ঢাকা: খুলনা ও বরিশাল অঞ্চলের ১০ জেলায় বিদ্যুৎ বিচ্যুতির কারণ জানিয়েছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রাণালয়।
রোববার (২৭ এপ্রিল) মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত একটি সংবাদ বিবৃতি পাঠানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, শনিবার গ্রিড নেটওয়ার্কে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক ছিল। এদিন বিকাল ৫টায় মোট জেনারেশন ছিল ১৪৫২০ মেগাওয়াট এবং সিস্টেম ফ্রিকুয়েন্সি ছিল ৫০.৪ হার্জ। এ অবস্থায় ৫টা ৪৫ মিনিটে ৪০০ কেভি আমিনবাজার-গোপালগঞ্জ ডাবল সার্কিট লাইনে ফল্ট সংঘটিত হওয়ার প্রেক্ষাপটে খুলনা ও বরিশাল অঞ্চলের যশোর, বেনাপোল ও নোয়াপাড়া উপকেন্দ্র সংশ্লিষ্ট ১০টি জেলায় সাময়িক বিদ্যুৎ বিচ্যুতি ঘটে।
তবে, ২৩০ কেভি ঈশ্বরদী-ভেড়ামারা-ঝিনাইদহ লিঙ্কটি চালু থাকায় ২৩০ কেভি এবং ১৩২ কেভি লেভেলে সংযুক্ত ভেড়ামারা, কুষ্টিয়া, মাগুড়া, নড়াইল, চুয়াডাঙ্গা উপকেন্দ্রগুলো চালু ছিল। এই ২৩০ কেভি লিঙ্ক ব্যবহার করে পাওয়ার গ্রিডের এনএলডিসি এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য দপ্তরের তাৎক্ষণিক প্রচেষ্টায় দক্ষতার সাথে যশোর, বেনাপোল, নোয়াপাড়া উপকেন্দ্রগুলো চালু করা হয়। ফলে এসব এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করে।
অন্যদিকে, ৪০০ কেভি আমিনবাজার-গোপালগঞ্জ ডাবল সার্কিট লাইনের সংঘটিত ফল্টে ১৩২০ মেগাওয়াট বিসিপিসিএল (পায়রা), ১৩২০ মেগাওয়াট আরএনপিএল, ৩০৭ মেগাওয়াট বরিশাল ইলেকট্রিক, ১৩২০ মেগাওয়াট রামপাল, ২২৫ মেগাওয়াট ভোলা নতুন বিদ্যুৎ ও ২২৫ মেগাওয়াট ভোলা বিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং ৫০০ মেগাওয়াট এইচভিডিসি ব্লক-২ ট্রিপ করে প্রায় ২২৭৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ বিচ্যুতি ঘটে। বিকেল ৬টা ১৯ মিনিটে ৪০০ কেভি আমিনবাজার-গোপালগঞ্জ সার্কিট-১ এবং বিকেল ৬টা ২৫ মিনিটে সার্কিট-২ চালু করা হলে ৪০০ কেভি আমিনবাজার-গোপালগঞ্জ-আমতলী লিঙ্কটি সচল হয়।
এ অবস্থায় সিনক্রোনাইজিং বিদ্যুৎ প্রাপ্তির ফলে সন্ধ্যা ৭টা ১ মিনিটে ১৩২০ মেগাওয়াট বিসিপিসিএল (পায়রা) বিদ্যুৎকেন্দ্রের ইউনিট-১ এবং সন্ধ্যা ৭টা ৮ মিনিটে ইউনিট-২ সিনক্রোনাইজ করা হয় এবং ৭টা ৩০ মিনিট নাগাদ ওই অঞ্চলগুলোর বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করে। পর্যায়ক্রমে অন্যান্য বিদ্যুৎকেন্দ্রও গ্রিড নেটওয়ার্কে সিনক্রোনাইজ করা হলে রাত ৯টায় বিদ্যুৎ পরিস্থিতি সম্পূর্ণভাবে স্বাভাবিক হয়।
প্রাথমিকভাবে ৪০০/২৩০/১৩২ কেভি আমিনবাজার এবং ৪০০/২৩০/১৩২ কেভি গোপালগঞ্জ উপকেন্দ্র থেকে ৪০০ কেভি আমিনবাজার-গোপালগঞ্জ ডাবল সার্কিট লাইনের প্রটেকটিভ রিলের ফল্ট রেকর্ডসহ অন্যান্য তথ্য সংগ্রহ করা হয়।
সংগৃহীত তথ্য প্রাথমিকভাবে বিশ্লেষণ করে দেখা যায় যে, আমিনবাজার উপকেন্দ্র থেকে প্রায় ৬৫ কি.মি. দূরে এবং গোপালগঞ্জ উপকেন্দ্র থেকে প্রায় ২৫ কি.মি. দূরে সার্কিট-১ এর ব্লু-ফেজ এবং সার্কিট-২ এর রেড-ফেজ এর মাঝে ট্র্যানজিয়েন্ট শর্ট-সার্কিট সংঘটিত হওয়ার কারণে সার্কিট দুটির উভয় প্রান্ত থেকে সিস্টেম প্রোটেকশনের জন্য ব্যবহৃত প্রটেকটিভ রিলের স্বয়ংক্রিয় অপারেশনে তদসংশ্লিষ্ট বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো ট্রিপ করে যায়।
উপরোক্ত তথ্যের বিস্তারিত কারিগরি যৌক্তিকতা অনুসন্ধান করতে ইতোমধ্যে বিদ্যুৎ বিভাগ এবং পাওয়ার গ্রিড থেকে দুটি পৃথক কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির প্রতিবেদন পাওয়া গেলে বর্ণিত ট্রিপিং এর বিস্তারিত কারণসহ বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের আনুষঙ্গিক বিষয়গুলো পরিষ্কারভাবে জানা যাবে, বলা হয়েছে মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে।
আরকেআর/এমজেএফ
বাংলাদেশ সময়: ৭:৩৭ পিএম, এপ্রিল ২৭, ২০২৫ /