ঢাকা: তরুণদের সামনে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আর সময় নেই। এখন জেগে উঠতে হবে এবং দেশকে বাঁচাতে হবে, দেশের মানুষকে বাঁচাতে হবে।
শুক্রবার (২ জুলাই) বিকেলে এক ভার্চ্যুয়াল আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
১৯৭১ সালের ২ জুলাই পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী খালেদা জিয়াকে গ্রেফতার করেছিল। সেই দিনের স্মরণে বিএনপি গঠিত স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন জাতীয় কমিটি এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।
মির্জা ফখরুল বলেন, ১৯৭১ সালে আমরা যে স্বপ্ন দেখেছিলাম সেই স্বপ্ন যদি পূরণ করতে চাই, শহীদ জিয়া ও খালেদা জিয়ার অসমাপ্ত কাজ যদি বাস্তবে রূপ দিতে চাই, বাংলাদেশের মানুষের অধিকার ফিরিয়ে দিতে চাই, তাহলে আন্দোলন ছাড়া কোনো বিকল্প নেই।
তিনি বলেন, এই আন্দোলন সংগ্রাম কোনো ব্যক্তির জন্য নয়, কোনো দলের জন্য নয়। এই সংগ্রাম হচ্ছে এই দেশের জন্য, এই জাতির জন্যে। আজকে জাতির যে অর্জন সবকিছু লুট করে নেওয়া হয়েছে, তাকে ফিরিয়ে আনতে হবে। সেই দায়িত্ব বিএনপিকে পালন করতে হবে। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে পালন করতে হবে। তার নেতৃত্বে আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে সেই আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়বো। দেশনেত্রীকে মুক্ত করবো, গণতন্ত্রকে মুক্ত করবো।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ২ জুলাই পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী দেশনেত্রীকে বন্দি করা প্রমাণ করে যে, তিনি (খালেদা জিয়া) একবারে সামনের সারির মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে অন্যতম। আজকে ৫০ বছর পরে কেন এই কথাগুলো বার বার বলার চেষ্টা করছি। কারণ ৫০ বছর ধরে এই আওয়ামী লীগ বলতে চায় যে, প্রেসিডেন্ট জিয়া, খালেদা জিয়া বা এই দেশে যারা বিএনপি করে তারা কেউ স্বাধীনতার সঙ্গে যুক্ত ছিল না। সেজন্য ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যারা আমাদের নেতৃত্ব দেবে তাদের জানানো প্রয়োজন প্রকৃত সত্যটা কী?
তিনি বলেন, খালেদা জিয়া মুক্তি পেয়েছিলেন ১৬ ডিসেম্বর। অর্থাৎ ২ জুলাই থেকে ১৬ ডিসেম্বর দেশ স্বাধীন না হওয়া পর্যন্ত তিনি কারাগারে বন্দি ছিলেন। আজকে আবার তিনি কারাগারে বন্দি। আজকে সমগ্র দেশের মানুষ যখন মুক্তি চায়, অধিকার ফিরে পেতে চায়, গণতন্ত্রকে ফিরে পেতে চায়, সুস্থ স্বাধীন মানুষের মতো বাঁচতে চায়, তখন আবার সেই নেত্রীকে তারা বন্দি করে রেখেছে। কারণ তারা দমন-পীড়নের মধ্যে দিয়ে রাষ্ট্রক্ষমতাকে দখল করে তাদের ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করতে চায়।
মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে সমগ্র দেশ একটা ত্রাশের রাজত্বে পরিণত হয়েছে। একটা ফ্যাসিবাদের যাতাকলে পড়ে গেছে। অর্থনীতিকে পুরোপুরি একটা লুটেরা অর্থনীতিতে পরিণত করা হয়েছে। রাজনীতিকে ধ্বংস করে দিয়ে শুধু একদল, এক ব্যক্তির রাজনীতিকে প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা চলছে। আজকে চাটুকারিতা আর তোষামোদি ছাড়া অন্যকোনো পথ যেন মানুষের জানা নেই। আজকে জীবনের কোনো মূল্য নেই। আইনের কোনো শাসন নেই। এই আওয়ামী লীগ সংবিধানকে কেটে ছিঁড়ে মানুষের সমস্ত অধিকার কেড়ে নিয়েছে।
কোথায় আইনের শাসন প্রশ্ন তুলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজকে দেশে আইনের শাসন থাকলে দেশনেত্রী খালেদা জিয়া কারাগারে থাকেন না। কোনোভাবেই তারা প্রমাণ করতে পারে না যে দেশনেত্রী এই ধরনের একটা অপরাধের সঙ্গে জড়িত। মাত্র ২ কোটি ৩৩লাখ। এখন যে হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট হয়ে যাচ্ছে, সে সম্পর্কে তাদের কোনো চিন্তাভাবনা নেই।
বিএনপি গঠিত স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব আব্দুস সালামের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন, স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, ড. আব্দুল মঈন খান, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, দলের ভাইস চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর বীর উত্তম, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ২০১৮ ঘণ্টা, জুলাই ০২, ২০২১
এমএইচ/এমজেএফ