ঢাকা: রাজধানীর চন্দ্রিমা উদ্যানে মঙ্গলবার সকালে বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনায় দলের যেসব নেতাকর্মী গ্রেফতার ও আহত হয়েছেন তাদের তালিকা প্রকাশ করেছেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালাম।
মঙ্গলবার (১৭ আগস্ট) বিকাল ৩টায় নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তালিকা প্রকাশ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে আব্দুস সালাম বলেন, মঙ্গলবার সকাল ১১টায় জিয়াউর রহমানের সমাধিতে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও উত্তর বিএনপির নবগঠিত আহ্বায়ক কমিটির নেতৃবৃন্দের পুস্পস্তবক অর্পণ ও দোয়া অনুষ্ঠানের পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি ছিল। এই কর্মসূচি পালনের জন্য পুলিশের কাছ থেকে নিয়ম অনুযায়ী অনুমতিও নেওয়া ছিল। অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ জাতীয় নেতৃবৃন্দও উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় যে, সাড়ে ১১টার কর্মসূচির এক ঘণ্টা আগে থেকেই পুলিশ মাজারের আশে পাশে ব্যারিকেড দিয়ে রাখে। নেতাকর্মীরা মাজারস্থলে জড়ো হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সম্পূর্ণ বিনা উস্কানিতে নেতাকর্মীদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে।
তিনি বলেন, পুলিশ নেতাকর্মীদের লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ, টিয়ার শেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। বেধড়ক লাঠিচার্জে গুরুতর আহত করে। পুলিশি হামলায় ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান, সদস্য সচিব আমিনুল হকসহ অসংখ্য নেতাকর্মী গুরুতর আহত হয়। সংবাদ সংগ্রহ করতে আসা বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকরাও আহত হয়েছেন। আহতরা বর্তমানে রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে অসংখ্য নেতাকর্মীকে গ্রেফতারও করেছে।
তিনি বলেন, দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী আহত ও গ্রেফতার নেতাকর্মীদের তালিকা দেওয়া হলো। গ্রেফতাররা হলেন—এ জে এম শামসুল হক, শাহজাহান মিয়া সম্রাট, মো. রুবেল, হাফিজ আহমেদ রাতুল, ইব্রাহিম, সোহাগ, রবিউল, জুম্মন, সোলেমান, মুক্তার, মুনির হোসেন, মতিউর রহমান।
আহতরা হলেন—আমান উল্লাহ আমান, আমিনুল হক, শামিমুর রহমান শামীম, ফেরদৌসি আহমেদ মিষ্টি, শহীদুল ইসলাম বাবুল, অ্যাডভোকেট মকবুল আহমেদ সরদার, মোহাম্মদ নাঈম, মো. শরীফ হোসেন, গোলাম মাওলা শাহীন, সাঈদ হাসান মিন্টু, আনন্দ শাহ, আর টি মামুন, মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন, বাপ্পি, সুমন, সুলেমান, জগলুল পাশা পাভেল, আশিকুর রহমান, আনোয়ার হোসেন, জুয়েল, সাদেক, শরীফ আহমেদ, ইয়াসির ফেরদৌসী মুরাদ, রুবেল, ফারুক, মিন্টু, ইসরাফিল, আব্দুস সোবহান স্বপন, শহিদুল ইসলাম দিপু, শাখাওয়াত হোসেন, গোলাম আজম সৈকত, শাহ আলম তপু, শামীম আহমেদ, নুরনবী ফরাজী মুক্তার, ডা. মাহফুজুর রহমান, আবুল কালাম, সাগর, রায়হান আহমেদ, সাহাবুদ্দিন সাবু, ইসমাইল হোসেন বাবু, জামাল হোসেন টুয়েল, মো. ফিরোজ, মো. মারুফ, আল-আমিন, অ্যাডভোকেট আক্তার উজ্জামান, গেলদার মো. হৃদয়, মো. কামাল হোসেন, সুমন সেরনিয়াবাদ, মো. শামিম, আনোয়ার, খলিল, রানা, রাজিব, সি এম আনোয়ার, মাহফুজুর রহমান সজিব, ইসমাইল হোসেন বাবু, আল-আমিন তালুকদার, এল রহমান, মনিরুজ্জামান টগর, বোরহানুজ্জামান, জামান, মনোয়ার হোসেন, জাহাঙ্গীর, রহিম, মোস্তাফিজুর রহমান, শাহ আলম, কে এম সোহেল রানা, জসিম উদ্দিন, মো. রুবেল, মিজানুর রহমান, এস এম সাইফুল রাজু, জাকির হোসেন খালাসি।
আব্দুস সালাম বলেন, আমরা এ পর্যন্ত জানতে পেরেছি হামলার ঘটনায় তিনজন সাংবাদিক আহত হয়েছেন। তারা হলেন—জাকারিয়া, মো. নুরুল আমিন ও কামরুল হাসান বাবু।
যশোরে হামলা, ফেনী ও জয়পুরহাটে গ্রেফতারের প্রতিবাদ
আব্দুল সালাম বলেন, মঙ্গলবার সকালে যশোরে ছাত্রদলের উদ্যোগে সংগঠনের কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে খালেদা জিয়ার জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত দোয়া মাহফিল ও সুবিধাবঞ্চিত ছাত্রদের মাঝে শিক্ষাসামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে ন্যাক্কারজনক হামলা চালানো হয়েছে। হামলায় অনেক নেতাকর্মী গুরুতর আহত হয়েছেন। এই হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে দোষীদের গ্রেফতার ও শাস্তির জোর দাবি করছি।
ফেনী জেলাধীন ফেনী সদর উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব শাহাদাত হোসেন শাহাদাত এবং জয়পুরহাট জেলা বিএনপির সদস্য ও ক্ষেতলাল উপজেলা বিএনপির সাবেক সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক খালেদ মাসুদ আঞ্জুমানকে সোমবার গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাদের গ্রেফতারের ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে তাদের নিঃশর্ত মুক্তির জোর দাবি করছি।
বাংলাদেশ সময়: ১৭০২ ঘণ্টা, আগস্ট ১৭, ২০২১
এমএইচ/এমজেএফ