ঢাকা, বুধবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

সৌদি আরব পশ্চিমাঞ্চল বিএনপির কমিটি প্রত্যাখ্যান

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০২ ঘণ্টা, জুলাই ১০, ২০২১
সৌদি আরব পশ্চিমাঞ্চল বিএনপির কমিটি প্রত্যাখ্যান

ঢাকা: সৌদি আরবের পশ্চিমাঞ্চল বিএনপির সদ্য ঘোষিত কমিটি প্রত্যাখ্যান করেছেন সংগঠনের বঞ্চিত ও ত্যাগী নেতাকর্মীরা।

শুক্রবার (৯ জুলাই) বাংলাদেশ সময় দিনগত রাত ১টার দিকে (সৌদি আরব স্থানীয় সময় রাত ১০টা) জেদ্দা আজিজিয়া মেহেরান ভিআইপি হলে সংবাদ সম্মেলনে সদ্য ঘোষিত ওই কমিটি প্রত্যাখ্যান করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে পুরনো ১৭৭ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটির অন্যতম সহ-সভাপতি আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সাংগঠনিক সম্পাদক প্রকৌশলী নূরুল আমিন। সভা পরিচালনা করেন সিনিয়র যুগ্ম-সম্পাদক মোহাম্মদ শাহজাহান।

লিখিত বক্তব্যে প্রকৌশলী নূরুল আমিন বলেন, গত ২ জুলাই সোশ্যাল মিডিয়ায় আমরা সৌদি আরব পশ্চিমাঞ্চল বিএনপির ৬১ সদস্যের একটি কমিটি দেখতে পাই। তাৎক্ষণিক যোগাযোগ করে নিশ্চিত হই যে বর্তমান চলমান ১৭৭ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি আবদুল জলিল, অন্যতম সহ-সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, সিনিয়র যুগ্ম-সম্পাদক মোহাম্মদ শাহাজাহান, সাংগঠনিক সম্পাদক প্রকৌশলী নূরুল আমিন (সুপার-৭), প্রচার সম্পাদক রৌশন জামিল শিপু, দপ্তর সম্পাদক নুরুল ইসলাম, যুব সম্পাদক বাহার উদ্দিন বাদল, শ্রম সম্পাদক আতিকুর রহমান শিপন, মুক্তিযোদ্ধা সম্পাদক এরফান আলী, যোগাযোগ সম্পাদক জসিম উদ্দিন, সাংস্কৃতিক সম্পাদক সেলিম মোল্লাসহ ৯০ শতাংশ সম্পাদকমণ্ডলী ও কমিটির সদস্যদের না জানিয়ে নতুন আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়।

তিনি বলেন, চলমান কমিটির কোনো জরুরি/সাংগঠনিক/বর্ধিত সভা না করে বা মতামত না নিয়ে সর্ম্পূণ অসাংগঠনিক ও অগণতান্ত্রিক পন্থায় একটি ৬১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন ও ঘোষণা করা হয়। তার কারণে আমরা পশ্চিম অঞ্চলের বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল এবং অঙ্গ-সহযোগী সংগঠন ও সব তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের মধ্য থেকে আজকের সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে আহম্মদ আলী মুকিবের নতুন আহ্বায়ক (পকেট কমিটি) কমিটি প্রত্যাখ্যান করলাম। পাশাপাশি অনতিবিলম্বে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কাছে এ কমিটি বাতিল করে জরুরি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জোর দাবি জানাচ্ছি।

লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, ২০১৫ সালের শুরুর দিকে ঠিক একই কায়দায় পশ্চিম অঞ্চলের স্বঘোষিত আহ্বায়ক আহম্মদ আলী মুকিবকে তৎকালীন বিএনপির পশ্চিমাঞ্চল কমিটির প্রয়াত সাধারণ সম্পাদক, ক্লিন ইমেজের প্রবাসী নেতা শহিদুল ইসলাম নান্নুর নেতৃত্বে তৎকালীন কমিটির প্রায় সব নেতা (৯৫ শতাংশ) মুকিবের অসাংগঠনিক কার্যকলাপ, যত্রতত্র যখন তখন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নাম ব্যবহার করে হুমকি-ধামকির প্রতিবাদ স্বরূপ আহম্মদ আলী মুকিব ও তৎকালীন সাংগঠনিক সম্পাদক পূর্ণাঙ্গ কমিটির সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান তপনকে জরুরি সভা করে অধিকাংশ সদস্যর মতামতের ভিত্তিতে তাদের দু’জনকে দল থেকে অব্যাহতি দেন। তার কিছুদিন পর মুকিব শহীদুল ইসলাম নান্নুসহ প্রায় সবাইকে বাদ দিয়ে একই কায়দায় নতুন আহ্বায়ক কমিটি (পকেট কমিটি) কেন্দ্র থেকে নিয়ে আসেন।

বক্তব্যে উল্লেখ করেন যে, ৯৭ সালের গোড়ার দিকে ভিন্ন ভিন্ন নামে জেদ্দায় বিভাজনের মধ্য দিয়ে বিএনপির রাজনীতি শুরু হয়। ২০০৮ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত বর্তমান কমিটির প্রধান উপদেষ্টা ও বিএনপি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য (জাতীয় কমিটি) আব্দুর রহমান ও বর্তমান সভাপতি আহম্মেদ আলী মুকিবের দুই গ্রুপের বিভেদ চরমে রূপ নিলে এ অঞ্চলের বিএনপি সংগঠন সর্ব মহলে নানা রকম সমালোচনার মুখে পড়ে। এখানে উল্লেখ্য যে, আব্দুর রহমানের পক্ষে পশ্চিম অঞ্চল বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের ৯০ শতাংশ নেতাকর্মীর সমর্থন ছিল, যা এখনও আছে। দলের জন্য দেশ-বিদেশে তিনি প্রচুর টাকা খরচ করেন। অপর দিকে মুকিবের পক্ষে অতীত ও বর্তমানেও ১০ শতাংশ নেতা-কর্মী সমর্থনে আছে। মুকিব নিজের স্বার্থ ব্যতীত দলের জন্য কোনো টাকা খরচ করেন না। তিনি দলকে সুসংগঠিত করার লক্ষ্যে বিএনপি চেযারপারসনের মতামত নিয়ে আব্দুর রহমান সব ভেদাভেদ ভুলে ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই চিন্তা-চেতনাকে সামনে রেখে প্রথমে নিজেদের মধ্যে আলোচনা ও পরবর্তীতে দুই গ্রুপের মধ্যে ঐক্যের প্রয়োজনীতার ওপর সম্মতি প্রকাশ করেন। আবদুর রহমানের সরাসরি পদক্ষেপ, তদারকিতে ও স্থানীয় নেতাদের সহযোগিতায় ২০১৫ সালের ৩১ শে ডিসেম্বর রাতে ঐতিহাসিক ঐক্য ঘোষণার মধ্য দিয়ে সারা বিশ্বে এক উদাহরণ সৃষ্টি করেন। যা সেই সময়ে দেশে-বিদেশে সর্বমহলে ভীষণভাবে প্রশংসিত হয়। সেই থেকে অদ্যাবধি আমরা আব্দুর রহমানের নেতৃত্বে এ সংগঠনটি প্রবাসের মাটিতে নানা রকম কর্মসূচি পালনসহ জাতীয় রাজনীতিতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচি পালনে বাংলাদেশে দলীয় নানা প্রায়োজনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

সংবাদ সম্মেলনে আহম্মদ আলী মুকিবের বিরুদ্দে দুর্নীতি, সেচ্ছাচারিতা, স্বজনপ্রীতি, সাংগঠনিক অদক্ষতা, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নাম ভাঙিয়ে মধ্যেপ্রাচ্যে ক্ষমতার অপব্যবহার, মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের ভার্চ্যুয়াল আলোচনায় বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আব্দুর রহমানসহ সৌদি আরবে বিএনপির প্রবীণ নেতাদের বাদ দিয়ে অনুষ্ঠান পরিচালনা করে যাচ্ছেন। নিজের ইচ্ছে মতো কমিটি তৈরি-ভাঙাসহ অসংখ্য তথ্য প্রমাণ অভিযোগ উপস্থাপন করা হয়। তারা নবগঠিত আহ্বায়ক কমিটি বাতিল ও আহম্মদ আলী মুকিবের বহিষ্কারের দাবি জানান।

** সৌদিআরব বিএনপির ৬১ সদস্যবিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন

বাংলাদেশ সময়: ১৫০১ ঘণ্টা, জুলাই ১০, ২০২১
এমএইচ/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।