ঢাকা, রবিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

প্রবাসে বাংলাদেশ

বাংলাদেশি শ্রমিকদের মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় নিরলস প্রকৌশলী খোকন

জাহিদুর রহমান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১৩, ২০১৬
বাংলাদেশি শ্রমিকদের মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় নিরলস প্রকৌশলী খোকন

(কামপুং বারু) মালয়েশিয়া থেকে: সুউচ্চ ভবনের শহর কুয়ালালামপুর। আধুনিক মালয়েশিয়া বিনির্মাণে শ্রম আর ঘাম জড়িয়ে আছে লাখো বাংলাদেশি শ্রমিকের।

অথচ এই নির্মাণ শিল্পে এক সময় দাপট ছিলো ইন্দোনেশিয়ার শ্রমিকদের।

বাংলাদেশি শ্রমিকরা আগে এখানে কাজ করতেন অদক্ষ বা সাধারণ শ্রমিক হিসেবে। এ পরিস্থিতিতে নিজের একান্ত প্রচেষ্টায় বহু অদক্ষ বাংলাদেশি শ্রমিকের দক্ষতা বাড়িয়ে মালয়েশিয়ায় দেশের শ্রমিকদের সুনাম আর আস্থাকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন প্রকৌশলী আমিরুল ইসলাম খোকন (৫২)।

বিভিন্ন নির্মাণ প্রকল্পে ইন্দোনেশীয় শ্রমিকদের আধিপত্যের অবসান ঘটিয়ে করেছেন দেশি শ্রমিকদের মর্যাদা প্রতিষ্ঠা। তার অধীনে মালয়েশিয়ায় মাসে গড়ে কাজ করছেন দেড় হাজারের বেশি শ্রমিক। স্যার নয়। শ্রমিকদের সাথে ভাই হিসেবে সম্পর্ক গড়ে তুলে শ্রমিকদের মর্যাদা আর অধিকার আদায়েও কাজ করছেন এই প্রকৌশলী।

রাজধানী কুয়ালালামপুরে তিনি গড়ে তুলেছেন নিজের নির্মাণ সংস্থা সিল কনসাল্ট প্রাইভেট লিমিডেট।

যে প্রতিষ্ঠানের অভিজ্ঞতায় রয়েছে ৩১ তলা হোটেল ভবন, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সর্ববৃহৎ মেট্রেড এক্সিবিশন সেন্টার, ম্যাস রেলওয়ে ট্রানজিট নির্মাণসহ বহু প্রকল্প।

কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার তালতালি গ্রামের আমিরুল ইসলাম খোকন পেশায় সিভিল ইঞ্জিনিয়ার। বাবা নুরুল ইসলাম। তিন ভাই দু বোনের মধ্যে তিনি তৃতীয়। ১৯৮৮ সালে বুয়েট থেকে পাশ করেই যোগ দেন দেইয়্যু করপোরেশনে সাইট ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে।

সেই প্রতিষ্ঠানের সাথে কাজের ধারাবাহিকতায় ১৯৯৬ সালে মালয়েশিয়ায় আসেন সিনিয়র ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে। পরবর্তীতে কনট্রাক্ট এক্সিকিউটিভ হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

আমিরুল ইসলাম খোকন বাংলানিউজকে জানান, আমার কাজের অভিজ্ঞতায় দেখেছি। বাংলাদেশিদের মেধা, আনুগত্য, যে কোন পরিস্থিতিতে নিজেদের মানিয়ে নেয়া, বাড়তি কাজ করার ক্ষমতা অনেক বেশি।

অথচ দেখলাম নির্মাণ শিল্পে আমাদের শ্রমিকদের দক্ষতা আর যোগ্যতাকে খাটো করে দেখা হচ্ছে। কাজেই নেয়া হতো না। যাও বা নেয়া হতো, তাও অল্প সংখ্যক।

দায়িত্বপূর্ণ পদে থাকার কারণে বিদেশি নির্মাণ প্রতিষ্ঠানে বেশি বেশি বাংলাদেশি শ্রমিকদের কাজের সুযোগ দিলাম।

প্রমাণ করে দিলাম, এই অবৈধ অভিবাসী শ্রমিকরাই অল্প দিনে বেশি দক্ষ হচ্ছেন। কারণ টিকে থাকার প্রয়োজনে শ্রমিকরা নিজ থেকেই দক্ষতা অর্জনে মনোযোগী হন।

আর এভাবেই দক্ষ শ্রমিকের সংখ্যাটা বেড়ে বর্তমানে মালয়েশিয়ার নির্মাণ শ্রমের বাজারে নেতৃত্ব দিচ্ছে বাংলাদেশ।

‘আমি এখন প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করি। নিয়মের বাইরে গিয়ে হলেও তাদের কল্যাণের চেষ্টা করা। তাদের নিয়ে একটি সমিতিও গড়া হয়েছে। এভাবে একটি বৃহৎ বাংলাদেশ গড়ে উঠছে এই মালয়েশিয়ায়’।

যোগ করেন প্রকৌশলী আমিরুল ইসলাম খোকন।

আরও পড়ুন-

**পরানপুর গ্রামের আকতার গাজীর পরান পড়ে থাকে দেশে

 **রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী ‘বিমান’, হাঁকডাকেই সময় পার

বাংলাদেশ সময়: ১৯০২ ঘণ্টা, আগস্ট ১৩, ২০১৬
আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।