ঢাকা: আবার বাড়ছে বিদ্যুতের দাম। পল্লীবিদ্যুতের গ্রাহকদের বাড়তি বিল গুনতে হবে আসছে মে মাসের মাঝামাঝি থেকেই।
বৃহস্পতিবার বিইআরসি কার্যালয়ে এক উন্মুক্ত সভায় বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর বিষয়ে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি) প্রস্তাব দেয়। আরইবির এ প্রস্তাব আমলে নিয়েছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)।
আরইবির উপস্থাপিত প্রস্তাবে বলা হয়, দীর্ঘদিন দাম না বাড়ানোর কারণে চলতি অর্থবছরে পল্লীবিদ্যুৎ সমিতিগুলোকে ৪ শ’ ৮৫ কোটি টাকারও বেশি লোকসান গুনতে হচ্ছে।
বিইআরসি আগামী ২৮ এপ্রিল বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর বিষয়টি নিয়ে গণশুনানির আয়োজন করবে বলে সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
আরইবির প্রস্তাবনার ওপর ২৪ এপ্রিলের মধ্যে আগ্রহী স্টেকহোল্ডারদের মতামত দেওয়ার জন্যও কমিশন আহবান জানিয়েছে।
বর্তমানে ১ শ’ ইউনিট পর্যন্ত বিদ্যুতের জন্য পল্লীবিদ্যুৎ সমিতিগুলো (পবিস) তাদের আবাসিক গ্রাহকদের কাছ থেকে প্রতি ইউনিট ২ টাকা ৬৪ পয়সা থেকে ৩ টাকা ৩ পয়সা নিয়ে থাকে।
আরইবি এ দাম ১১ দশমিক ৭৪ শতাংশ বাড়িয়ে ২ টাকা ৯৫ পয়সা থেকে ৩ টাকা ৩৯ পয়সা পর্যন্ত করার প্রস্তাব করেছে।
একইভাবে ১০১ ইউনিট থেকে ৩০০ ইউনিট পর্যন্ত বিদ্যুতের দাম ২ টাকা ৮১ পয়সা থেকে ৩ টাকা ২৩ পয়সা নেওয়া হয়। তা ১৯ দশমিক ২২ শতাংশ বাড়িয়ে ৩ টাকা ৩৫ পয়সা থেকে ৩ টাকা ৮৫ পয়সা করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
৩০১ ইউনিট থেকে ৫০০ ইউনিট পর্যন্ত বিদ্যুতের দাম ৪ টাকা ২৮ পয়সা থেকে ৪ টাকা ৫৬ পয়সা। এটা ২০ শতাংশ বাড়িয়ে ৫ টাকা ১৪ পয়সা থেকে ৫ টাকা ৪৭ পয়সা করার আবেদন করেছে আরইবি।
৫০০ ইউনিটের বেশি বিদ্যুতের দাম ৫ টাকা ৬৪ পয়সা থেকে ৬ টাকা ৭২ পয়সা। তা ২০ শতাংশ বাড়িয়ে ৬ টাকা ৭৭ পয়সা থেকে ৮ টাকা ৬ পয়সা করারও প্রস্তাব করা হয়েছে।
একইভাবে বাণিজ্যিক গ্রাহকের ক্ষেত্রে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম ১০, দাতব্য প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে ১০, সেচে ৯ দশমিক ৯৩, সাধারণ শিল্পে ১২, বৃহৎ শিল্পে ১২ এবং রাস্তার বাতির জন্য ২০ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে আরইবি।
অপরদিকে সব শ্রেণীর গ্রাহকের ন্যূনতম বিল, সার্ভিস ও ডিমান্ড চার্জ বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। এর মধ্যে আবাসিক গ্রাহকদের ক্ষেত্রে ন্যূনতম বিল ৬৫ টাকার পরিবর্তে ১০৫, সাধারণ শিল্প গ্রাহকদের ক্ষেত্রে ৪৫ টাকার পরিবর্তে ৫০, বৃহৎ শিল্পের ৫৫ টাকার পরিবর্তে ৬০ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
এর আগে সর্বশেষ ৮ ফেব্রুয়ারি ১১ শতাংশ হারে পাইকারি (বাল্ক) বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়। ওই সময় বিইআরসি অন্তর্বর্তীকালীন আদেশে বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থা ও কোম্পানিগুলোর ভোক্তা পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ায়।
উন্মুক্ত সভায় পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান ভূঁইয়া শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘দীর্ঘ দিন আরইবির খুচরা বিক্রয়মূল্য না বাড়ায় পল্লীবিদ্যুৎ সমিতিগুলো লোকসান গুনছে। গত ফেব্রুয়ারিতে খুচরা দাম কিছুটা বাড়ানো হলেও তাতে সমিতিগুলো লোকসান কাটিয়ে উঠতে পারেনি।
এ সময় কমিশন চেয়ারম্যান সৈয়দ ইউসুফ হোসেন আরইবিকে সামগ্রিক ব্যবস্থাপনাার উন্নয়ন ও সিস্টেম লস কমানোর বিষয়টির প্রতি আরো গুরুত্ব দেওয়ার নিদের্শ দেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮২৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৭, ২০১১