ঢাকা: বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সরকার বলছে ২০ হাজার ৯১৪ জন মারা গেছেন। কিন্তু আমরা চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি, পত্রিকায় দিয়েছে বাড়িতে মৃত্যুর সংখ্যা হচ্ছে ৬৫ ভাগ।
সোমবার (২ আগস্ট) দুপুরে লালমনিরহাট জেলা বিএনপি কোভিড-১৯ হেল্প সেন্টার ও ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা কেন্দ্র উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
একেকটা জাতির সামনে একেক সময় দুঃসময় আসে জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা পড়েছি দুটো দানবের হাতে। একদিকে করোনা দানব, আর একদিকে আওয়ামী লীগ দানব। এই দুই দানবের চাপে পড়ে গোটা জাতির প্রাণ ওষ্ঠাগত। সরকারি হিসেবে রোববার পর্যন্ত ১২ লাখ ৬৪ হাজার ৩২৮ জন আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে। এটা একদম ডাহা মিথ্যা কথা। তারা টেস্টইতো করতে পারছে না। উপজেলা পর্যায়ে টেস্ট দেয় না। জেলা পর্যায়ে দেয়, সেখানে গিয়ে টেস্ট করতে পারে না। ঢাকায় যে টেস্ট সেন্টারগুলো আছে সেখানে দু’ঘণ্টা টেস্ট হয়। এরপরে তারা যে তথ্যগুলো দেয় সেগুলো জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করার জন্য দেয়।
তিনি বলেন, আমাদের অত্যন্ত সম্মানিত নেতা শেখ মুজিবুর রহমান সাহেবের ১৫ আগস্টে যে হত্যাকাণ্ড সে সম্পর্কে আমাদের নেত্রী সংসদে সবসময় নিন্দা জানিয়েছেন। আমরা কেউ কোনো হত্যাকণ্ডের সমর্থন করি না। তার বিচার হয়েছে, আপনারা বিচার করেছেন। সবকিছু শেষ হয়ে গেছে অথচ আপনারা এখন নতুন গীত গাওয়া শুরু করেছেন যে জিয়াউর রহমান সাহেব এর সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল। কোথাও প্রমাণ করতে পারেননি। আজ পর্যন্ত কেউ একথা বলেনি। জিয়াউর রহমান তখন ডেপুটি চিফও ছিলেন না। সেনাবাহিনীর প্রধান ছিলেন শফিউল্লাহ সাহেব। তিনি গিয়ে খন্দকার মোশতাককে স্যালুট করেছেন। একে খন্দকার সাহেব স্যালুট করেছেন। নেভাল চিফ স্যালুট করেছেন। আপনাদের মোশতাক সাহেবের সঙ্গে গিয়ে ৩১ জনের মন্ত্রিসভা শেখ মুজিবুর রহমান সাহেবের রক্তের ওপর দিয়ে হেটে গিয়ে মন্ত্রীত্বের শপথ নিয়েছে। এই হত্যাকাণ্ড আওয়ামী লীগ ঘটিয়েছে। অন্য কেউ জড়িত ছিল না। সুতরাং মাছ দিয়ে শাক ঢাকার চেষ্টা করবেন না। নিজেদের অপকর্ম ঢাকার জন্যে অন্যকে দোষারোপ করে লাভ নেই। নিজেরা পরিচ্ছন্ন হন, পরিশুদ্ধ হন। হত্যা, সন্ত্রাসের রাজনীতি বাদ দেন। জনগণের সঙ্গে প্রতারণা বাদ দিয়ে জনগণের আকাঙ্খা পূরণ করেন।
‘বিএনপিকে কোথাও দেখা যায় না’ আওয়ামী লীগ নেতাদের এমন অভিযোগের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, গত ১২/১৩ বছর ধরে আমরা নিপীড়িত নির্যাতিত। তারপরও যতটুকু সম্ভব আমরা জনগণের পাশে থাকছি। বিএনপিকেতো দেখার দরকার নেই। দেখার দরকার ওবায়দুল কাদের, হাসান মাহমুদকে। আমরা দেখতে চাই, আপনারা জনগণের সঙ্গে থেকে জনগণকে ত্রাণ দিচ্ছেন, সাহায্য করছেন। কষ্টের দিনে তাদের পাশে গিয়ে দাঁড়াচ্ছেন। কিন্তু দেখিনাতো।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আপনারা আমাদের বলেন, শীততাপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষে কথা বলি। আমরা শীততাপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষের সঙ্গে সঙ্গে মাঠে গিয়েও মানুষের পাশে দাঁড়াই। এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের একজন নেতাকে দেখলাম না জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছেন। বলছেন, সরকার করছে। সরকার কী করছে? আড়াই হাজার করে টাকা দিচ্ছে, কতজনকে দিচ্ছে জানি না। আড়াই হাজার টাকা আপনারা পকেটে নিচ্ছেন। তালিকার ৮৬ ভাগ ভুয়া। মানুষের কাছে জিজ্ঞাসা করেন, মানুষ আপনাদের সম্পর্কে কি বলে। এতই যদি কাজ করেন, একটা পরিচ্ছন্ন ফেয়ার নির্বাচন দেন না কেন? প্রমাণ হয়ে যাবে আপনারা কি কাজ করেছেন, জনগণ আপনাদের কতটুকু ভালবাসেন। সেটা আপনারা জানেন, দেবেন না। আপনারা জানেন ফেয়ার নির্বাচন দিলে আপনারা কখনও টিকে থাকতে পারবেন না। নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবেন।
লালমনিরহাট জেলা বিএনপির সভাপতি ও বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলুর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান বাবলার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল খালেক বক্তব্য দেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০৪ ঘণ্টা, আগস্ট ০২, ২০২১
এমএইচ/এমআরএ