর একজন প্রাইমারি শিক্ষকের বেতন ২০ হাজার টাকা। আর এই মহামারিতে ময়লা পানির সরবরাহের যিনি কারিগর তার (ওয়াসা এমডি) বেতন ৬ লাখ ২০ হাজার টাকা।

সোহেল বলেন, এই মহামারির মধ্যে জনগণের পাশে না দাঁড়িয়ে এই স্পর্শকাতর প্রতিষ্ঠানের এমডি বাংলাদেশে নেই। উনি মার্কিন মুলুকে বসে রিমোট কন্ট্রোলে ওয়াসা চালাচ্ছেন। আর একের পর এক পানির দাম বাড়িয়ে যাচ্ছেন। তার যোগ্যতা তিনি প্রধানমন্ত্রীর লোক। এজন্য তাকে কিছু বলা যায় না, পরিবর্তন হয় না। তার খুঁটির জোর বেশি। বাংলাদেশের জনগণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে ওই খুঁটিকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়ার। তখন এই দুর্নীতিবাজ এমডিকে আমরা বুড়িগঙ্গার পানি খাইয়ে ছাড়বো।

তিনি বলেন, পানির মূল্যবৃদ্ধির তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং এই সেবামূলক প্রতিষ্ঠান ওয়াসাকে যারা ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে চান, অনতিবিলম্বে তাদের বিচার দাবি করছি।

সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন, মহানগর উত্তর বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি মুনসী বজলুল বাসিত আনজু, দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশার, উত্তরের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আলীম নকি, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান আনোয়ার, বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য তাবিথ আউয়াল, যুবদলের সভাপতি সাইফুল আলম নীরব, মহানগর দক্ষিণ বিএনপির যুগ্ম-সম্পাদক শেখ রবিউল আলম রবি প্রমুখ।

এ সময় দলীয় নেতাকর্মীরা পানির মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে বিভিন্ন স্লোগান দেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৪২ ঘণ্টা, জুন ২৪, ২০২১
এমএইচ/এমআরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।