ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

আকার কমেছে, তবুও বেড়েছে খরচ

মফিজুল সাদিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮১১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৭, ২০১৬
আকার কমেছে, তবুও বেড়েছে খরচ

ঢাকা: বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের(বাপবিবো) চলমান ‘১৮ লাখ গ্রাহক সংযোগ’ প্রকল্পের মোট ব্যয় ৬ হাজার ৪২৫ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। এ ব্যয়ে ১৮ লাখ গ্রাহককে বিদ্যুৎ দেওয়া হবে।

অর্থাৎ গ্রাহক প্রতি খরচ ৩৫ হাজার ৬৯৯ টাকা ৯৪ পয়সা।

অপরদিকে প্রস্তাবিত ‘১৫ লাখ গ্রাহক সংযোগ’ শীর্ষক প্রকল্পের মোট ব্যয় চাওয়া হয়েছে  ৬ হাজার ৯৩৬ কোটি  ৪১ লাখ টাকা। অর্থাৎ গ্রাহক প্রতি খরচ ৪৬ হাজার ২৪২ টাকা ৭৩ পয়সা।

প্রথম প্রকল্পের চেয়ে প্রস্তাবিত প্রকল্পে গ্রাহক সংখ্যা তিন লাখ কম। অথচ বাপবিবো ৫১০ কোটি টাকা বেশি বরাদ্দের প্রস্তাব করেছে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে।

১৮ লাখ গ্রাহক সংযোগ প্রকল্প ব্যয়ের চেয়ে ১৫ লাখ গ্রাহক সংযোগের ব্যয় বেশি হওয়ার কারণ জানতে চাইলে বিদ্যুৎ বিভাগের এক কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, ১৮ লাখ গ্রাহক সংযোগ প্রকল্পটি ২০১১ ও ২০১২ সালে প্রণীত। ১৮ লাখ গ্রাহককে বিদ্যুৎ দেওয়ার কাজ শুরু হয় ২০১২ সাল থেকে। চার বছর পর মালামাল ও সরঞ্জামাদির বাজার মূল্য অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে।

তিনি বলেন, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির(পবিস) আর্থিক অবস্থা ভালো না। পবিসের দাফতরিক ও আবাসিক ভবন নির্মাণ করা দরকার। নতুন এ প্রকল্পের আওতায় পবিসের দাফতরিক ও আবাসিক ভবন নির্মাণের প্রস্তাবও করা হয়েছে।

প্রকল্পটি ২০১৬ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৮ সালের ডিসেম্বর মেয়াদে বাস্তবায়ন করবে বাপবিবো। দেশের ৬১টি জেলার ৭৭টি পবিসের আওতায় বাস্তবায়িত হবে এটি। প্রকল্পের প্রধান লক্ষ্য দেখানো হয়েছে, সুলভ মূল্যে ও নির্ভরযোগ্য বিদ্যুৎ সরবরাহের মাধ্যমে গ্রাম বাংলার অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি নতুন গ্রাহক সৃষ্টির মাধ্যমে গ্রামের দারিদ্র্য বিমোচন করা।

প্রকল্পের আওতায় ৩৩ কেভি অথবা নিম্নতর ভোল্টেজের ৪৪ হাজার কিলোমিটার বিদ্যুৎ লাইন নির্মাণ করা হবে। ৮৩টি নতুন উপকেন্দ্র ও ৩৫টি অগমেন্টেশন উপকেন্দ্রের মাধ্যমে ১৫ লাখ গ্রাহকের ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে প্রকল্পে।

অন্যদিকে চলমান ১৮ লাখ গ্রাহক প্রকল্পের পরিধি ও কাযর্ক্রম আরও ব্যাপক ছিল। বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড(বাপবিবো) সূত্র জানায়, ১৫ লাখ গ্রাহক প্রকল্পে লাইন নির্মাণ করা হবে ৪৪ হাজার কিলোমিটার।   সেখানে ১৮ লাখ গ্রাহকের জন্য করা হচ্ছে সাড়ে ৪৭ হাজার কিলোমিটার লাইন। অর্থাৎ সাড়ে তিন হাজার কিলোমিটার লাইন বেশি।

একইভাবে উপকেন্দ্রের সংখ্যাতেও ১৮ লাখ গ্রাহক প্রকল্পের পরিসর বড় ছিলো। ১৫ লাখ প্রকল্পে ৮৩টি নতুন উপকেন্দ্র ও ৩৫টি অগমেন্টেশন করার কথা বলা হয়েছে। সেখানে ১৮ লাখ গ্রাহক ছিলেন। একশ’টি ৩৩/১১ কেভি নতুন উপকেন্দ্র নির্মাণ, ৫০টি ৩৩/১১ কেভি উপ-কেন্দ্রের ক্ষমতা বৃদ্ধি করার কথাও রয়েছে এতে।

এছাড়া ১৮ লাখ গ্রাহক প্রকল্পে দুই হাজার কিলোমিটার ৩৩ কেভি নতুন লাইন নির্মাণ ও ৫শ’ কিলোমিটার ৩৩ কেভি লাইন আপগ্রেডেশন ছিলো।

১৮ লাখ গ্রাহক প্রকল্পের চেয়ে ১৫ লাখ নতুন গ্রাহক প্রকল্পের কাযর্ক্রম অনেক কম। গ্রাহক কম হবে ৩ লাখ, সাড়ে ৩ হাজার কিলোমিটার কম লাইন নির্মাণ করা হবে। কিন্তু সময়ের ধোঁয়াশা তুলে ৫১০ কোটি টাকা অতিরিক্ত বরাদ্দ চেয়েছে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড।

এরই মধ্যে ১৫ লাখ নতুন গ্রাহক প্রকল্পটি পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের প্রি একনেক মিটিংয়ে (মূল্যায়ন কমিটি) অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। যেকোনো দিন একনেকে উত্তোলন করা হতে পারে বলে জানা গেছে।

পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী নুরুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, বিষয়টি চূড়ান্ত হয়নি। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।

এতো বেশি দর প্রস্তাব করার কারণ কি? জবাবে নুরুল ইসলাম বলেন, আগের প্রকল্পটি ছিলো ২০১০ সালে। আর পনের লাখ গ্রাহক প্রকল্পটি প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে ২০১৬ সালে। এতোদিনে অনেক মূল্যস্ফীতি হয়েছে। তবে সার কথা হচ্ছে, এখন অনেক দুর্গম এলাকায় লাইন নির্মাণ করা হবে। সে কারণে আগের তুলনায় ব্যয় বেড়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ০৮১০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৭, ২০১৬
এমআইএস/এসআই/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।