ঢাকা: ইতিহাস থেকে যারা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে মুছে ফেলতে চেয়েছিল তারাই আজ মুছে গেছে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
বুধবার (২৫ আগস্ট) বিকেলে সচিবালয়ে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ এ আলোচনা সভার আয়োজন করে। ওবায়দুল কাদের তার বাসভবন থেকে ভার্চ্যুয়ালি এ সভায় যুক্ত হন।
সভায় ওবায়দুল কাদের সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের তোয়াজ না করে স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতার সঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আমি বিএনপির কথা বলতে চাই না। কিন্তু ১৫ আগস্টে বঙ্গবন্ধুর মর্মান্তিক ঘটনার কথা বলতে গেলে বিএনপির কথা এসে যায়। ১৫ আগস্টে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জিয়াউর রহমানের সংশ্লিষ্টা কী ছিল না, বিএনপি এটা অস্বীকার করতে পারবে। খুনিদের রক্ষায় জিয়া ইনডেমিনিটি দিয়েছিল সে কথা কী বলবো না। ৭৫' এর পর দেশে ফিরে আসে পাকিস্তানের ভাব-ধারা, দর্শন। শুরু হয় উল্টো পথের রাজনীতি। নিষিদ্ধ করা হয় বঙ্গবন্ধুকে। উদ্দীপনাময় বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ নিষিদ্ধ করা হয়, নিষিদ্ধ করা হয় মুক্তিযুদ্ধের স্লোগান জয় বাংলা। বঙ্গবন্ধুর জানাজায় অংশ নেওয়ার জন্য মাত্র ১৮ জন লোককে অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। সে ইতিহাস কী আমরা ভুলে যেতে পারি? যারা ইতিহাস থেকে জাতির পিতাকে মুছে ফেলতে চেয়েছিল তারাই আজ মুছে গেছে।
ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আজ দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। বিশ্ব আজ বাংলাদেশকে সমীহ করে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার হয়েছে, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হয়েছে। এই করোনা পরিস্থিতির মধ্যে দেশের রিজার্ভ দেখলাম ৪৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। বাংলাদেশের এই উন্নয়ন বিএনরপির গাত্রদাহের কারণ। তারা উন্নয়ন দেশে না, শেখ হাসিনার উন্নয়ন তাদের চোখে পড়ে না।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আমার ভয় হয় যখন দেখি সচিবালয়ের আশ-পাশে বিলবোর্ড, পোস্টারের ছড়াছড়িতে আকাশ ঢেকে যায়। ৭৫ সালের আগে দেখতাম রাতারাতি আওয়ামী লীগ সেজে, মুজিবকোর্ট পরে ফুল হাতে ভিড় করতে। হঠাৎ করে চোখের পলকে সব কিছু পাল্টে গেল। বঙ্গবন্ধুর মারা যাওয়ার পর মোশতাকের চোখের জল দেখেছি। খুনি মোশতাক মীর জাফরের পেতাপ্তা। তার চোখের জল কষ্টের জল ছিল না। এ রকম মুজিব প্রেমিকের আমাদের প্রয়োজন নেই। অনেকেই যত্রতত্র বঙ্গবন্ধুর নামে মোড়াল স্থাপন করেছে। আজ যদি চোখের পলকে কোন অঘটন ঘটে যায় তবে, এই মোড়াল থাকবে। যিনি মোড়াল বানিয়েছেন তিনিও ভেঙে ফেলবেন।
সবিচালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উদ্দেশ্যে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, আমি আওয়ামী লীগ করি আপনি আমার চেয়েও বড় আওয়ামী লীগার। ১৫ আগস্টের পর দেখেছি রাতারাতি ভোল পালটিয়েছে। এই ভোল পাল্টানো দেখতে চাই না। নিরপেক্ষভাবে সততা নিয়ে কাজ করেন। তোয়াজ করবেন এটা আমরা চাই না। তোয়াজ করা শুভ নয়। ক্ষমতাসীন রাজনীতিবিদদের সঙ্গে প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একটা সেতুবন্ধন থাকতে হবে। রাজনীতিবিদরা ল মেকাররা আইন প্রণয়ন করবেন প্রশাসনের কর্মকর্তা তা বাস্তবায়ন করবেন। সত্য কথা বলুন, স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ করুন, তোয়াজ করার কোনো প্রয়োজন নেই।
সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য পরিষদের সভাপতি মোহাম্মদ আলীর সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য রাখেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম, পানি সম্পদ উপ মন্ত্রী একে এম এনামুল হক শামীম, কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য পরিষদের নেতা খায়রুল ইসলাম প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৯ ঘণ্টা, আগস্ট ২৫, ২০২১
এসকেে/এএটি