ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

প্রেমিক মানুষ জয়নাল হাজারী!

সোলায়মান হাজারী ডালিম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯২৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৮, ২০২১
প্রেমিক মানুষ জয়নাল হাজারী!

ফেনী: এক সময়ের দোর্দণ্ড প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তি ছিলেন জয়নাল হাজারী। নানা কারণে আলোচিত-সমালোচিত এই প্রবীণ রাজনীতি গড়ফাদারের আখ্যাও পেয়েছিলেন।

আপাত দৃষ্টিতে তাকে লৌহ মানব মনে হলেও তিনি ছিলেন আপাদ মস্তক প্রেমিক মানুষ।  এই প্রেমে ব্যর্থ হয়েই রয়ে যান চিরকুমার। প্রেমিকার ওপর অভিমান করে করেননি সংসার। প্রেমিকার বিচারও চেয়েছিলেন জনসমুক্ষে।  

বাংলাদেশের রাজনীতিতে ব্যাপক আলোচিত-সমালোচিত জয়নাল হাজারী আর নেই। মৃত্যুর পর তার রাজনৈতিক জীবন যেভাবে আলোচনায় আসছে তেমনিভাবে সামনে আসছে তার ব্যক্তি জীবনও। কঠোর জয়নাল হাজারীর প্রেমিক চরিত্রকেও স্মরণ করছেন মানুষ।  

একটি স্যাটেলাইট টেলিভিশনে প্রকাশ হওয়া টকশো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের নিউজফিডে বারংবার আসছে। যেটিতে হাজারী কথা বলেছিলেন তার প্রেমিকা বিজুকে নিয়ে। হাজারী বলেছেন বিজু ওয়াদা করেছিল কোনদিন বিয়ে করবে না তাকে ছাড়া, কিন্তু বিজু বিয়ে করেছেন। ওয়াদা ভঙ্গ করেছেন। সেকারণে বিজুর বিচার চাই।

জীবনের শেষ দিনগুলোতে অনেকটা নিভৃতচারী হয়ে উঠলেও আলোচনা ও বিতর্ক তাকে পিছু ছাড়েনি। রাজনীতিতে নামিদামি থেকে শুরু করে জনসাধারণ পর্যায়ে বহু মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে নিলেও ব্যক্তিগত জীবনে বিজু ছাড়া আর কোনো মানুষ পাননি তিনি, এর সঙ্গে সংসার পাতবেন।  

বিভিন্ন সময়ে রাজনীতিকদের ৬০ পেরোনো বয়সে বিয়ে ও ঘর-সংসার করতে দেখা গেলেও এই রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব আমৃত্যুই ছিলেন ‘চিরকুমার’। অবশ্য মৃত্যুর কিছুদিন আগে তিনি বলেছিলেন ধর্ম রক্ষার জন্য হলেও তিনি বিয়ে করতে চান। বিয়ে করবেন, কিন্তু স্ত্রীর সঙ্গে থাকবেন না। ইসলামে বিয়ে ফরজ সেজন্য বিয়ে করতে চাইলেও শেষ পর্যন্ত তা আর হয়ে উঠেনি।

বিয়ে না করার পেছনে ‘বিজু’ নামের চরিত্রটির সঙ্গে এই রাজনীতিকের সম্পর্ক ও বিচ্ছেদের কাহিনি অনেকবারই সামনে এসেছে। নিজের লেখা ‘বিজুর বিচার চাই’ নামের বইতেও ওই নারীর সঙ্গে ব্যক্তিগত জীবনের নানা মুহূর্ত উঠে আসে। বইটি ব্যাপক আলোচনায় এসেছিল।

অপরদিকে পরিবার ও স্বজনরা বলছেন ভিন্ন কথা। সোমবার (২৭ ডিসেম্বর) ফেনী শহরের মাস্টার পাড়ায় জয়নাল হাজারীর বাড়ি শ্রল কুঠিরে গিয়ে কথা হয় তার ভাগিনা শাখাওয়াত হোসেন মন্টু ও আনোয়ার হোসেন শিমুর সঙ্গে। তারা বলছেন তাদের মামা রাজনীতির জন্যই বিয়ে করেননি। তাদের মা একাধিকবার ভাইকে বিয়ের কথা বলেছেন। তখন জয়নাল হাজারী বলতো রাজনীতি করছি বিয়ের সময় কোথায় পাব। রাজনীতির কারণে বিয়ে করা হবে না।

সোমবার বিকেলে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন জয়নাল হাজারী। মঙ্গলবার (২৮ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টায় ফেনী সরকারি পাইলট হাইস্কুল মাঠে জয়নাল হাজারীর নামাজে জানাজার পর শহরের মাস্টার পাড়ার শৈল কুঠিরের মুজিব উদ্যানে তাকে সমাহিত করার কথা রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ০৯২৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৮, ২০২১
এসএইচডি/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।