মৌলভীবাজার: মৌলভীবাজারের মনু নদের শহর প্রতিরক্ষা বাঁধের প্রকল্প কাজ দীর্ঘ চার বছরে ধরে আটকে আছে। প্রতিবছর আশ্বাস দিলেও কাজের কাজ হয় না কিছুই।
মৌলভীবাজারের পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়ার জটিলতায় পিছিয়ে গেলেও, আগামী শুষ্ক মৌসুমে বাঁধের কাজ শুরু হবে। এই কাজের ৩৫ একর জমি অধিগ্রহণের জন্য ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে জেলা প্রশাসন বরাবরে আবেদন জানায় পানি উন্নয়ন বোর্ড।
পাহাড়ি খরস্রোতা নদ মনু। প্রতিবছর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে মুহূর্তেই এ নদ ফুলেফেঁপে রুদ্রমূর্তি ধারণ করে। এতে মৌলভীবাজার সদর, রাজনগর ও কুলাউড়া উপজেলায় মনু নদের তীর রক্ষা প্রকল্পের-আওতায় ঢাকা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের শাহ বন্দর থেকে নতুন ব্রিজ পর্যন্ত সাড়ে চার কিলোমিটার উভয় তীরে দেখা দেয় সংকট।
জেলা প্রশাসনের আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় দীর্ঘ চার বছরে জমি অধিগ্রহণ হয়নি।
এদিকে ভূমি মন্ত্রণালয় ২০২৪ সালের ২২ অক্টোবর জমি অধিগ্রহণের অনুমোদন দিলেও, সম্প্রতি জমি অধিগ্রহণবিষয়ক ৭-ধারা নোটিশ জারি করা হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, জেলা প্রশাসন জমি অধিগ্রহণের প্রাক্কলন ব্যয় নির্ধারণ করে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাছে পাঠাবে। তারপর পানি উন্নয়ন বোর্ড পুরো বিষয়টি অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠাবে। এতে কাজের ধীরগতির অভিযোগ এলাকাবাসীর। চলতি বর্ষায় বন্যার আশঙ্কা করছে শহরবাসী।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কনকপুর গ্রামবাসী জানিয়েছেন, মনু নদে পানি বাড়ছে আর তারা রাত কাটাচ্ছেন আতঙ্কে। কারণ দুর্বল বাঁধের একাধিক স্থান লিকেজ হয়ে লোকালয়ে পানি ঢুকছে।
বাঁধ মেরামত কাজে নিয়োজিত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ইউআইএ সিসির ম্যানেজার আব্দুস সবুর জানান, তারা কাজ নিয়ে বসে আছেন। এরমধ্যে তাদের ব্লকের ৮০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন। শুধু জমি বুঝিয়ে দিলে কাজে হাত দেবে। তবে কাজে ধীরগতির কারণে তাদের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ব্যয়ভার বাড়ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
মৌলভীবাজারের পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. খালেদ বিন অলীদ জানান, মনু নদের তীর রক্ষা প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৯৯৬ কোটি টাকা। বর্ষা মৌসুমে বাঁধ নির্মাণের কাজ করা অসম্ভব। কাজ বিলম্ব হলেও আগামী শুষ্ক মৌসুমে বাঁধের কাজ শুরু হবে।
বিবিবি/এএটি