ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

সিলেটে ঘণ্টায় ঘণ্টায় লোডশেডিং

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪৬ ঘণ্টা, জুলাই ২৪, ২০২২
সিলেটে ঘণ্টায় ঘণ্টায় লোডশেডিং

সিলেট: সিলেটে আরও ঘনীভূত হচ্ছে বিদ্যুৎ সংকট। দিনের পর দিন লোড বরাদ্দ কমতে থাকায় চাপে রয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ।

ফলে রেশনিং পদ্ধতিতে বিদ্যুৎ সরবরাহ ঠিক থাকছে না এমনটি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।  

পরিস্থিতি এতই নাজুক যে, গত শনিবারের (২৩ জুলাই) চেয়ে রোববার (২৪ জুলাই) লোড বরাদ্দ আরও কম পাওয়ায় লোডশেডিং বাড়িয়ে দিয়েছে বিদ্যুৎ উন্নয়ন ও বিতরণ বিভাগ সিলেট।  

গত শনিবার পর্যন্ত এক ঘণ্টা পর পর লোডশেডিং করা হলেও রোববার লোডশেডিংয়ের পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ায় বেশির ভাগ এলাকায় আধা ঘণ্টাও স্থায়িত্ব হচ্ছে না বিদ্যুৎ সরবরাহ।  

নগরের মাছিমপুরের বাসিন্দা আবুল হোসেন বলেন, বিদ্যুৎ কতবার নিয়েছে তার কোনো হিসেব নেই। লোডশেডিংয়ের একটা মাত্রা থাকা দরকার। বিদ্যুৎ না থাকায় বাসার ফ্রিজে থাকা মাছ, মাংস, সবজি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।  

উপ-শহর এলাকার সাব্বির আহমদ বলেন, নগরের সবচেয়ে বেশি লোডশেডিং হচ্ছে উপ-শহরে। যখন সারা শহরে দেড়ঘণ্টা করে লোডশেডিং করা হয়েছে, তখনও এ এলাকায় লোডশেডিংয়ের তীব্রতা ছিল। আর এখনতো একেবারে অবস্থা শোচনীয়। দিনে রাতে মিছিয়ে ১২ ঘণ্টার কম সময় বিদ্যুৎ থাকে। রোববারতো আরও দুরবস্তা ছিল।  

বিদ্যুৎ কর্মকর্তারা বলছেন, রোববারও চাহিদার বিপরীতে অর্ধেকের চেয়েও কম বিদ্যুৎ পাওয়া গেছে। ফলে সরবরাহ ঠিক রাখা যাচ্ছে না। এজন্য প্রতিদিন সূচি পরিবর্তিত হয়ে লোডশেডিং বাড়ছে।  

সিলেট বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগ-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী ফজলুল করিম বলেন, ডিভিশন-১ এর অধীনস্থ এলাকায় ২২টি ফিডারের আওতাধীন ৮৪টি এলাকায় ৪৫ মেগাওয়াট চাহিদার বিপরীতে ২৩ মেগাওয়াট পেয়েছেন। ফলে রেশনিং পদ্ধতিতে লোডশেডিংয়ের চাপ বেড়েছে।  

সিলেট বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী সামস-ই আরেফিন বলেন, ডিভিশন-২ এর আওতাধীন এলাকায় ১৩টি ফিডারের আওতাধীন ৮৫ এলাকার জন্য ৩৭ মেগাওয়াট চাহিদার বিপরীতে মাত্র ১৩ মেগাওয়াট বরাদ্দ পেয়েছেন। এর আগে গত শনিবার ১৬ মেগাওয়াট বরাদ্দ পেয়েছিলেন।   

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের প্রধান প্রকৌশলী আব্দুল কাদের বাংলানিউজকে বলেন, বিভাগে ৪৫ লাখ ৮৫ হাজার গ্রাহক রয়েছেন। পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহক আছেন ১৯ লাখ। গ্রাহকের বিপরীতে চাহিদা রয়েছে সাড়ে ৫০০ মেগাওয়াট। কিন্তু রেশনিং পদ্ধতিতে লোডশেডিং চলাবস্থায় রোববার ২১৫ দশমিক ৫ মেগাওয়াট চাহিদা ছিল। বিপরীতে ৮৭ মেগাওয়াট বরাদ্দ পাওয়া গেছে। এরমধ্যে সিলেট জেলায় ১৪৫ মেগাওয়াট চাহিদার বিপরীতে মাত্র ৫৯ দশমিক ৪৬ মেগাওয়াট বরাদ্দ পেয়েছি। এরমধ্যে পল্লী বিদ্যুতের চাহিদা ২৮ মেগাওয়াট। সবদিক বিবেচনা করে যথাযথ বণ্টনের মাধ্যমে রেশনিং পদ্ধতিতে লোডশেডিংয়ের মাধ্যমে সরবরাহ ঠিক রাখতে হচ্ছে।  

দেশজুড়ে বিদ্যুৎ সংকট মোকাবিলায় এলাকাভিত্তিক রেশনিং পদ্ধতিতে লোডশেডিং গত মঙ্গলবার থেকে চলমান রয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় সিলেটজুড়ে চলছে রেশনিং পদ্ধতিতে লোডশেডিং। শুরুর দিকে এলাকাভিত্তিক দেড় ঘণ্টা লোডশেডিং করার কথা থাকলেও সেই নিয়ম ঠিক রাখতে পারছে না বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগ সিলেট। গ্রাহকের চাহিদার অর্ধেক বিদ্যুৎ না মেলায় ঘোষিত লোডশেডিংয়ের সময় সূচি ঠিক রাখতে পারছে না বিদ্যুৎ বিভাগ। ফলে গ্রাহকদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৫ ঘণ্টা, জুলাই ২৪, ২০২২
এনইউ/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।