সিলেট: মহামারিতে করোনায় বিপর্যস্ত সিলেট। শয্যা সংকটে ঠাঁই নেই হাসপাতালে।
নগরের বাসিন্দাদের সার্বিক চিকিৎসাসেবা নিশ্চিতে প্রশাসনসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার দায়িত্বশীলদের পরামর্শে ৫টি পদক্ষেপ নিয়েছে নগর কর্তৃপক্ষ।
তবে দলমতের ঊর্ধ্বে থেকে নগরবাসীর জন্য কাজ করলেও দলীয় দৃষ্টিকোণ থেকে বিষেদাগার করে বিবৃতি দিয়েছেন মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক, বর্তমান সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম জালালী পংকী।
রোববার (৮ আগস্ট) রাতে গণমাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতি তিনি জানান, মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীকে করোনাকালে দুঃসময়ে বিএনপির পাশে পাওয়া যায়নি।
বিবৃতিতে আব্দুল কাইয়ুম জালালি পংকী অভিযোগ করেন, সিলেট মহানগর ও জেলা বিএনপি করোনা মহামারিতে বিভিন্নভাবে জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীকে এই দুঃসময়ে বিএনপির পাশে পাওয়া যায়নি।
এদিকে তার এমন বিবৃতিতে সাধারণ মানুষের মতো, সিলেট বিএনপিতে মিশ্র-প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
এছাড়া মেয়র আরিফুল হকের বিরুদ্ধে আব্দুল কাইয়ুম জালালী পংকীর বিবৃতিকে ব্যক্তিগত হিসেবে দেখছেন বিএনপির নেতারাও।
এ বিবৃতির প্রতিক্রিয়ায় নেতারা বলেন, মেয়র আরিফ নগরবাসীর জন্য কাজ করছেন। সাধারণ মানুষ তার কাজে সন্তুষ্ট। বরং বিএনপির এই ক্রাইসিস সময়ে দলের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে যাচ্ছে। এদিকে আরিফুল হক চৌধুরী সম্পর্কে কিছু জানে না জেলা ও মহানগর বিএনপি।
এ বিষয়ে সিলেট বিএনপির নেতারা জানান, জালালী পংকীর এমন মন্তব্য তার ব্যক্তিগত অভিমত। এটা সংগঠনের বক্তব্য নয়, হতেও পারে না।
সিলেট মহানগর বিএনপির সভাপতি নাসিম হোসাইন বাংলানিউজকে বলেন, সাংগঠনিকভাবে কোনো বক্তব্য থাকলে সেই বক্তব্য আমরাই করতাম। এটা মহানগর বিএনপির কারো প্রতিক্রিয়া নয়। তিনি (জালালী পংকী) হঠাৎ করেই এমন বক্তব্য দিয়েছেন।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, করোনাকালে মানুষের জন্য তার (পংকীর) ভূমিকা কী? তিনি কেন এমনটি করেছেন, তা আমার বোধগম্য নয়। এটা ব্যক্তিগত একটি মন্তব্য। তবে কারো ব্যক্তিগত মন্তব্যে দলে নেতাকর্মীদের মধ্যে প্রভাব পড়বে না। কারণ কালেকটিভ কিছু হলে সাংগঠনিকভাবে আমরাই বলতাম।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মহানগর বিএনপির এক নেতা বলেন, বিএনপির মেয়র হলেও তিনি এখন জনগণের। এই চেয়ারে বসে তাকে সবার কথা ভাবতে হয়। এরপরও দলীয় অনুষ্ঠানগুলোতে ভার্চ্যুয়ালি তিনি যুক্ত থাকেন। বরং অনেক সময় তাকে দাওয়াত দেয় না।
এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপির এই নেতা বলেন, করোনাকালে সরকারের পাশাপাশি মানুষের চিকিৎসাসেবা, টিকাদান থেকে শুরু করে সব কিছু মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর বলিষ্ঠ ভূমিকায় হচ্ছে। বরং যে নেতা এমন মন্তব্য করেছেন, জনগণের জন্য দূরে থাক, দলের নেতাকর্মীর জন্য তার ভূমিকা কতটুকু, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকে যায়।
এদিকে বিবৃতির বিষয়ে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কামরুল হুদা জায়গিরদারকে মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
বিবৃতির বিষয়ে সিলেট সিটি করপোরেশেনের মেয়র ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, নগরবাসীর জন্য নিজের জীবন বাজি রেখে কাজ করে যাচ্ছি। মেয়রের চেয়ারে বসে কর্তব্য পালনে কখনো অনীহা দেখাইনি। মানুষের জন্য কী করছি, সেগুলো নগরবাসী বলবেন। কারো ব্যক্তি বিদ্বেষ থাকতেই পারে।
এ নিয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই। আমার কাজের খতিয়ান ও বিচার নগরবাসীর কাছে। তারাই দেখবেন, কিছু করছি, কিনা। জাতীয়তাবাদী চেতনায় আমার কর্ম-স্পৃহা কতটা, তা সংগঠন দেখছে। ফলে ব্যক্তি বিশেষের প্রতি-হিংসাপরায়ণ বক্তব্যে নজর না দেওয়াই শ্রেয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১৯ ঘণ্টা, আগস্ট ০৯, ২০২১
এনইউ/এএটি