ঢাকা, সোমবার, ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ২৬ মে ২০২৫, ২৮ জিলকদ ১৪৪৬

প্রবাসে বাংলাদেশ

পর্তুগালে বাংলাদেশি ফেসবুক গ্রুপে অপপ্রচার, সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা

আমিরুল ইসলাম, লিসবন থেকে | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২:৩৬, মে ২৫, ২০২৫
পর্তুগালে বাংলাদেশি ফেসবুক গ্রুপে অপপ্রচার, সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা

পর্তুগালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে বাংলাদেশি কমিউনিটি এবং সেখানে বসবাসরত সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে সম্মানহানিকর বিভিন্ন ধরনের পোস্ট প্রচার করে আসছে একটি সংঘবদ্ধ চক্র। সাম্প্রতিক সময়ে প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে পরিচিত মুখ ও সমাজকর্মীদের টার্গেট করে এই ধরনের পোস্ট করা হয়েছে।

সর্বশেষ ২১ মে ২০২৫ তারিখে পর্তুগাল বাংলা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি রাসেল আহম্মেদকে জড়িয়ে মিথ্যা, উদ্দেশ্যমূলক ও মানহানিকর একটি পোস্ট প্রকাশ করা হয়। এরপর খুব দ্রুতই সেই একই পোস্ট বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপে ছড়িয়ে দেয় একটি কুচক্রী মহল।

এই সব মানহানিকর পোস্ট, অবৈধ কাজের বিজ্ঞাপন, বাংলাদেশ থেকে ভুয়া লাইসেন্স আনা এবং বিভিন্ন সামাজিক-রাজনৈতিক ব্যক্তিদের উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সম্মানহানিকরভাবে উপস্থাপনের কারণে, গত শুক্রবার বাংলা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি রাসেল আহম্মেদ পর্তুগালের ১০টির বেশি ফেসবুক গ্রুপ এবং দুজন বাংলাদেশি অ্যাডমিনের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা দায়ের করেছেন।

মামলায় তিনি উল্লেখ করেছেন, বিভিন্ন সময়ে এই গ্রুপগুলোয় পর্তুগালে বসবাসরত বাংলাদেশি কমিউনিটির সামাজিক-রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ ও সাংবাদিকদের উদ্দেশ্য করে সম্মানহানিকর পোস্ট প্রকাশ করা হয়ে থাকে।

রাসেল আহম্মেদ বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে পর্তুগালের বাংলাদেশি কমিউনিটির সম্মানিত ব্যক্তিবর্গকে নিয়ে অপপ্রচার, মানহানিকর পোস্ট দিচ্ছে একটি কুচক্রী মহল। আমি আমার আইনজীবীর পরামর্শ নিয়ে শুক্রবারসন্ধ্যায় দশটির বেশি ফেসবুক গ্রুপের অ্যাডমিনদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছি। এ বিষয়ে খতিয়ে দেখতে এবং অ্যাডমিনদের আইনের আওতায় আনতেই মামলা দায়ের করা হয়েছে।

এ বিষয়ে পর্তুগাল বাংলা প্রেসক্লাবের বর্তমান সভাপতি রনি মোহাম্মদ বলেন, শুধু সম্মানিত ব্যক্তিবর্গ নয়, বরং অবৈধ ব্যবসা, ভুয়া বিজ্ঞাপন, ফেক ড্রাইভিং লাইসেন্সের বিজ্ঞাপনসহ নানা অপরাধমূলক পোস্টও এই গ্রুপগুলোতে প্রচার করা হয়। এসব অপপ্রচারের ফাঁদে পড়ে অনেক প্রবাসী বাংলাদেশি নানা সমস্যায় পড়ছেন। পর্তুগাল বাংলা প্রেসক্লাব পর্তুগালের আইনকে সম্মান করে এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সহযোগিতা করে এসব গ্রুপের এডমিনদের আইনের আওতায় আনতে কাজ করবে।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ দূতাবাসের উচিত এই অপপ্রচারকারীদের চিহ্নিত করে তাদের জবাবদিহির আওতায় আনা, আমরা জোরালোভাবে সেই দাবি জানাচ্ছি।

মামলার আইনজীবী অ্যাডভোকেট মিগেল তাভারেস কারবালো বলেন, মামলাটি করা হয়েছে মানহানিকর অপপ্রচারের বিরুদ্ধে। ইতিমধ্যে যেসব গ্রুপের অ্যাডমিনদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে, তাদেরক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পর্তুগাল পুলিশের (পিএসপি)কাছে মামলা (নম্বর ২০১৫৪৫/২০২৫) নথিভুক্ত করা হয়েছে।

অ্যাডভোকেট মিগেল তাভারেস কারবালোর সহকারী শাহ মোহাম্মদ তানভীর জানান, পর্তুগালে কিছু বাংলাদেশি অবৈধ কাজে জড়িয়ে পড়ায় ইতিমধ্যে অনেকেই জেলে রয়েছেন। এমনকি, পর্তুগালের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অভিযানও চালিয়েছে, যা আমাদের জন্য অত্যন্ত লজ্জাজনক। আমাদের উচিত পর্তুগালের আইনকে সম্মান করা এবং যারা অপরাধী, তাদের আশ্রয়-প্রশ্রয় না দিয়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করা।

এনডি/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।