ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অপার মহিমার রমজান

রমজানে ইবাদতশূন্য হতো না সাহাবি আবু হুরায়রা রা. এর ঘর

আতাউর রহমান খসরু, অতিথি লেখক, ইসলাম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯২৯ ঘণ্টা, জুন ৩, ২০১৭
রমজানে ইবাদতশূন্য হতো না সাহাবি আবু হুরায়রা রা. এর ঘর রমজানে ইবাদতশূন্য হতো না সাহাবি আবু হুরায়রা রা. এর ঘর

নবী আলাইহিস সালামের পর হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাহাবিরা ছিলেন পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মানুষ। আল্লাহতায়ালা তাদেরকে রাসূল (সা.)-এর সাহচার্যের জন্য নির্বাচিত করেন।

হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) তাদের প্রস্তুত করেন পরবর্তী উম্মাহর আলোকবর্তিকা হিসেবে। হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর জীবন ও জীবনাদর্শ ধারণ করেছিলেন তার সাহাবিরা।

স্বভাবতই সাহাবিদের জীবনে রমজান মাসের আমলে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর ছায়া আরও প্রগাঢ় হতো। যেমন হজরত আবু হুরায়রা (রা.)।
 
রমজানের আগমনে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) থেকে সর্বাধিক হাদিস বর্ণনাকারী এ সাহাবির জীবনচিত্র পুরোপুরি পাল্টে যেত। জাগতিক সব ব্যস্ততা পাশে ঠেলে তিনি একনিষ্ঠভাবে নিমগ্ন হতেন সিয়াম সাধনায়, রমজানের ইবাদতে।

রমজান মাসে দিনের সময়টুকু মসজিদে কাটাতেন হজরত আবু হুরায়রা (রা.) ও তার সঙ্গীরা। হজরত আবু নুআইম (রহ.) হজরত আবু হুরায়রা (রা.) সম্পর্কে বলেন, ‘নিশ্চয় হজরত আবু হুরায়রা (রা.) ও তার সঙ্গীরা রমজানে মসজিদে অবস্থান করতেন এবং তারা বলতেন, আমরা আমাদের রোজাকে পবিত্র করছি। ’ -হিলয়াতুল আউলিয়া

অর্থাৎ তারা অর্থহীন কথা ও কাজ, ঝগড়া ও বিবাদ, মিথ্যা ও প্রতারণাসহ এমন সবকিছু থেকে তাদের নিজেদের বিরত রাখতেন- যা রোজা বিনষ্ট করে বা তার প্রতিদান কমিয়ে দেয়।

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) এমনটি করতেন তার উচ্চতর খোদাভীতি ও তাকওয়ার কারণে। নতুবা আল্লাহর রাসূল (সা.)-এর এ মহান সাহাবি বছরের কোনো সময়ে এমন কাজ করতেন না।

রমজানে পার্থিব জীবনের সংশ্রব থেকে বাঁচার জন্য মসজিদে অবস্থান করতেন হজরত আবু হুরায়রা (রা.) এবং তিনি রাসূল (সা.)-এর একটি হাদিস বর্ণনা করতেন।

হাদিসটি হলো- ‘যে ব্যক্তি মিথ্যা কথা-কাজ ও জাহেলি যুগের আচরণ ত্যাগ করতে পারলো না, তার পানাহার ত্যাগ করার প্রয়োজন নেই। ’ -সহিহ বোখারি

রমজান মাসে হজরত আবু হুরায়রা (রা.) খুব সামান্য খাবার গ্রহণ করতেন। কয়েকটি খেজুর ও পানি দিয়েই তিনি সাহরি ও ইফতার সম্পন্ন করতেন।

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.)-এর মুক্তদাস আবু জিয়াদ (রহ.) আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণনা করেন, ‘আমার কাছে পনেরটি খেজুর ছিলো। আমি পাঁচটি দিয়ে ইফতার করলাম, পাঁচটি দিয়ে সাহরি করলাম এবং পাঁচটি পরবর্তী ইফতারের জন্য রেখে দিলাম। ’-হুলয়াতুল আউলিয়া

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) ভয় পেতেন রমজানে অধিক পানাহার করলে তাকে আলস্য পেয়ে বসবে এবং তিনি আল্লাহর ইবাদত থেকে বিমুখ হবেন। ফলে রমজানের কল্যাণ ও বরকত থেকে বঞ্চিত হবেন। তিনি নিজেই বলতেন, ‘আমার পেটের জন্য অভিশাপ! যখন তাকে পরিতৃপ্ত করি আমাকে ভারি করে তোলে এবং যখন তাকে ক্ষুধার্ত রাখি আমাকে গাল মন্দ করে। ’ -হুলয়াতুল আউলিয়া

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) রমজানে তাহাজ্জুদের নামাজ পড়তে পছন্দ করতেন। তিনি নিজে তাহাজ্জুদের নামাজ আদায় করতেন এবং পরিবারকেও উদ্বুদ্ধ করতেন।

আল্লামা ইবনে জাওযি (রহ.) বর্ণনা করেন, তিনি রাতকে তিনভাগে ভাগ করতেন এবং তিনি, তার স্ত্রী ও তাদের সেবক পালাক্রমে এ সময়ে ইবাদতে মশগুল হতেন।

একজন ঘুমিয়ে পড়লে অপরজনকে ডেকে দিতেন। যেনো রাতের কোনো অংশে তাদের ঘর ইবাদতশূন্য না হয়। -সিফাতুস সাফওয়া

ইসলাম বিভাগে লেখা পাঠাতে মেইল করুন: bn24.islam@gmail.com

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩০ ঘণ্টা, জুন ০৩, ২০১৭
এমএইউ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।