ঢাকা: স্বাস্থ্যমন্ত্রী নির্লজ্জ একজন ব্যক্তি মন্তব্য করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, পার্লামেন্টে তার বিরুদ্ধে তার দলের লোকেরা, বিরোধী দলের কয়েকজন কথা বলেছেন, সারাদেশের মানুষ কথা বলছেন। তাদের মন্ত্রণালয়ের দুর্নীতি যখন প্রমাণিত হয়েছে।
রোববার (৪ জুলাই) দুপুরে জাতীয়তাবাদী দল সমর্থিত ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের উদ্যোগে ‘মহান স্বাধীনতার সূবর্ণজয়ন্তী: গণমাধ্যমের প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি’ শীর্ষক ভার্চ্যুয়াল আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল।
শনিবার জাতীয় সংসদে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের বিরুদ্ধে সরকারি ও বিরোধী দলের সদস্যদের বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে বিএনপি মহাসচিব বলেন, দুর্ভাগ্য আমাদের যে এরকম একটা ভয়ংকর গণবিরোধী সরকার যারা আমাদের সমস্ত অর্জনগুলোকে ধবংস করে দিচ্ছে। তারা এখনো সরকারে আছে এবং বহাল তবিয়তে আছে।
তিনি বলেন, সরকার চরম দুর্নীতিতে নিমজ্জিত। এই করোনাভাইরাসে যখন মানুষের জীবন চলে যাচ্ছে, তখন স্বাস্থ্য খাতে কী রূপ দুর্নীতি চলছে। আমরা প্রথম থেকে বলছিলাম জেলার হাসপাতালগুলো পর্যাপ্ত পরিমাণ আইসিইউ বেডের ব্যবস্থা করা হোক, অক্সিজেন সরবরাহের ব্যবস্থা করা হোক, ওষুধের ব্যবস্থা করা হোক। দুর্ভাগ্যজনকভাবে শতকরা ৫২টি হাসপাতালে কোনো আইসিইউ বেড নেই। আপনারা শুনলে অবাক হবেন যে, একটা জেলা হাসপাতালে পর্যন্ত কোনো অক্সিজেন সরবারহের ব্যবস্থা নেই।
গণমাধ্যমের বর্তমান অবস্থা তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, গণমাধ্যমে এতটুকু সরকারের সমালোচনা করলে তাদের বিভিন্নভাবে নির্যাতনের শিকার হতে হচ্ছে, ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের মাধ্যমে চরম নির্যাতন করা হচ্ছে। আমি দেখলাম, গত ৬ মাসে ১৫০ জনের মতো সাংবাদিককে শুধু সত্য কথা লেখার জন্য ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টে মামলা করা হয়েছে। আজকে এই জাতিকে বাঁচানোর জন্য, তাদের অন্ধকার থেকে আলোতে নিয়ে আসার জন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। কখনোই কোনো আন্দোলন সফল হয় না যদি আমরা ত্যাগস্বীকার না করতে পারি। আমি অনুরোধ জানাবো তরুণদের এখনই জেগে উঠতে হবে, এই ঘোরতর অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমাদের উঠে দাঁড়াতে হবে।
একসময়ের নাম করা সাংবাদিক যারা ‘এখন উচ্ছিষ্টভোগী হয়েছেন’ তারা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়া এবং ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আমাদের আন্দোলন সম্পর্কে নানারকম অপপ্রচার করে কলাম লিখছেন যা সত্য নয় উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, সেই লেখাগুলোর বিরুদ্ধে আপনাদের জবাব দিতে হবে, সেগুলোর বিরুদ্ধে পত্রিকায় আপনাদের লেখা দিতে হবে। কিছুদিন আগে আবদুল গাফফার চৌধুরী সাহেব যে সমস্ত লেখা লিখেছেন, আপনারা আমাদের মতাদর্শের যারা একজনও কিন্তু প্রতিবাদ করে কলাম লিখছেন না। অন্তত যে কথাগুলো তার সত্য নয়, সেগুলো তো আপনাদের বলতে হবে, লিখতে হবে, জনগণকে সত্যটা জানাতে হবে।
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলামের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ, বর্তমান সভাপতি এম আবদুল্লাহ, মহাসচিব নুরুল আমিন রোকন, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি কামাল উদ্দিন সবুজ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদ, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের আবদুল হাই শিকদার, বাকের হোসাইন, বাসির জামাল, রাশেদুল হক, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি মুরসালিন নোমানী প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৪১১ ঘণ্টা, জুলাই ০৪, ২০২১
এমএইচ/এমজেএফ