ঢাকা: খালেদা জিয়ার জন্মদিন নিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্য অরাজনৈতিক এবং শিষ্টাচার বহির্ভূত বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমি তার এ বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে তা প্রত্যাহার করার আহ্বান জানাচ্ছি।
মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে জনগণের সঙ্গে এই সরকারের কোনো সম্পর্ক নেই। যেহেতু কোনো জবাবদিহিতা নেই, সেজন্য যা ইচ্ছা তাই করছে। এই দেশে সত্যিকার অর্থে তারা একটা কর্তৃত্ববাদী, স্বৈরাচারী, ফ্যাসিবাদী সরকার প্রতিষ্ঠা করেছে।
তিনি বলেন, এই সরকার ভয়াবহ করোনা মহামারি সঠিকভাবে মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হয়েছে। টিকা সংগ্রহ করতে গিয়ে দুর্নীতি করেছে। গণটিকা দেওয়ার নামে অব্যস্থাপনা তৈরি করেছে। ফলে সারা দেশে করোনা সংক্রমণ আরও বেড়েছে। অপরিকল্পিত লকডাউনের নামে বিরোধীদলের বিরুদ্ধে ক্র্যাকডাউন করছে। তারা বিরোধীদলকে কোনো সভা-সমাবেশ করতে দিচ্ছে না। অথচ তারা নিজেরা ঠিকই করছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, এই সরকার ইতিহাস বিকৃত করার জন্য এবং জনগণের দৃষ্টি ভিন্ন দিকে প্রবাহিত করতে জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে অত্যন্ত অপমানজনক কথাবার্তা বলছে। এসব কথাবার্তা বলার উদ্দেশ্য হলো ইতিহাস বিকৃত করা এবং জনগণকে বিভ্রান্ত করা।
তিনি বলেন, আমরা খুব ভালো করে জানি ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডের পরে কারা ক্ষমতায় এসেছিল। ক্ষমতায় এসেছিল আওয়ামী লীগ। তাদের নেতা খন্দকার মোশতাক সেদিন ক্ষমতাসীন হয়েছিলেন। আওয়ামী লীগের নেতাদের নিয়েই সেদিন নতুন মন্ত্রিসভা গঠন করা হয়েছিল শেখ মুজিবুর রহমানের রক্তের ওপর দিয়ে, সেকথা আমরা ভুলে যাইনি। তাদেরই নিয়োগ করা সেনাপ্রধান, যাকে পরে তারা এমপি বানিয়েছেন। ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডের পরে যারা ষড়যন্ত্রকারীদের সঙ্গে আঁতাত করেছিল সেই কর্নেল তাহেরের নাম কিন্তু তারা একবারও উচ্চারণ করে না। তৎকালীন জাসদের গণবাহিনীর নেতা হাসানুল হক ইনুর কথা তারা বলে না। তাকে মন্ত্রী বানিয়েছে তারা। সামরিক আইন জারি করেছিল খন্দকার মোশতাক, সে কথাগুলো জনগণের সামনে তারা কখনো বলে না। আমরা বিশ্বাস করি, এসব মিথ্যা প্রচারণা দিয়ে তারা জনগণকে বিভ্রান্ত করতে পারবে না। সত্য বের হয়ে আসবে।
দলীয় নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আসুন আজকে আমাদের ওপরে যে দায়িত্ব পড়েছে, সকল গণতান্ত্রিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করে দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে, গণতন্ত্রকে মুক্ত করতে হবে। একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন করে একটি জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আসুন আমরা সেই লক্ষ্যে এগিয়ে যাই, নিজেদের সংগঠিত করে গণআন্দোলনের মাধ্যমে এই ভয়াবহ শত্রুকে পরাজিত করি।
মিলাদ মাহফিলে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান, দক্ষিণের আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিব, যুগ্ম-মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী অ্যানি, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সুপু, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, সহ-প্রচার সম্পাদক শামীমুর রহমান শামীম, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হক, দক্ষিণের সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু, যুবদল সভাপতি সাইফুল আলম নীরব এবং স্বেচ্ছাসেবক দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩০ ঘণ্টা, আগস্ট ১৬, ২০২১
এমএইচ/এসআইএস