ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

কাপ্তাই সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্র

সাড়ে তিন বছরে ব্যয় ৩.২২ শতাংশ!

মফিজুল ‍সাদিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩৬ ঘণ্টা, আগস্ট ৩১, ২০১৫
সাড়ে তিন বছরে ব্যয় ৩.২২ শতাংশ!

ঢাকা: সহসাই শেষ হচ্ছে না ‘কাপ্তাই ৫ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন গ্রিড সংযুক্ত সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন’ প্রকল্পের কাজ। প্রকল্পের বাস্তবায়নকাল তিন বছর পাঁচ মাস অতিবাহিত হলেও জুন ২০১৫ পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে মাত্র ৬ কোটি ২১ লাখ ১২ হাজার টাক‍া, যা মোট বরাদ্দের মাত্র তিন দশমিক ২২ শতাংশ।



এতে সারাদেশে নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রসার ও উৎপাদন ঘাটতি দূর করা নিয়ে তৈরি হয়েছে সংশয়।

বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) সূত্র জানায়, উৎপাদন ঘাটতি দূর করাসহ সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদনের মাধ্যমে কার্বন নির্গমন কমানোই প্রকল্পের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল।

সেই লক্ষ্যে মূল অনুমোদিত প্রকল্পটি মার্চ ২০১২ থেকে ডিসেম্বর ২০১৩ সালে শেষ হওয়ার কথা। এই মেয়াদে প্রকল্পের ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছিল ১শ ৯২ কোটি ৫৯ লাখ ৩৪ হাজর টাকা। এর মধ্যে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) প্রকল্প সাহায্য ৯২ কোটি ১৩ লাখ ৩৮ হাজার টাকা।

পিডিবি সূত্র জানায়, দ্বিতীয় বার প্রকল্পের মেয়াদ বেড়ে দাঁড়ায় মার্চ ২০১২ থেকে ডিসেম্বর ২০১৪ ‍সাল পর্যন্ত। তৃতীয় বারের মতো আবারও মার্চ ২০১২ থেকে ডিসেম্বর ২০১৬ সাল পর্যন্ত প্রকল্পের সময় বাড়ানো হয়। তবে এবার প্রকল্পের ব্যয় কম‍ানো হয়েছে।

প্রকল্পের মোট ব্যয় ছিল ১শ ৯২ কোটি ৫৯ লাখ ৩৪ হাজর টাকা। কিন্তু সাড়ে তিন বছর পর প্রকল্পের ব্যয় কমে দাঁড়িয়েছে ১শ ১৭ কোটি ৭৪ লাখ ৫১ হাজার টাকা। পিডিবি মোট বরাদ্দ খরচ করতে না পেরেই শেষ পর্যন্ত মূল প্রকল্প থেকে মোট ৭৪ কোটি ৮৪ লাখ ৮৩ হাজার টাকা কর্তন করেছে।

এ বিষয়ে পিডিবির চেয়ারম্যান  প্রকৌশলী  কে এম হাসান বাংলানিউজকে বলেন, প্রকল্পটির অন্যতম উন্নয়ন সহযোগী এডিবি। দরপত্র চূড়ান্ত করার সময় তাদের (এডিবি) অনুমোদন নিতে হয়েছে। যে কারণে প্রকল্পের কাজ শুরু করতেই কালক্ষেপণ হয়েছে। এতে তিন বছর পাঁচ মাসে ব্যয় হয়েছে মোট বরাদ্দের তিন দশমিক ২২ শতাংশ। এবার ডিসেম্বর ২০১৬ সালের মধ্যেই প্রকল্পের কাজ শেষ করতে পারবো।

তিনি আরও বলেন, প্রকল্পের আওতায় নতুন করে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ৫ মেগাওয়াট থেকে ৭ দশমিক ৪ মেগাওয়াটে উন্নীত করা হচ্ছে। যে কারণে প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।

পিডিবি সূত্র জানায়, নানা কারণে আবারও প্রকল্পের সংশোধন করা হয়েছে। প্রকল্পের আওতায় নতুন কতিপয় অঙ্গ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া, বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা উন্নীত করা হয়েছে ৫ মেগাওয়াট থেকে ৭ দশমিক ৪ মেগাওয়াটে। ১১ কেভি সাব-স্টেশন ও নিয়ন্ত্রণ ভবন নির্মাণের জন্য ৫ একর ভূমি উন্নয়ন কাজ করা হবে। প্রকল্প এলাকায় একটি পুরাতন সাব-স্টেশন থাকা সত্ত্বেও আরো একটি নতুন করে নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এছাড়া, সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে ১১ কেভি সাব-স্টেশন পর্যন্ত ২ দশমিক ৫ কিলোমিটার ওভারহেড ইভাক্যুয়েশন লাইন নির্মাণও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

প্রকল্প বাস্তবায়ন ও আর্থিক অগ্রগতির বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে পিডিবির প্রতিনিধি বাংলানিউজকে জানান, আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বানের বিষয়ে পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের টেন্ডার ডকুমেন্টের ভিত্তিতে প্রকল্প সংশোধন কর‍া হয়েছে। পরবর্তীতে আবারও উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা এডিবির মতামত গ্রহণ করে দরপত্র আহ্বান করা হয়। এরপর টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে চলতি বছরের জুলাই মাসের ২৩ তারিখে নোটিফিকেশন অব অ্যাওয়ার্ড (এনওএ) দেওয়া হয়। এসব কারণে প্রকল্প শুরু করতেই কালক্ষেপণ হয়েছে। যার ফলে প্রকল্পের বাস্তব‍ায়ন ও আর্থিক অগ্রগতি হয়েছে কম।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৬ ঘণ্টা, আগস্ট ৩১, ২০১৫
এমআইএস/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।