জুলাই শহীদদের পরিবার যাতে অসহায়বোধ না করে সেদিকে নজর রাখা আমাদের প্রধান দায়িত্ব বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মঙ্গলবার (৭ জুলাই) বিকেলে নগরের একটি অভিজাত হোটেলে সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপির উদ্যোগে জুলাই আন্দোলনে শহীদ পরিবারদের সম্মাননা দেওয়া অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, জুলাই আন্দোলনে শহীদ হওয়া বীর সেনানিদের পরিবারকে পুনর্বাসন করতে হবে, যাতে তারা কোনো সময় অসহায়বোধ না করে। ফ্যাসিস্ট হাসিনা পনেরো বছরে ২০ হাজার মানুষকে হত্যা করেছে, ৬০ লাখ মানুষকে মিথ্যা মামলা দিয়েছে, ১৭শ’ মানুষকে গুম করেছে। এখন আমাদের প্রধান দায়িত্ব শহীদ পরিবারকে পুনর্বাসন করা।
সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ও ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা তাহসিনা রুশদীর লুনা, ড. এনামুল হক চৌধুরী, খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির, এম এ মালিক ও ডা. সাখাওয়াত হাসান জীবন, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক জি কে গউস, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক কলিম উদ্দিন মিলন ও মিফতাহ সিদ্দিকী, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য নিপুণ রায় চৌধুরী, আবুল কাহের চৌধুরী শামীম ও মিজানুর রহমান চৌধুরী, সিলেট মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী প্রমুখ।
এর আগে দোয়া মাহফিল ও আলোচনা অনুষ্ঠানে নির্বাচিত সরকারের চেয়ে কোনো সরকার শক্তিশালী হতে পারে না। তাই নির্বাচন জরুরি। মানুষের কাছে যান, তাদের বোঝান বিএনপি ছাড়া দেশের বিকল্প নেই–এমন মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, নির্বাচন যত দেরি হবে, দেশ তত পিছিয়ে যাবে। এতে বিনিয়োগ থেমে যাবে, নারী-শিশুর নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়বে, বিচার ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি চরম অবনতি ঘটবে। অতএব এখন দেশে প্রয়োজন একটি জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার।
তিনি আরও বলেন, এমনিতেই হাসিনা পালিয়ে যায়নি। বহু মানুষের আত্মত্যাগ, রক্ত, সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আমরা ফ্যাসিবাদ মুক্ত হয়েছি। আমরা গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছি। আমরা এমন একটি রাষ্ট্র চাই, যেখানে জনগণ মত প্রকাশে স্বাধীন থাকবে, নারীরা নিরাপদে চলাফেরা করতে পারবে, তরুণরা কর্মসংস্থান পাবে, জনগণ চিকিৎসার সুযোগ পাবে—এমন একটি কল্যাণমুখী বাংলাদেশ গঠনের লক্ষ্যে আমরা নতুন করে আন্দোলন শুরু করেছি।
মির্জা ফখরুল বলেন, এই আন্দোলনের নেতৃত্বে রয়েছেন দেশনায়ক তারেক রহমান। আমাদের প্রিয় নেত্রী, দেশনেত্রী খালেদা জিয়া এখনও অসুস্থ অবস্থায় আমাদের প্রেরণা ও পরামর্শ দিয়ে চলেছেন। এখন আর কেবল কথার রাজনীতি নয়, এখন সময় কাজের। ত্যাগ ও রক্তের মধ্য দিয়ে আমরা ফ্যাসিস্ট শাসনের অবসান ঘটিয়েছি। গত ১৫ বছরে এই শাসকগোষ্ঠী প্রায় ২০ হাজার মানুষকে হত্যা করেছে। শুধু গত জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে ৩৬ দিনের মধ্যে দুই হাজার মানুষ শহীদ হয়েছেন। শহীদ পরিবারের পাশে দাঁড়ানো আমাদের নৈতিক ও রাজনৈতিক দায়িত্ব। তাদের পুনর্বাসন, সন্তানদের শিক্ষার নিশ্চয়তা ও ভবিষ্যতের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, তারেক রহমানের নেতৃত্বে একটি নতুন, উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে, যেখানে সবার জন্য সমান সুযোগ থাকবে। আমরা একটি অংশগ্রহণমূলক, অর্থবহ নির্বাচন চাই—যে নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে।
এনইউ/আরবি