ঢাকা, বুধবার, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ২১ মে ২০২৫, ২৩ জিলকদ ১৪৪৬

সারাদেশ

বগুড়ায় চলন্ত ট্রেন থেকে ফেলে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় মামলা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০:১৮, মে ২০, ২০২৫
বগুড়ায় চলন্ত ট্রেন থেকে ফেলে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় মামলা চলন্ত ট্রেন থেকে ফেলে মতিউর রহমানকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ (ইনসেটে মতিউর)

বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলায় পূর্বশত্রুতার জের ধরে ‘মোবাইলফোন চোর’ আখ্যা দিয়ে মতিউর রহমান নামে এক আদম ব্যবসায়ীকে চলন্ত ট্রেন থেকে ফেলে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।

সোমবার (১৯ মে) রাতে সান্তাহার রেলওয়ে থানায় ভুক্তভোগী নিজেই বাদী হয়ে একজনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা ছয়-সাতজনকে আসামি করে মামলাটি দায়ের করেন।

মামলা ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার পারইল গ্রামের হাবিবুর রহমানের ছেলে মতিউর রহমান মাছ ব্যবসার পাশাপাশি গত দেড় বছর ধরে বৈধভাবে বিদেশে লোক পাঠানোর কাজ করছিলেন। এরই মধ্যে তিনি তিন-চারজনকে সৌদি আরবে পাঠিয়েছেন। ১৫ দিন আগে আদমদীঘির তালশন গ্রামের হেলাল প্রামাণিকের ছেলে সজিব হোসেনকে সৌদি আরব পাঠান। এ বাবদ সজিবের কাছ থেকে ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা নেন মতিউর। তবে সৌদিতে গিয়ে বৈধ কাগজপত্র পেতে দেরি হওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে সজিব তার বাবাকে পাঠিয়ে মতিউরকে হুমকি দেন।

সূত্র জানায়, মতিউর বগুড়া শহরের মাটিডালি এলাকায় তার মেয়ে মনিকার বাসায় বেড়াতে যান। সেখান থেকে বাড়ি ফেরার উদ্দেশে রোববার (১৮ মে) দুপুরে সান্তাহারগামী দোলনচাঁপা কমিউটার ট্রেনে ওঠেন। বগুড়া স্টেশন থেকে ট্রেনে ওঠার পর থেকেই একই বগিতে থাকা সজিবের ভাই রাকিব ও ডহরপুরের সিরাজুল ইসলামের ছেলে সুমনের নেতৃত্বে ছয়-সাতজন মাস্ক পরা ব্যক্তি তাকে অনুসরণ করতে থাকেন।

বেলা সাড়ে ১২টার দিকে ট্রেনটি আদমদীঘির নসরতপুর স্টেশন এলাকায় পৌঁছালে তারা মতিউরকে ‘মোবাইলফোন চোর’ আখ্যা দিয়ে মারধর ও চলন্ত ট্রেন থেকে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করেন। তিনি প্রায় ৪-৫ মিনিট ধরে ট্রেনের সঙ্গে ঝুলে থাকেন। একপর্যায়ে তারা মতিউরের কাছে থাকা ব্যবসার ৫০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে তাকে হাত ছেড়ে দিতে বাধ্য করেন। ট্রেনটি যখন নসরতপুর স্টেশনে পৌঁছায়, তখন প্ল্যাটফর্মের ধাক্কায় তিনি নিচে পড়ে যান। অল্পের জন্য তিনি ট্রেনে কাটা পড়া থেকে রক্ষা পান। তবে এ সময় তাকে চোর ভেবে স্থানীয় উৎসুক জনতা মারধর করে। এতে তার শরীর রক্তাক্ত হয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে আদমদীঘি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।

এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়। ঘটনার পর সোমবার রাতে মতিউর নিজেই সান্তাহার রেলওয়ে থানায় ডহরপুর গ্রামের সিরাজুল ইসলামের ছেলে সুমনের নাম উল্লেখসহ ছয়-সাতজন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করে মামলা করেন।

সান্তাহার রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, নসরতপুর রেলস্টেশনে ঘটে যাওয়া ঘটনায় থানায় একটি মামলা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য চেষ্টা চলছে।

এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।